ঢাকা ১১:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গুলশান রেস্টুরেন্টে হামলাকারী জঙ্গিরা খেয়েছিল ‘ক্যাপটাগন’ ড্রাগ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৪৪:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ জুলাই ২০১৬
  • ৫৮৮ বার

রাজধানীর হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হত্যাকাণ্ডে জড়িত তরুণ জঙ্গিরা বিশেষ ধরনের ড্রাগ নিয়েছিল বলে অনুমান করা হচ্ছে। ‘ক্যাপটাগন’ নামের এক ধরনের বিশেষ ওষুধ সেবন করেই তারা এ নির্মম হত্যাকাণ্ডে মেতে ওঠেছিল বলে ধারণা করছেন চিকিৎসকমহল।

একই সন্দেহে পরীক্ষার জন্য এফবিআই এবং গুজরাটের একটি প্রতিষ্ঠানও এসব জঙ্গির ভিসেরার নমুনা চেয়েছে। ভিসেরা নমুনা হচ্ছে নিহত ব্যক্তির যকৃৎ, কিডনি, পাকস্থলি ও পাকস্থলিতে থাকা খাবারের নমুনা।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) ও গুজরাটের একটি প্রতিষ্ঠানের নিহত ৫ জঙ্গির ভিসেরা নমুনা চেয়ে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের জনসংযোগ ও গণমাধ্যম বিভাগের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান।

গত বছরের নভেম্বরে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরিয়া ও ইরাকভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএসের যোদ্ধারা ক্যাপটাগন

নামের একটি ওষুধ সেবন করে।

এ কারণে এই ওষুধটি ‘আইএসআইএস ড্রাগ’ নামে পরিচিতি পেয়েছে। ক্যাপটাগন সেবনের কারণে আইএসের যোদ্ধারা দিনের পর দিন জেগে থাকে এবং ঠাণ্ডা মাথায় একের পর এক মানুষ খুন করতে পারে।

ক্যাপটাগন ওষুধ হচ্ছে অ্যামফেটামিন গোত্রের। এটি যারা সেবন করে তাদের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ে।

এর প্রভাবে তারা অন্য কিছু আর চিন্তা করতে পারে না। ক্যাপটাগন-জাতীয় ওষুধ এ দেশে নেই। পশ্চিমা দেশগুলোতে বিগত শতাব্দীর আশির দশক থেকে এটি নিষিদ্ধ। কেবল মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশে এটি পাওয়া যায়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও ময়নাতদন্তকারী ডা. সোহেল মাহমুদ জানান, ৫ জন জঙ্গির পক্ষে ২০ জন মানুষকে এভাবে খুন করা স্বাভাবিক নয়। খুনের পর কিছু মৃতদেহকে তারা বিকৃত করেছে।

তিনি জানান, ১৮ থেকে ২২ বছর বয়সী ৫ জঙ্গি কোনো বিশেষ ধরনের ড্রাগ আসক্ত ছিল কি-না তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ জন্য তাদের ভিসেরা ঢাকার রাসায়নিক পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হবে।

হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জিম্মিদের ৭ জনকে পেছন থেকে ঘাড়ে গুলি করা হয়। তাদের মধ্যে ৪ জন ইতালির নাগরিক, ২ জন জাপানের ও ১ জন ভারতের নাগরিক তারিশি জৈন।

তারিশিকে গুলি করা ছাড়াও কোপানো হয়েছে। তার দুই হাতসহ সারা দেহে চল্লিশটির মতো কোপ ও ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

নিহত ব্যক্তিদের সবার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের ৪ জন চিকিৎসক ও তাদের ৫ জন সহকারী।

সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ৩ জুলাই সকাল ১০টা থেকে পরদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত ময়নাতদন্ত করেন তারা।

ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। দু-এক দিনের মধ্যে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

গুলশান রেস্টুরেন্টে হামলাকারী জঙ্গিরা খেয়েছিল ‘ক্যাপটাগন’ ড্রাগ

আপডেট টাইম : ১০:৪৪:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ জুলাই ২০১৬

রাজধানীর হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হত্যাকাণ্ডে জড়িত তরুণ জঙ্গিরা বিশেষ ধরনের ড্রাগ নিয়েছিল বলে অনুমান করা হচ্ছে। ‘ক্যাপটাগন’ নামের এক ধরনের বিশেষ ওষুধ সেবন করেই তারা এ নির্মম হত্যাকাণ্ডে মেতে ওঠেছিল বলে ধারণা করছেন চিকিৎসকমহল।

একই সন্দেহে পরীক্ষার জন্য এফবিআই এবং গুজরাটের একটি প্রতিষ্ঠানও এসব জঙ্গির ভিসেরার নমুনা চেয়েছে। ভিসেরা নমুনা হচ্ছে নিহত ব্যক্তির যকৃৎ, কিডনি, পাকস্থলি ও পাকস্থলিতে থাকা খাবারের নমুনা।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) ও গুজরাটের একটি প্রতিষ্ঠানের নিহত ৫ জঙ্গির ভিসেরা নমুনা চেয়ে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের জনসংযোগ ও গণমাধ্যম বিভাগের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান।

গত বছরের নভেম্বরে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরিয়া ও ইরাকভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএসের যোদ্ধারা ক্যাপটাগন

নামের একটি ওষুধ সেবন করে।

এ কারণে এই ওষুধটি ‘আইএসআইএস ড্রাগ’ নামে পরিচিতি পেয়েছে। ক্যাপটাগন সেবনের কারণে আইএসের যোদ্ধারা দিনের পর দিন জেগে থাকে এবং ঠাণ্ডা মাথায় একের পর এক মানুষ খুন করতে পারে।

ক্যাপটাগন ওষুধ হচ্ছে অ্যামফেটামিন গোত্রের। এটি যারা সেবন করে তাদের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ে।

এর প্রভাবে তারা অন্য কিছু আর চিন্তা করতে পারে না। ক্যাপটাগন-জাতীয় ওষুধ এ দেশে নেই। পশ্চিমা দেশগুলোতে বিগত শতাব্দীর আশির দশক থেকে এটি নিষিদ্ধ। কেবল মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশে এটি পাওয়া যায়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও ময়নাতদন্তকারী ডা. সোহেল মাহমুদ জানান, ৫ জন জঙ্গির পক্ষে ২০ জন মানুষকে এভাবে খুন করা স্বাভাবিক নয়। খুনের পর কিছু মৃতদেহকে তারা বিকৃত করেছে।

তিনি জানান, ১৮ থেকে ২২ বছর বয়সী ৫ জঙ্গি কোনো বিশেষ ধরনের ড্রাগ আসক্ত ছিল কি-না তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ জন্য তাদের ভিসেরা ঢাকার রাসায়নিক পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হবে।

হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জিম্মিদের ৭ জনকে পেছন থেকে ঘাড়ে গুলি করা হয়। তাদের মধ্যে ৪ জন ইতালির নাগরিক, ২ জন জাপানের ও ১ জন ভারতের নাগরিক তারিশি জৈন।

তারিশিকে গুলি করা ছাড়াও কোপানো হয়েছে। তার দুই হাতসহ সারা দেহে চল্লিশটির মতো কোপ ও ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

নিহত ব্যক্তিদের সবার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের ৪ জন চিকিৎসক ও তাদের ৫ জন সহকারী।

সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ৩ জুলাই সকাল ১০টা থেকে পরদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত ময়নাতদন্ত করেন তারা।

ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। দু-এক দিনের মধ্যে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।