বিয়েই যার পেশা

শিশিরবিন্দু ভেবে সূর্যশিশিরে যে ভাবে ধরা দেয় পতঙ্গকুল, সে ভাবেই, শুধু রূপে মোহিত হয়ে, একের পর এক পুরুষ তার কাছে ধরা দিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। চারপাশ থেকে প্রতারণার জাল আষ্টেপৃষ্টে চেপে ধরার সময়, তারা নিজের ভুল বুঝলেও, তখন আর শুধরোনোর অবকাশ ছিল না। যা ঘটার তা আগেই ঘটে গেছে। ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতে হয়েছে ভরনপোষণে।

শ্রীমতী! আসল নাম যে কী, তার সঙ্গে নামেমাত্র ঘর-করা কোন পুরুষই জানেন না। সর্বশেষ যিনি এই রমণীর প্রেমের ফাঁদে ধরা দিয়েছেন, সেই মহিব্বুল ইসলাম শাওনের কাছে মেয়েটি পরিচয় দিয়েছিলেন সুবর্ণা নাহার সাথী। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, এই সাথীই কখনও অপর্ণা হয়েছেন, কখনও আবার কথন। নামে কী আর যায় আসে! আসে, কারণ নাম বদলেই বারবার বিয়ে করেছেন শ্রীমতী।

বিয়েটা ব্যক্তিগত। কে ক’টা বিয়ে করবেন, কাকে ডিভোর্স দেবেন, কার সঙ্গে ঘর বাঁধবেন, তাতে অন্য কারও মাথাব্যথা নেই। থাকার কথাও নয়। কিন্তু, সাথীর কাছে বিয়েটা পেশা হয়ে ওঠে। এটাকেই জীবিকা করে, একের পর এক পুরুষকে তিনি ঠকিয়ে যাচ্ছেন।

একটু নরম, ভোলেভালা গোছের পুরুষকেই শিকার হিসেবে বেছে নিয়ে জাল বিছোতেন। আলাপ থেকে প্রেম। প্রেম জমে ওঠার আগেই চাপ দিয়ে বিয়ে। তারপর, মধুচন্দ্রিমার রেশ মেলানোর আগেই বিচ্ছেদের জন্য চাপ। বিচ্ছেদ। কয়েক লক্ষ কামিয়ে নাম বদলে, আর এক শিকার ফাঁসানো।

পুলিশকে শাওন জানান, ১০ লক্ষ টাকা দেনমোহরে সম্প্রতি তাঁর সঙ্গে সাথীর বিয়ে হয়। বিয়ের আগে সাথীর সম্পর্কে বিশেষ কিছুই জানতেন না। এখন তিনি খোঁজ নিয়ে দেখেছেন, সাথী যে নিজের ঠিকানা দিয়েছিলেন, সেটাও জাল। যশোরের চূড়ামনকাটিতে গিয়ে জানতে পারেন সিরাজুল ইসলাম নামে কেউ সেখানে থাকেন না। এই সিরাজুল ইসলামকে তার বাবা বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। এলাকার মানুষজন জানান, তারা সাথী নামে কাউকে চেনেন না।

শাওন পুলিশকে জানিয়েছেন, ৫ লক্ষ টাকা দেনামোহর দিয়ে তিনি সাথীকে বিয়ে করেন। বিয়ের ঠিক তিন দিনের মাথায় ডিভোর্স চান সাথী। অশান্তির জেরে তিনি ডিভোর্সে রাজি হয়ে যান। সাথীর আচরণ সন্দেহজনক ঠেকায়, নিজেই উদ্যোগী হয়ে খোঁজখবর শুরু করেন। ক্রমে চারপাশ থেকে এই রমণীর স্বরূপ সামনে আসে।

সব জেনেও পুলিশ উদ্যোগী হয়েছিল সাথী-শাওনের মিল করাতে। শাওন তাতে আপত্তি করেননি। কিন্তু, মাঝখান থেকে সাথীই গায়েব। পিসির বাড়ি মিরপুরে যাওয়ার নাম করে সেই যে স্বামীর ঘর ছেড়ে বেরিয়েছেন, তারপর আর খোঁজ নেই শ্রীমতীর। যাওয়ার আগে শাওনের মোবাইল ফোনটিও সঙ্গে নিয়ে গেছেন। এরপর পুলিশ একটি সাধারণ ডায়েরি নিয়ে, তদন্ত শুরু করেছে। সূত্র: এই সময়

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর