ধানের বাজারে সক্রিয় ফড়িয়ারা

বোরো ধানের বাজার সক্রিয় ফড়িয়ারা। বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানি ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা পক্ষে তারা হাটবাজার ও কৃষক থেকে বেশি দামে ধান কিনে নিচ্ছে। আর বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বেশি দামে ধান কেনায় ধান কিনতে বিপাকে পড়েছেন মিলাররা। এমন পরিস্থিতিতে মিলাররা চুক্তি মোতাবেক সরকারকে ধান দেয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে। ফড়িয়ারা সরকারি মূল্যের চেয়ে বেশি দিয়ে কৃষকের খলা থেকে ধান কিনে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে যোগান দিচ্ছে। ফলে আমনের মতো বোরো মৌসুমেও সরকারের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থ হওয়ার শঙ্কা বাড়ছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং মিলারদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ফড়িয়ারা বেশি দাম ধান কিনে নিচ্ছে। আর ঋণ শোধে কৃষকরাও ফড়িয়াদের কাছে ধান বিক্রি করে দিচ্ছেন। কারণ মিলে দিতে গেলে কৃষকদের নানা ঝক্কি পোহাতে হয়। সরকার বোরো মৌসুমে ৩০ টাকা কেজি ধান ও ৪৪ টাকা কেজি চাল কেনার ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এবারও সরকারের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সূত্র জানায়, বিগত কয়েক বছর ধরেই সরকারের ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না। এর জন্য দায়ি মূলত বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বেশি দামে বাজার থেকে ধান কেনা। তাদের সঙ্গে স্থানীয় মজুতদাররাও সক্রিয়। অভিযান চালিয়েও তাদের দমানো যাচ্ছে না। ফলে মিলাররা কিনতে না পেরে সরকারি গুদামে ধান-চাল দিতে পারছে না। সূত্র আরো জানায়, আমন মৌসুমে চুক্তি করে সরকারি গুদামে চাল দিতে না পারায় কুষ্টিয়ায় দুই শতাধিক মিলারকে বোরো সংগ্রহের চুক্তি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলে ওই জেলায় মাত্র ১৮৫ মিলার চাল সরবরাহের সুযোগ পাঁচ্ছে। অথচ কুষ্টিয়ার ৬টি উপজেলায় তালিকাভুক্ত মিলার চার শতাধিক রয়েছে। এবার ওই জেলায় ১৩৮টি হাসকিং মিল মালিক ও ৪৭টি অটোমিলের মালিক চুক্তির আওতায় এসেছেন। সরকার জেলায় ৩৮ হাজার ৪৮২ টন চাল ও ৩ হাজার ৯৮ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। আমন মৌসুমে চাল না দেয়ায় শাস্তি হিসেবে মিল মালিকদের চুক্তির বাইরে রাখা হয়েছে। এদিকে মিলারদের মতে, অতীতে লোকসান দিয়েও হাসকিং মিলাররা চাল সরবরাহ করেছে। বর্তমানে তারা দেনার দায়ে জর্জরিত। সরকার ক্ষমা করে সরবরাহের সুযোগ না দিলে মিলারদের আরো বিপদে পড়তে হবে। মূলত উচ্চমূল্যের কারণে গত বোরোর পর আমন মৌসুমে চাল দিতে পারেননি মিলাররা। এটিকে ব্যর্থতা হিসেবে দেখা ঠিক হবে না। আশা করা যায় সরকার বাদ পড়াদের কিছু হলেও বরাদ্দ দেবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর