ঢাকা ০৯:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাওরপাড়ের কৃষকরা কষ্টে আছেন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:৩৫:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জুন ২০১৬
  • ২৩৫ বার

‘ছয়জনের পরিবার নিয়ে কষ্টে আছি। ইবার ঘরের উগার খালি।’ তিনি এখন কুলির কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। সুকলাইন গ্রামের কৃষক উত্তম দাস জানান, এবার ছায়ার হাওরে এক হাল (১২ কেদার) জমিতে ধারদেনা করে ধান লাগিয়েছিলেন। ধান পাকার আগে বৈশাখের প্রথম দিকে সুলতানপুর-মুক্তারপুর বাঁধ ভেঙে জমি তলিয়ে গেলে তিনি পরিবার নিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েন। এখন নৌকা বেয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন।বাহারা ইউনিয়নের বাহারা গ্রামের প্রবীণ শিক্ষক ও কৃষক রবীন্দ্র চন্দ্র দাস বলেন, ‘ভাণ্ডাবিল হাওর তলিয়ে যাওয়ায় তাঁর ২০ কেদার জমির ১৫ কেদারই তলিয়ে গেছে। জমি চাষের খরচ তো উঠেই না, বরং লোকসান হয়েছে মোটা অঙ্কের অর্থ। ফসলডুবির কারণে ঈদ ও পূজার আনন্দ মাটি হয়ে গেছে। ইজারাদারের কারণে অনেকে মাছ ধরতেও পারছেন না। ফলে এ অঞ্চলের অধিকাংশ কৃষক কষ্টে আছেন। একই ধরনের বক্তব্য হাওরাঞ্চলের অসংখ্য কৃষকের।

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালকের কার্যালয়ের হিসাবে গত বোরো মৌসুমে সুনামগঞ্জের হাওরে এক লাখ ৯৩ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়। এর মধ্যে পাহাড়ি ঢলে কাঁচা ও আধাপাকা অবস্থায় এক লাখ ১৭ হাজার ৪৭৫ হেক্টর জমির বোরো (৬১ ভাগ) ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিসহ কৃষকরা দাবি করছেন, সব মিলিয়ে ফসলের ক্ষতির পরিমাণ ৯০ ভাগেরও বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বিশেষ সহায়তাসহ হাওরাঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কৃষকরা তেমন সহায়তা পাননি বলে অভিযোগ করছেন।

এ প্রসঙ্গে সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ধান পাকার আগেই ফসল তলিয়ে যাওয়ায় ধান তুলতে না পেরে অনেক কৃষকই এখন নিঃস্ব। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য খাদ্য সহায়তা তেমন আসেনি। তবে দুই লাখ পাঁচ হাজার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের মধ্যে ২৫ কোটি টাকা বিতরণের প্রস্তুতি চলছে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

হাওরপাড়ের কৃষকরা কষ্টে আছেন

আপডেট টাইম : ০১:৩৫:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জুন ২০১৬

‘ছয়জনের পরিবার নিয়ে কষ্টে আছি। ইবার ঘরের উগার খালি।’ তিনি এখন কুলির কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। সুকলাইন গ্রামের কৃষক উত্তম দাস জানান, এবার ছায়ার হাওরে এক হাল (১২ কেদার) জমিতে ধারদেনা করে ধান লাগিয়েছিলেন। ধান পাকার আগে বৈশাখের প্রথম দিকে সুলতানপুর-মুক্তারপুর বাঁধ ভেঙে জমি তলিয়ে গেলে তিনি পরিবার নিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েন। এখন নৌকা বেয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন।বাহারা ইউনিয়নের বাহারা গ্রামের প্রবীণ শিক্ষক ও কৃষক রবীন্দ্র চন্দ্র দাস বলেন, ‘ভাণ্ডাবিল হাওর তলিয়ে যাওয়ায় তাঁর ২০ কেদার জমির ১৫ কেদারই তলিয়ে গেছে। জমি চাষের খরচ তো উঠেই না, বরং লোকসান হয়েছে মোটা অঙ্কের অর্থ। ফসলডুবির কারণে ঈদ ও পূজার আনন্দ মাটি হয়ে গেছে। ইজারাদারের কারণে অনেকে মাছ ধরতেও পারছেন না। ফলে এ অঞ্চলের অধিকাংশ কৃষক কষ্টে আছেন। একই ধরনের বক্তব্য হাওরাঞ্চলের অসংখ্য কৃষকের।

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালকের কার্যালয়ের হিসাবে গত বোরো মৌসুমে সুনামগঞ্জের হাওরে এক লাখ ৯৩ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়। এর মধ্যে পাহাড়ি ঢলে কাঁচা ও আধাপাকা অবস্থায় এক লাখ ১৭ হাজার ৪৭৫ হেক্টর জমির বোরো (৬১ ভাগ) ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিসহ কৃষকরা দাবি করছেন, সব মিলিয়ে ফসলের ক্ষতির পরিমাণ ৯০ ভাগেরও বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বিশেষ সহায়তাসহ হাওরাঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কৃষকরা তেমন সহায়তা পাননি বলে অভিযোগ করছেন।

এ প্রসঙ্গে সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ধান পাকার আগেই ফসল তলিয়ে যাওয়ায় ধান তুলতে না পেরে অনেক কৃষকই এখন নিঃস্ব। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য খাদ্য সহায়তা তেমন আসেনি। তবে দুই লাখ পাঁচ হাজার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের মধ্যে ২৫ কোটি টাকা বিতরণের প্রস্তুতি চলছে।’