দেশের হাওরভুক্ত সাত জেলায় বোরো মৌসুমের ধান কাটা শুরু হয়েছে। চলতি মৌসুমে এ অঞ্চলে বোরো আবাদ হয়েছে ৯ লাখ ৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে। চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৩৯ লাখ ৮৭ হাজার মেট্রিক টন। এদিকে আগামী ২২ এপ্রিলের পর ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে ২৪ তারিখের পর হাওর এলাকায় পাহাড়ি ঢল দেখা দিতে পারে। সেই শঙ্কা কাটিয়ে মোট বোরোর প্রায় ১৯ শতাংশ চাল সরবরাহ করবে হাওরের জেলাগুলো।
কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল অনুসারে ২২ এপ্রিলের পর থেকে মেঘালয় পর্বত এলাকায় সপ্তাহব্যাপী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে সিলেটের হাওর অঞ্চলে পাহাড়ি ঢল শুরু হতে পারে ২৪ এপ্রিলের পর থেকে। পানিপ্রবাহের ওপর নির্ভর করবে এ অঞ্চলের কৃষকদের কী পরিমাণ ক্ষতির মুখোমুখি হতে হবে।
সুনামগঞ্জের শাল্লা ও ধর্মপাশা উপজেলায় গত শনিবার সরকারিভাবে বোরো ধান কাটা কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। গতকাল রবিবার পর্যন্ত প্রায় ৫০০ হেক্টর জমির বোরো ধান কাটা হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে দেশি প্রজাতির ধান লালডিঙ্গা, জাগলি বোরো, আদি বোরোসহ বিভিন্ন প্রজাতির স্থানীয় ধান কেটেছেন কৃষকরা। তবে কিছু কিছু এলাকায় ব্রি-ধান ২৮, ২৯-সহ বেশ কিছু জাতের ধানে ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। এতে কৃষকরা কিছুটা উদ্বিগ্ন। এতে গড় ফলনে প্রভাব না পড়লেও কিছু কৃষকের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
চলতি বছর সুনামগঞ্জে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি বোরো ধান আবাদ হয়েছে। জেলার পৌনে চার লাখ কৃষক পরিবার হাওরের বোরো চাষাবাদের সঙ্গে জড়িত। এ বিষয়ে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মকসুদ চৌধুরী বলেন, ‘বোরো ধান কাটা শুরু হয়ে গেছে। প্রতিদিনই বিভিন্ন হাওরে ধান কাটছেন কৃষকরা। কৃষকদের ধান কাটতে যাতে কোনো অসুবিধা না হয়, সেদিকে আমাদের নজর রয়েছে।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শুধু হাওরের ধান কাটতে দুই সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। প্রকৃতি এখনো পর্যন্ত অনুকূলে থাকায় কৃষকরা ধান ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা রাখছি। ফলন ভালো হওয়ায় হাওরের জেলাগুলোর মাধ্যমে দেশের মোট বোরোর প্রায় ১৯ শতাংশ সরবরাহ হবে।’