জলাবদ্ধতার কারণে তলিয়ে গেছে সুনামগঞ্জের দেখার হাওরের শিয়ালমারা অংশের ধান। পাশাপাশি শুকনো জায়গার ধানেও দেখা দিয়েছে ব্লাস্ট রোগ। তোর থেকে ধান হওয়ার আগেই নষ্ট হয়ে গেছে গাছ। উভয় সংকটে পড়ে শিয়ালমারার কৃষকরা এখন দিশেহারা। বাধ্য হয়েই কোমর পানিতে নেমে যতটুকু সম্ভব ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
জানা যায়, কয়েকদিন রাতে টানা বৃষ্টি ও সুনামগঞ্জ পৌরসভার ড্রেনের পানিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয় শিয়ালমারা হাওরে। বৃষ্টি ও ড্রেনের পানি হাওর থেকে বাহির হওয়ার জন্য শান্তিগঞ্জের উথারিয়া পাথারিয়া বাঁধে দুটি রিং বসানো ছিল। প্রশাসন থেকে সেই রিং দিয়ে পানি বের হওয়ার পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পানি বের হওয়ার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ায় শিয়ালমারা হাওরে জলাবদ্ধতা কঠিন রুপ নেয়।
এ নিয়ে ৫ এপ্রিল ঢাকা পোস্টে ‘তলিয়ে যাচ্ছে দেখার হাওরের কাঁচা ধান’ শিরোনামে সংবাদও প্রকাশিত হয়। পরে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো মিলে বাঁধটির রিং খুলে দিয়ে পানি বের হওয়ার রাস্তা করে দেয়। এরপরও রক্ষা হলো না এই হাওরের ধান। প্রায় ৫০ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন কৃষকরা।
শিয়ালমারা হাওরের বানু বিশ্বাস বলেন, ৬ কেয়ার জমি করেছিলাম। সব জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। সারা বছর খেতে হবে। এই ধানের ওপর আমাদের জীবন। তাই যতটুকু পারছি পানিতে নেমে নৌকা দিয়ে ধান কাটার চেষ্টা করছি।
ডোপি কোনা গ্রামের কৃষক গোপাল বিশ্বাস বলেন, যাদের জমি শুকনো আছে তারা মরছে ব্লাস্ট রোগে। আমরা সবদিকে মরা। ১২ কেয়ার জমির সবই জলে গেছে। বছর কী খেয়ে যাবে জানি না। ওপরওয়ালাই ভরসা এখন।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাকিবুল আলম বললেন, যে সমস্যার কারণে পানি বের হচ্ছিল না সেটা সমাধান করা হয়েছে। বাঁধে রিংয়ের মুখ খুলে দেওয়া হয়েছে। হাওর থেকে পানি নেমেও গেছে। এখন যেটুক অংশ ডুবে আছে তা খালের পাশের জমি। এগুলো এমন সময় ডুবেই থাকে, অস্বাভাবিক কিছু না।