ঢাকা ০৬:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাষ্ট্রপতির ৮০তম জন্মদিন পালন করেছে ঢাকাস্থ ইটনা-মিটামইন-অষ্টগ্রাম কল্যাণ সমিতি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:৪৩:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ জানুয়ারী ২০২৩
  • ২৩৪ বার

মোহাম্মদ জাকির হোসাইনঃ ১লা জানুয়ারি ২০২৩ইং রবিবার বিকাল ৫টায় কাকরাইলস্থ আইডিইবি ভবনের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি মিলনায়তনে অষ্টগ্রাম ইটনা মিঠামইন উপজেলা উন্নয়ন ও কল্যাণ সমিতি’র উদ্যোগে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ মহোদয়ের ৮০তম জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

জন্মদিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, এম.পি।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাননীয় বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান,আপিল বিভাগ,বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক,মাননীয় সংসদ সদস্য কিশোরগঞ্জ-৪, মো. আনোয়ার হোসেন, বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবক,বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মো. আব্দুল হক, প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ,মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হক সরকারি কলেজ, মিঠামইন, অধ্যাপক নেহাল আহমেদ তরুণ,মহাপরিচালক,মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, মোহাম্মদ হারুন-অর রশীদ, (পিপিএম বার,বিপিএম বার) অতিরিক্ত কমিশনার,(ডিবির প্রধান) ডিএমপি,ও বৃহত্তম ময়মনসিংহ সমিতির মহাসচিব, সভাপতি কিশোরগঞ্জ জেলা সমিতি,ঢাকা।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, অষ্টগ্রাম ইটনা মিঠামইন উপজেলা উন্নয়ন ও কল্যাণ সমিতির সহসভাপতি, সিনিয়র সাংবাদিক মুক্তিযোদ্ধা রাজেন্দ্র চন্দ্র দেব মন্টু, মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ উদ্দিন মীর, অষ্টগ্রাম ইটনা মিঠামইন উপজেলা উন্নয়ন ও কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট বিমল চন্দ্র রায়, অভ্যর্থনা কমিটির আহবায়ক, আবেদা আক্তার জাহান, জন্মদিনের আপ্যায়ন উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মশিউর রহমান চৌধুরী মেজবাহ, অর্থ কমিটির আহ্বায়ক এফ এম মাসুক নাজিম,প্রচার উপকমিটির আহবায়ক মো. আজিজুল হক, অডিটোরিয়ামের ব্যবস্থাপনা কমিটির আহবায়ক আব্দুল গনি তোতামিয়া, মঞ্চ ব্যবস্থাপনা কমিটির আহবায়ক মো. জামাল উদ্দিন মীর, উপ কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক, শফিকুল ইসলাম মান্নান প্রমুখ।

সভাপতিত্ব করেন অষ্টগ্রাম ইটনা মিঠামইন উপজেলা উন্নয়ন ও কল্যাণ সমিতি’র সভাপতি মো. সোলায়মান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মোঃ বিল্লাল হোসেন ও কামরুল হাসান বাবু।

মাওলানা আবুল কালাম আজাদের কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতির শুভ জন্মদিন শুরু হয় এবং অনুষ্ঠান শেষে কেক কাটেন উপস্থিত মন্ত্রী ও আপিল বিভাগের বিচারপতি এবং  মহামান্য রাষ্ট্রপতির ছোট ভাই ও অন্যান্যরা।

প্রধান অতিথির ডাক ও টেলিযোগাযোগ যোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশের অগ্রগন্য প্রথম নাগরিক মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তাঁর শুভ জন্মদিনে দীর্ঘজীবী কামনা করেন এবং সুস্বাস্থের জন্য সকলের কাছে দোয়া চান। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী তাঁর দীর্ঘজীবনীর ওপর আলোকপাত করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাওরকে খুব ভালোবাসেন বলে জানিয়েছেন মোস্তাফা জব্বার।

তিনি বলেন যখন আমাকে প্রথম মন্ত্রিত্ব দেন তখন আমাকে বললেন-‘মোস্তাফা সাহেব, আপনি হাওরের ছেলে। আপনি নিম্ন আয়ের পরিবারের মানুষ। কষ্ট করে মানুষ হয়েছেন আমি জানি। আমি আপনাকে সাহায্য করবো-আপনি হাওরের জন্য কাজ করুন। গরিব মানুষের জন্য কাজ করুন। গ্রামের মানুষের জন্য কাজ করুন।

রাষ্ট্রপতির জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন অ্যাডভোকেট মো. আলাউদ্দিন-
মো. আবদুল হামিদ ১৯৪৪ সালের পয়লা জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার কামালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মরহুম হাজী মো. তায়েব উদ্দিন এবং মাতার নাম মরহুমা তমিজা খাতুন। মো. আবদুল হামিদ কিশোরগঞ্জ নিকলী জিসিহাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন,কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল কলেজ থেকে আইএ ও বিএ ডিগ্রি এবং ঢাকার সেন্ট্রাল ল’ কলেজ থেকে এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন। শিক্ষাজীবন সমাপ্তির পর তিনি আইন পেশায় নিয়োজিত হন।মো. আবদুল হামিদ-এর রাজনৈতিক জীবনের শুরু হয় ১৯৫৯ সালে তৎকালীন ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে। ১৯৬১ সালে কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় তিনি আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬২ সালে ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়ার কারণে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার তাঁকে কারারুদ্ধ করেন। ১৯৬৩ সালে তিনি কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল কলেজ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৬৪ সালে কিশোরগঞ্জ মহকুমা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ১৯৬৫ সালে কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল কলেজ ছাত্র ইউনিয়নের সহসভাপতি এবং ১৯৬৬-৬৭ সালে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি নির্বাচিত হন। ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদানের কারণে ১৯৬৮ সালে তিনি কারাবরণ করেন। ১৯৬৯ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।

মো. আবদুল হামিদ ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ৭১-এর মার্চের উত্তাল দিনগুলোতে তিনি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে কিশোরগঞ্জে স্বাধীনতার পক্ষে জনমত গঠনের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৭ মার্চ কিশোরগঞ্জ শহরের রথখোলা মাঠে ছাত্র জনসভায় হাজার হাজার লোকের উপস্থিতিতে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করেন।
২৬ মার্চের প্রথমপ্রহরে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি ঐদিন সকালেই স্বাধীনতার ঘোষণা টেলিগ্রামের মাধ্যমে প্রাপ্ত হয়ে সর্বাত্মক মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন। মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার ব্যয় নির্বাহের জন্য তিনি বাঙালি সামরিক কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় এপ্রিলের প্রথম দিকে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান-এর কিশোরগঞ্জ, ভৈরব ও বাজিতপুর শাখা থেকে আনুমানিক ১১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা সংগ্রহ করে ঐ সময় নিরাপদ স্থান হিসেবে বিবেচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া ন্যাশনাল ব্যাংক শাখায় জমা রাখেন।

এরপর তিনি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য ভারতের আগরতলায় চলে যান। তখন বৃহত্তর চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কুমিল্লা-এর অধিকাংশ সংসদ সদস্য সেখানে অবস্থান করছিলেন। মো. হামিদ মুক্তিযুদ্ধের কৌশলগত বিভিন্ন দিক নিয়ে তাঁদের সাথে আলোচনা ও শলা-পরামর্শ করেন। একই সাথে তিনি আগরতলায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথেও মতবিনিময় করেন। পরে তিনি এপ্রিলের শেষ দিকে বাংলাদেশে এসে আরো কিছু সহযোগীসহ আবার মেঘালয়ের টেকেরহাট, গুমাঘাট, পানছড়া, মৈইলাম হয়ে বালাট পৌঁছান।

মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ থেকে আগতদের জন্য তিনি ইয়ুথ রিসিপশন ক্যাম্প চালু করেন এবং এর চেয়ারম্যান ছিলেন। মূলত কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ থেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য আগতদের প্রাথমিক বাছাই কাজ এখানে করা হতো। এছাড়া মেঘালয়ে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা ও শরণার্থীদের ব্যবস্থাপনার সুবিধার্থে গঠিত জোনাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কাউন্সিল-এর তিনি অন্যতম সদস্য ছিলেন। তিনি ভারতের মেঘালয়ে রিক্রুটিং ক্যাম্পের চেয়ারম্যান হিসেবে তৎকালীন সুনামগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ জেলার বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স (মুজিব বাহিনী) সাবসেক্টর কমা-ার পদসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন।

মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময় তিনি এ দায়িত্বে ছিলেন। ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলে তিনি মেঘালয়ে অবস্থানকারী শরণার্থীদের দেশে প্রত্যাবর্তনে উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন ক্যাম্পে সভা করেন। শরণার্থীদের দেশে ফেরা নিশ্চিত করার পর তিনি ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ সনে দেশে ফিরে আসেন।

স্বাধীনতার পর তিনি কিশোরগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বপালন করেন। এরপর ১৯৭৪ সালে তিনি কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নির্বাচিত হন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যাকা-ের পর ১৯৭৬-৭৮ সালে তৎকালীন সরকারের সময় তিনি কারারুদ্ধ হন। তিনি ১৯৭৮ সাল থেকে ২০০৯ সালের ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ১৯৯০ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত পাঁচবার কিশোরগঞ্জ বার এসোসিয়েশনের সভাপতির দায়িত্বপালন করেন।

একজন সমাজসেবক ও শিক্ষা-সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষক মো. আবদুল হামিদ মিঠামইন তমিজা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মিঠামইন বালক উচ্চ বিদ্যালয়, মিঠামইন কলেজসহ এলাকায় প্রায় ৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৪টি উচ্চ বিদ্যালয় ও ৩টি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি অষ্টগ্রাম কলেজ, মিঠামইন ডিগ্রি কলেজ, ইটনা ডিগ্রি কলেজ, মিঠামইন হাইস্কুল, তমিজা খাতুন গার্লস হাইস্কুল, এলংজুড়ি হাইস্কুল, ইটনা গার্লস হাইস্কুল, বারিবাড়ি হাইস্কুল, আবদুল্লাহপুর হাইস্কুল, আবদুল ওয়াদুদ হাইস্কুল, কিশোরগঞ্জ গার্লস হাইস্কুল, ধনপুর হাইস্কুল, শহীদ স্মৃতি হাইস্কুল, মোহনতলা হাইস্কুল এবং ঘাগড়া আঃ গণি উচ্চ বিদ্যালয়ের পৃষ্ঠপোষকসহ তাঁর নির্বাচনী এলাকার আরও অনেক জুনিয়র হাইস্কুল ও মাদ্রাসার পৃষ্ঠপোষক।

মো. আবদুল হামিদ সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট কমিটি, ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ), কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি এসোসিয়েশন (সিপিএ)-এর একরি কিউটিভ কমিটি এবং খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। তিনি কিশোরগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, কিশোরগঞ্জ জেলা পাবলিক লাইব্রেরির আজীবন সদস্য ও নির্বাহী সদস্য। কিশোরগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমী, কিশোরগঞ্জ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এবং কিশোরগঞ্জ রাইফেলস্ ক্লাবের আজীবন সদস্য। তিনি কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাবের সম্মানসূচক সদস্যসহ বহু সংগঠনের সাথে জড়িত।
তিনি ১৯৭০ সালে ময়মনসিংহ-১৮ সংসদ নির্বাচনী এলাকা থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য, ১৯৭২ সালে গণপরিষদ সদস্য, ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৫ আসন থেকে, ১৯৮৬ সালের ৭ মে অনুষ্ঠিত তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ২০০১ সালের পয়লা অক্টোবর অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার আরো বলেন, আমি চাই আমার বাপ-চাচা যারা গ্রামে বড় হয়েছে পানির স্বাদ খেয়ে, কচু, খেঁচো, খেয়েছেন তাদের জন্য আমি কাজ করতে চাই। আমার নেত্রী প্রধানমন্ত্রীর এই কাজগুলো আমি করতে পারছি।

তিনি বলেন, আমি যখন (সম্প্রতি) রাষ্ট্রপতি মহোদয়ের সঙ্গে দেখা করেছি, তখন তিনি আমাকে বললেন, ‘আপনি দুই জেলার (সুনামগঞ্জ-নেত্রকোণা) মধ্যে সংযোগ করে দিচ্ছেন এখানে আমাদের (কিশোরগঞ্জ) এলাকাকেও লাগিয়ে দেন। তাহলে আমরা আপনাদের এলাকায় নিয়মিত আসা-যাওয়া করতে পারব।’

মানুষ অতীতে হাওর অঞ্চলে যেতে চাইতো না, সেই হাওর অঞ্চলের মানুষ হয়ে মহামান্য এদেশের মানুষের জন্য কীনা করেছেন। তিনি এদেশের একজন সম্মানিত মুক্তিযোদ্ধা। তিনি প্রধানমন্ত্রীর সাথে সম্পৃক্ততার সাথে সম্পর্ক বজায় রেখে সুদক্ষ কর্মপরিকল্পনায় এদেশকে বিশ্বের দরবারে পরিচিত করে তুলেছেন।

এখন বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি নয়, ভিক্ষুক মুক্ত, দারিদ্র্য মুক্ত বাংলাদেশ। বাংলাদেশে এখন বিনিয়োগের দেশ, উন্নয়নের রোল মডেল। তিনি বলেন, কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চল পশ্চাদপদ থেকে পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের সকল জেলার মানুষ আজ এ পর্যটন কেন্দ্রে ঘুরতে আসে। তিনি হাওর অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করবেন বলে জানান।

বিশেষ অতিথি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করে বলেন, রাষ্ট্রপতি হাওরের আলোকবর্তিকা। তিনি রাষ্ট্রপতির শৈশব, কৈশোর, যৌবন এবং রাজনৈতিক জীবনের নানা দিক উল্লেখ করেন এবং বলেন, আজ বাংলাদেশ ডিজিটাল যুগে প্রবেশের কারণে আমরা এই অডিটরিয়ামে বসে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি
আমাদেরকে শুভ জন্মদিনের এবং শুভ নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি যেটি স্বপ্নে লালন করি, বাংলাদেশ বাস্তবে ইন্টারনেট যুগে প্রবেশ করেছে। আমি মনে করি বাংলাদেশ তথা হাওরের গ্রামের  ছেলে মেয়েরা একদিন বিশ্বে ইন্টারনেটের নেতৃত্ব দিবে।

মোনাজাত ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত করে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

রাষ্ট্রপতির ৮০তম জন্মদিন পালন করেছে ঢাকাস্থ ইটনা-মিটামইন-অষ্টগ্রাম কল্যাণ সমিতি

আপডেট টাইম : ০১:৪৩:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ জানুয়ারী ২০২৩

মোহাম্মদ জাকির হোসাইনঃ ১লা জানুয়ারি ২০২৩ইং রবিবার বিকাল ৫টায় কাকরাইলস্থ আইডিইবি ভবনের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি মিলনায়তনে অষ্টগ্রাম ইটনা মিঠামইন উপজেলা উন্নয়ন ও কল্যাণ সমিতি’র উদ্যোগে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ মহোদয়ের ৮০তম জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

জন্মদিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, এম.পি।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাননীয় বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান,আপিল বিভাগ,বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক,মাননীয় সংসদ সদস্য কিশোরগঞ্জ-৪, মো. আনোয়ার হোসেন, বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবক,বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মো. আব্দুল হক, প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ,মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হক সরকারি কলেজ, মিঠামইন, অধ্যাপক নেহাল আহমেদ তরুণ,মহাপরিচালক,মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, মোহাম্মদ হারুন-অর রশীদ, (পিপিএম বার,বিপিএম বার) অতিরিক্ত কমিশনার,(ডিবির প্রধান) ডিএমপি,ও বৃহত্তম ময়মনসিংহ সমিতির মহাসচিব, সভাপতি কিশোরগঞ্জ জেলা সমিতি,ঢাকা।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, অষ্টগ্রাম ইটনা মিঠামইন উপজেলা উন্নয়ন ও কল্যাণ সমিতির সহসভাপতি, সিনিয়র সাংবাদিক মুক্তিযোদ্ধা রাজেন্দ্র চন্দ্র দেব মন্টু, মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ উদ্দিন মীর, অষ্টগ্রাম ইটনা মিঠামইন উপজেলা উন্নয়ন ও কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট বিমল চন্দ্র রায়, অভ্যর্থনা কমিটির আহবায়ক, আবেদা আক্তার জাহান, জন্মদিনের আপ্যায়ন উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মশিউর রহমান চৌধুরী মেজবাহ, অর্থ কমিটির আহ্বায়ক এফ এম মাসুক নাজিম,প্রচার উপকমিটির আহবায়ক মো. আজিজুল হক, অডিটোরিয়ামের ব্যবস্থাপনা কমিটির আহবায়ক আব্দুল গনি তোতামিয়া, মঞ্চ ব্যবস্থাপনা কমিটির আহবায়ক মো. জামাল উদ্দিন মীর, উপ কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক, শফিকুল ইসলাম মান্নান প্রমুখ।

সভাপতিত্ব করেন অষ্টগ্রাম ইটনা মিঠামইন উপজেলা উন্নয়ন ও কল্যাণ সমিতি’র সভাপতি মো. সোলায়মান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মোঃ বিল্লাল হোসেন ও কামরুল হাসান বাবু।

মাওলানা আবুল কালাম আজাদের কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতির শুভ জন্মদিন শুরু হয় এবং অনুষ্ঠান শেষে কেক কাটেন উপস্থিত মন্ত্রী ও আপিল বিভাগের বিচারপতি এবং  মহামান্য রাষ্ট্রপতির ছোট ভাই ও অন্যান্যরা।

প্রধান অতিথির ডাক ও টেলিযোগাযোগ যোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশের অগ্রগন্য প্রথম নাগরিক মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তাঁর শুভ জন্মদিনে দীর্ঘজীবী কামনা করেন এবং সুস্বাস্থের জন্য সকলের কাছে দোয়া চান। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী তাঁর দীর্ঘজীবনীর ওপর আলোকপাত করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাওরকে খুব ভালোবাসেন বলে জানিয়েছেন মোস্তাফা জব্বার।

তিনি বলেন যখন আমাকে প্রথম মন্ত্রিত্ব দেন তখন আমাকে বললেন-‘মোস্তাফা সাহেব, আপনি হাওরের ছেলে। আপনি নিম্ন আয়ের পরিবারের মানুষ। কষ্ট করে মানুষ হয়েছেন আমি জানি। আমি আপনাকে সাহায্য করবো-আপনি হাওরের জন্য কাজ করুন। গরিব মানুষের জন্য কাজ করুন। গ্রামের মানুষের জন্য কাজ করুন।

রাষ্ট্রপতির জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন অ্যাডভোকেট মো. আলাউদ্দিন-
মো. আবদুল হামিদ ১৯৪৪ সালের পয়লা জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার কামালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মরহুম হাজী মো. তায়েব উদ্দিন এবং মাতার নাম মরহুমা তমিজা খাতুন। মো. আবদুল হামিদ কিশোরগঞ্জ নিকলী জিসিহাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন,কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল কলেজ থেকে আইএ ও বিএ ডিগ্রি এবং ঢাকার সেন্ট্রাল ল’ কলেজ থেকে এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন। শিক্ষাজীবন সমাপ্তির পর তিনি আইন পেশায় নিয়োজিত হন।মো. আবদুল হামিদ-এর রাজনৈতিক জীবনের শুরু হয় ১৯৫৯ সালে তৎকালীন ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে। ১৯৬১ সালে কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় তিনি আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬২ সালে ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়ার কারণে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার তাঁকে কারারুদ্ধ করেন। ১৯৬৩ সালে তিনি কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল কলেজ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৬৪ সালে কিশোরগঞ্জ মহকুমা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ১৯৬৫ সালে কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল কলেজ ছাত্র ইউনিয়নের সহসভাপতি এবং ১৯৬৬-৬৭ সালে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি নির্বাচিত হন। ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদানের কারণে ১৯৬৮ সালে তিনি কারাবরণ করেন। ১৯৬৯ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।

মো. আবদুল হামিদ ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ৭১-এর মার্চের উত্তাল দিনগুলোতে তিনি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে কিশোরগঞ্জে স্বাধীনতার পক্ষে জনমত গঠনের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৭ মার্চ কিশোরগঞ্জ শহরের রথখোলা মাঠে ছাত্র জনসভায় হাজার হাজার লোকের উপস্থিতিতে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করেন।
২৬ মার্চের প্রথমপ্রহরে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি ঐদিন সকালেই স্বাধীনতার ঘোষণা টেলিগ্রামের মাধ্যমে প্রাপ্ত হয়ে সর্বাত্মক মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন। মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার ব্যয় নির্বাহের জন্য তিনি বাঙালি সামরিক কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় এপ্রিলের প্রথম দিকে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান-এর কিশোরগঞ্জ, ভৈরব ও বাজিতপুর শাখা থেকে আনুমানিক ১১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা সংগ্রহ করে ঐ সময় নিরাপদ স্থান হিসেবে বিবেচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া ন্যাশনাল ব্যাংক শাখায় জমা রাখেন।

এরপর তিনি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য ভারতের আগরতলায় চলে যান। তখন বৃহত্তর চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কুমিল্লা-এর অধিকাংশ সংসদ সদস্য সেখানে অবস্থান করছিলেন। মো. হামিদ মুক্তিযুদ্ধের কৌশলগত বিভিন্ন দিক নিয়ে তাঁদের সাথে আলোচনা ও শলা-পরামর্শ করেন। একই সাথে তিনি আগরতলায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথেও মতবিনিময় করেন। পরে তিনি এপ্রিলের শেষ দিকে বাংলাদেশে এসে আরো কিছু সহযোগীসহ আবার মেঘালয়ের টেকেরহাট, গুমাঘাট, পানছড়া, মৈইলাম হয়ে বালাট পৌঁছান।

মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ থেকে আগতদের জন্য তিনি ইয়ুথ রিসিপশন ক্যাম্প চালু করেন এবং এর চেয়ারম্যান ছিলেন। মূলত কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ থেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য আগতদের প্রাথমিক বাছাই কাজ এখানে করা হতো। এছাড়া মেঘালয়ে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা ও শরণার্থীদের ব্যবস্থাপনার সুবিধার্থে গঠিত জোনাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কাউন্সিল-এর তিনি অন্যতম সদস্য ছিলেন। তিনি ভারতের মেঘালয়ে রিক্রুটিং ক্যাম্পের চেয়ারম্যান হিসেবে তৎকালীন সুনামগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ জেলার বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স (মুজিব বাহিনী) সাবসেক্টর কমা-ার পদসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন।

মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময় তিনি এ দায়িত্বে ছিলেন। ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলে তিনি মেঘালয়ে অবস্থানকারী শরণার্থীদের দেশে প্রত্যাবর্তনে উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন ক্যাম্পে সভা করেন। শরণার্থীদের দেশে ফেরা নিশ্চিত করার পর তিনি ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ সনে দেশে ফিরে আসেন।

স্বাধীনতার পর তিনি কিশোরগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বপালন করেন। এরপর ১৯৭৪ সালে তিনি কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নির্বাচিত হন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যাকা-ের পর ১৯৭৬-৭৮ সালে তৎকালীন সরকারের সময় তিনি কারারুদ্ধ হন। তিনি ১৯৭৮ সাল থেকে ২০০৯ সালের ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ১৯৯০ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত পাঁচবার কিশোরগঞ্জ বার এসোসিয়েশনের সভাপতির দায়িত্বপালন করেন।

একজন সমাজসেবক ও শিক্ষা-সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষক মো. আবদুল হামিদ মিঠামইন তমিজা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মিঠামইন বালক উচ্চ বিদ্যালয়, মিঠামইন কলেজসহ এলাকায় প্রায় ৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৪টি উচ্চ বিদ্যালয় ও ৩টি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি অষ্টগ্রাম কলেজ, মিঠামইন ডিগ্রি কলেজ, ইটনা ডিগ্রি কলেজ, মিঠামইন হাইস্কুল, তমিজা খাতুন গার্লস হাইস্কুল, এলংজুড়ি হাইস্কুল, ইটনা গার্লস হাইস্কুল, বারিবাড়ি হাইস্কুল, আবদুল্লাহপুর হাইস্কুল, আবদুল ওয়াদুদ হাইস্কুল, কিশোরগঞ্জ গার্লস হাইস্কুল, ধনপুর হাইস্কুল, শহীদ স্মৃতি হাইস্কুল, মোহনতলা হাইস্কুল এবং ঘাগড়া আঃ গণি উচ্চ বিদ্যালয়ের পৃষ্ঠপোষকসহ তাঁর নির্বাচনী এলাকার আরও অনেক জুনিয়র হাইস্কুল ও মাদ্রাসার পৃষ্ঠপোষক।

মো. আবদুল হামিদ সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট কমিটি, ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ), কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি এসোসিয়েশন (সিপিএ)-এর একরি কিউটিভ কমিটি এবং খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। তিনি কিশোরগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, কিশোরগঞ্জ জেলা পাবলিক লাইব্রেরির আজীবন সদস্য ও নির্বাহী সদস্য। কিশোরগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমী, কিশোরগঞ্জ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এবং কিশোরগঞ্জ রাইফেলস্ ক্লাবের আজীবন সদস্য। তিনি কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাবের সম্মানসূচক সদস্যসহ বহু সংগঠনের সাথে জড়িত।
তিনি ১৯৭০ সালে ময়মনসিংহ-১৮ সংসদ নির্বাচনী এলাকা থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য, ১৯৭২ সালে গণপরিষদ সদস্য, ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৫ আসন থেকে, ১৯৮৬ সালের ৭ মে অনুষ্ঠিত তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ২০০১ সালের পয়লা অক্টোবর অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার আরো বলেন, আমি চাই আমার বাপ-চাচা যারা গ্রামে বড় হয়েছে পানির স্বাদ খেয়ে, কচু, খেঁচো, খেয়েছেন তাদের জন্য আমি কাজ করতে চাই। আমার নেত্রী প্রধানমন্ত্রীর এই কাজগুলো আমি করতে পারছি।

তিনি বলেন, আমি যখন (সম্প্রতি) রাষ্ট্রপতি মহোদয়ের সঙ্গে দেখা করেছি, তখন তিনি আমাকে বললেন, ‘আপনি দুই জেলার (সুনামগঞ্জ-নেত্রকোণা) মধ্যে সংযোগ করে দিচ্ছেন এখানে আমাদের (কিশোরগঞ্জ) এলাকাকেও লাগিয়ে দেন। তাহলে আমরা আপনাদের এলাকায় নিয়মিত আসা-যাওয়া করতে পারব।’

মানুষ অতীতে হাওর অঞ্চলে যেতে চাইতো না, সেই হাওর অঞ্চলের মানুষ হয়ে মহামান্য এদেশের মানুষের জন্য কীনা করেছেন। তিনি এদেশের একজন সম্মানিত মুক্তিযোদ্ধা। তিনি প্রধানমন্ত্রীর সাথে সম্পৃক্ততার সাথে সম্পর্ক বজায় রেখে সুদক্ষ কর্মপরিকল্পনায় এদেশকে বিশ্বের দরবারে পরিচিত করে তুলেছেন।

এখন বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি নয়, ভিক্ষুক মুক্ত, দারিদ্র্য মুক্ত বাংলাদেশ। বাংলাদেশে এখন বিনিয়োগের দেশ, উন্নয়নের রোল মডেল। তিনি বলেন, কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চল পশ্চাদপদ থেকে পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের সকল জেলার মানুষ আজ এ পর্যটন কেন্দ্রে ঘুরতে আসে। তিনি হাওর অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করবেন বলে জানান।

বিশেষ অতিথি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করে বলেন, রাষ্ট্রপতি হাওরের আলোকবর্তিকা। তিনি রাষ্ট্রপতির শৈশব, কৈশোর, যৌবন এবং রাজনৈতিক জীবনের নানা দিক উল্লেখ করেন এবং বলেন, আজ বাংলাদেশ ডিজিটাল যুগে প্রবেশের কারণে আমরা এই অডিটরিয়ামে বসে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি
আমাদেরকে শুভ জন্মদিনের এবং শুভ নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি যেটি স্বপ্নে লালন করি, বাংলাদেশ বাস্তবে ইন্টারনেট যুগে প্রবেশ করেছে। আমি মনে করি বাংলাদেশ তথা হাওরের গ্রামের  ছেলে মেয়েরা একদিন বিশ্বে ইন্টারনেটের নেতৃত্ব দিবে।

মোনাজাত ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত করে।