হাওর বার্তা ডেস্কঃ ডিজিটাল হুন্ডির মাধ্যমে ব্যবসা করে সরকারের লাখ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে একটি চক্র। এই চক্রটি বিদেশিদের অ্যাকাউন্ট চুরি করে একটি পেপাল অ্যাকাউন্ট খুলে অবৈধভাবে ডলার অর্জন করছে। এতে একদিকে যেমন সরকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, আবার ফ্রিল্যানসাররাও সঠিক পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না।
এমনসব অভিযোগে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ একটি দল। গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- মো. ফয়সাল শেখ ও রাজ মোহাম্মদ শেখ। তাদের কাছ থেকে ৯২ লাখ টাকা, ৫৯টি মোবাইল ফোন সেট, দুটি ল্যাপটপ এবং একটি ফোর জি পকেট রাউটার উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
ডিএমপির এই গোয়েন্দা প্রধান বলেন, ডিবি মতিঝিল বিভাগের একটি দল জানতে পারে হাতিরঝিল থানার একটি বাড়ির নিচ তলার বামপাশের ফ্ল্যাটে বিদেশি আইডেনটিটি চুরি করে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ একটি পেপল একাউন্ট খুলে অবৈধভাবে ডলার অর্জন করে বিক্রি করছে। পরে ডিবির ওই দলটি সেখানে অভিযান চালিয়ে মো. ফয়সাল শেখ ও রাজ মোহাম্মদ শেখকে গ্রেপ্তার করে। এ সময়ে তাদের বাসা থেকে ৯২ লাখ টাকা, ৫৯টি মোবাইল ফোন সেট, দুটি ল্যাপটপ এবং একটি ফোর জির পকেট রাউটার জব্দ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, এই চক্রটি প্রথমে বিদেশিদের আইডেনটিটি চুরি করে একটি পেপল অ্যাকাউন্ট খুলেন। পরে তারা অবৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করেন। এই চক্রের সদস্যরা ফ্রিল্যানসারদের কাছ থেকে পাঁচ হাজার করে টাকা নেয়। কিন্তু ওই পেপাল অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ থেকে যায় গ্রেপ্তার ফয়সাল শেখের হাতে। কারণ ফয়সাল ছাড়া আর কেউ ডলার রূপান্তর করতে পারেন না। ফলে ওই পেপাল অ্যাকাউন্ট থেকে সরকারের যে রাজস্ব আয় হতো, ওই রাজস্ব পাওয়া থেকে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে।
হারুন অর রশীদ বলেন, আবার জুয়াড়িদের কাছে সস্তায় ডলার বিক্রি করে দিচ্ছে একটি চক্রটি। ফলে ফ্রিল্যানসাররা প্রকৃত ডলারটাও পাচ্ছেন না। কারণ এই ব্যবসাটি বাংলাদেশে অবৈধ নয়, কারণ ওরাতো বিদেশিদের আইডেনটি চুরি করে ব্যবসা করছে। এটাকে বলা হয়, ডিজিটাল হুন্ডির ব্যবসা। তিনি বিদেশিদের আইডেনটিটি চুরি করে ব্যবসা করেন। এই ব্যবসার কারণে ১১২ টাকার ডলার তারা ৮৫ টাকায় বিক্রি করছেন।
গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালত পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করে এই ব্যবসার সঙ্গে বাংলাদেশে অন্য কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।