ঢাকা ১১:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুড়িগ্রামে ফের বাড়ছে নদ-নদীর পানি, ভাঙন আতঙ্কে রাত কাটছে নির্ঘুম

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২৯:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জুন ২০২২
  • ১২৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জিও ব্যাগ ফেলেও তিস্তার ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না। ফলে নির্ঘুম রাত কাটছে তিস্তাপাড়ের মানুষদের। গত ১৫ দিনে শুধু কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় ৪২টি বাড়ি তিস্তা নদীতে বিলীন হয়েছে। এছাড়া একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি কমিউনিটি ক্লিনিক বিলীনের পথে।

শুধু তিস্তার ভাঙনে নয়, ধরলা-ব্রহ্মপুত্র-দুধকুমারের করাল গ্রাসে পতিত হচ্ছে আবাদি জমিসহ ঘর-বাড়ি। ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে নদ-নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষজন।

বুধবার (২৯ জুন) সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ ঘণ্টায় ধরলার পানি ৩৪ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ১৫ সেন্টিমিটার ও তিস্তার পানি ২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। উজানে বৃষ্টিপাতের কারণেই এসব নদ-নদীর পানি কিছুটা বাড়ছে বলে জানা গেছে।

রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়াল ডাংগা ইউনিয়নের গতি আসাম গ্রামের আজিজ মিয়া বলেন, হামারগুলার দুঃখের শেষ নাই। বানের ধকল শেষ না হতে শুরু হইছে নদীভাঙন। ঘর-বাড়ি নিয়ে কোনডাই রাখমো। কয়দিন আগত (আগে) মেলাজনের (অনেকের) বাড়ি-ঘর তিস্তার পেটত গেইছে। হামারো (আমাদেরও) কোনবেলা যে ওই দশা হবে তা আল্লায় জানে।

একই এলাকার আব্দুল হক বলেন, এই ১০-১২ দিনে তিস্তার ভাঙনে ৪৫-৫০টি বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। আমাদের দুঃখ-দুর্দশার শেষ নাই। এখানে একটা কমিউনিটি ক্লিনিক আছে। সেটাও যেকোনো সময় তিস্তার গর্ভে যেতে পারে। এখন ক্লিনিকটা নদীতে বিলীন হলে আমরা চিকিৎসা নেব কোথায়? ভাঙনের চিন্তায় আমারগুলার রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।

রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরে তাসনিম বলেন, পানি বৃদ্ধির ফলে তিস্তা নদীর ভাঙন আরও বেড়ে গেছে। গত ১৫ দিনে প্রায় ৪২টি পরিবার ঘর-বাড়ি হারিয়ে গৃহহীন হয়ে পড়েছে। তাছাড়া আমাদের একটি প্রাইমারি স্কুল ও একটি কমিউনিটি ক্লিনিক নদীর মুখে পড়েছে। বিশেষ করে কমিউনিটি ক্লিনিকটা একবারে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক নিলামের প্রক্রিয়া চলছে। যারা ঘর-বাড়ি হারিয়েছে তাদের তালিকা প্রস্তুত করছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

কুড়িগ্রামে ফের বাড়ছে নদ-নদীর পানি, ভাঙন আতঙ্কে রাত কাটছে নির্ঘুম

আপডেট টাইম : ১১:২৯:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জুন ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জিও ব্যাগ ফেলেও তিস্তার ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না। ফলে নির্ঘুম রাত কাটছে তিস্তাপাড়ের মানুষদের। গত ১৫ দিনে শুধু কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় ৪২টি বাড়ি তিস্তা নদীতে বিলীন হয়েছে। এছাড়া একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি কমিউনিটি ক্লিনিক বিলীনের পথে।

শুধু তিস্তার ভাঙনে নয়, ধরলা-ব্রহ্মপুত্র-দুধকুমারের করাল গ্রাসে পতিত হচ্ছে আবাদি জমিসহ ঘর-বাড়ি। ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে নদ-নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষজন।

বুধবার (২৯ জুন) সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ ঘণ্টায় ধরলার পানি ৩৪ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ১৫ সেন্টিমিটার ও তিস্তার পানি ২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। উজানে বৃষ্টিপাতের কারণেই এসব নদ-নদীর পানি কিছুটা বাড়ছে বলে জানা গেছে।

রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়াল ডাংগা ইউনিয়নের গতি আসাম গ্রামের আজিজ মিয়া বলেন, হামারগুলার দুঃখের শেষ নাই। বানের ধকল শেষ না হতে শুরু হইছে নদীভাঙন। ঘর-বাড়ি নিয়ে কোনডাই রাখমো। কয়দিন আগত (আগে) মেলাজনের (অনেকের) বাড়ি-ঘর তিস্তার পেটত গেইছে। হামারো (আমাদেরও) কোনবেলা যে ওই দশা হবে তা আল্লায় জানে।

একই এলাকার আব্দুল হক বলেন, এই ১০-১২ দিনে তিস্তার ভাঙনে ৪৫-৫০টি বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। আমাদের দুঃখ-দুর্দশার শেষ নাই। এখানে একটা কমিউনিটি ক্লিনিক আছে। সেটাও যেকোনো সময় তিস্তার গর্ভে যেতে পারে। এখন ক্লিনিকটা নদীতে বিলীন হলে আমরা চিকিৎসা নেব কোথায়? ভাঙনের চিন্তায় আমারগুলার রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।

রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরে তাসনিম বলেন, পানি বৃদ্ধির ফলে তিস্তা নদীর ভাঙন আরও বেড়ে গেছে। গত ১৫ দিনে প্রায় ৪২টি পরিবার ঘর-বাড়ি হারিয়ে গৃহহীন হয়ে পড়েছে। তাছাড়া আমাদের একটি প্রাইমারি স্কুল ও একটি কমিউনিটি ক্লিনিক নদীর মুখে পড়েছে। বিশেষ করে কমিউনিটি ক্লিনিকটা একবারে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক নিলামের প্রক্রিয়া চলছে। যারা ঘর-বাড়ি হারিয়েছে তাদের তালিকা প্রস্তুত করছি।