ঢাকা ১২:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কমছে লঞ্চের যাত্রী, বাড়ছে বাস ও ট্রিপ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:০৩:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জুন ২০২২
  • ১২৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পদ্মা সেতু চালুর পর সড়কপথে মাত্র তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টায় ঢাকা থেকে বরিশালে আসা-যাওয়া করছে মানুষ। রোববার সেতু চালুর দিন থেকে মোটামুটি এই সময়ের মধ্যে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছে বাসগুলো। ওইদিন ভোরে পদ্মার টোল গেটে ভিড়ের কারণে প্রথমদিকের বাসগুলো খানিকটা দেরি করলেও পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়। সোমবার আরও মসৃণ হয় এই গতি। মাত্র তিন ঘণ্টায় ঢাকায় যেতে পেরে সড়কপথে যাত্রী বাড়লেও কমতে শুরু করেছে ঢাকা-বরিশাল রুটের ঐতিহ্যবাহী লঞ্চ সার্ভিসের যাত্রী। এই সময়ের মধ্যে কম করে হলেও ৫০ ভাগ যাত্রী হারানোর বিষয়টি স্বীকার করেছেন লঞ্চ মালিকরা। যদিও এখনই এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে কোনো কিছু বলতে রাজি নন তারা। তাদের মতে, স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় অনেকেই শখ করে হলেও সড়কপথে যাচ্ছেন। কুরবানির ঈদের অন্তত মাসখানেক পর বোঝা যাবে প্রকৃত পরিস্থিতি।

জানা যায়, যাত্রী বাড়ায় নিয়মিত সার্ভিসের পাশাপাশি দেশের বেশ কয়েকটি নামিদামি কোম্পানি এই রুটে চালু করেছে তাদের বিলাসবহুল বাস। বিশেষ করে গ্রিন লাইন, সাকুরা, প্রচেষ্টাসহ কয়েকটি কোম্পানি তাদের ডবল ডেকার এবং ম্যান বাস চালু করেছে এই রুটে। গ্রিন লাইন পরিবহণের কর্মকর্তা হাসান সরদার বাদশা বলেন, ৪০ ও ২৭ সিটের মোট ১২টি বাস আমরা চালু করেছি এই রুটে। যাত্রী চাহিদার ওপর ভিত্তি করে প্রয়োজনে আরও বাড়বে বাসের সংখ্যা।

সাকুরা পরিবহণের মালিক হুমায়ুন কবির বলেন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ডবল ডেকার, ম্যানসহ আমাদের ৭০টি বাস চলছে ঢাকা-বরিশাল রুটে। উভয় প্রান্ত থেকে প্রতি ৩০ মিনিট অন্তর বাস ছাড়ছি আমরা।

বরিশালের নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকা-বরিশাল রুটে চলাচলকারী বাসগুলোর কাউন্টার থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, সেতু চালু হওয়ার পর শতকরা ৩০ ভাগ যাত্রী বেড়েছে ঢাকা-বরিশালের সড়কপথে। সাড়ে ৩শ থেকে সর্বোচ্চ ১১শ টাকায় মানুষ আসা-যাওয়া করছে বাসে। বরিশাল বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে বলেন, সেতু চালু হওয়ার পর এই রুটে যেমন বাসের সংখ্যা বেড়েছে, তেমনই বাড়ছে ট্রিপ। আগে ফেরি পার হয়ে ঢাকা-বরিশাল রুটে দেড়শর মতো ট্রিপ দিত বাসগুলো। গত দুদিনে তা বেড়ে ৩শ হয়েছে। সেতু চালুর পরিপ্রেক্ষিতে যাত্রী বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, এখনই স্পষ্ট কিছু বলা সম্ভব নয়। মাসতিনেক পর বোঝা যাবে পরিস্থিতি। এখন অনেকেই আনন্দে অথবা সেতু দেখার জন্য বাসে যাওয়া-আসা করছে। ২/৩ মাস গেলে বোঝা যাবে আসল অবস্থা। তবে কিছু যাত্রী বাড়বে এটা ঠিক।

সড়কপথে যে হারে বাড়ছে, ঠিক একই হারে কমছে ঢাকা-বরিশাল রুটের লঞ্চের যাত্রী। গত দুদিনে পরিবর্তনের এই দৃশ্য চোখে পড়েছে বরিশাল লঞ্চঘাটে। যদিও রোববার লঞ্চে যাত্রীর খুব একটা সংকট ছিল না। কিন্তু সোমবার সংকটের চিত্র দেখা যায় লঞ্চগুলোয়। একাধিক লঞ্চের কর্মকর্তা বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষ্যে দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় সব লঞ্চ গিয়েছিল মাদারীপুরের শিবচরে। টানা দুদিন স্বাভাবিকভাবে লঞ্চ চলেনি এই রুটে। লঞ্চ না থাকায় যেসব যাত্রী এই দুদিন গন্তব্যে যোতে পারেননি, তারাই আসলে ভিড় করেন রোববার। পদ্মা সেতুর প্রভাব কতটুকু পড়ল, তা বোঝা গেছে সোমবার। হাতেগোনা ২/১টি লঞ্চ ছাড়া বাকি সবকটিতেই কমেছে যাত্রী। বিশেষ করে প্রথম শ্রেণির কেবিনগুলোয় ৫০ ভাগ যাত্রীও হয়নি। ডেকে যদিও এখন পর্যন্ত তেমন প্রভাব পড়েনি, তবে কেবিনের ক্ষেত্রে যাত্রী কমবে এটা নিশ্চিত।

সুন্দরবন নেভিগেশনের পরিচালক আকতার হোসেন আকেজ বলেন, প্রথম প্রথম একটু প্রভাব পড়লেও লঞ্চের যাত্রী কমবে, এটা মনে করছি না আমরা। ৩শ টাকা ভাড়ায় আমরা ডেক শ্রেণির যাত্রীদের বহন করি। স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে ছোট বাচ্চা থাকলে তার ভাড়া নেওয়া হয় না। এই সুবিধা তো বাস মালিকরা দিতে পারবে না। তাছাড়া সড়কপথে ভাড়াও অনেক বেশি পড়বে।

সুরভী নেভিগেশনের পরিচালক রেজিন উল কবির বলেন, দুদিন ধরে প্রথম শ্রেণির যাত্রীর সংখ্যা কিছুটা কম। তবে ডেকে খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না। এটা যে হবে তা আমরা আগে থেকেই ধারণা করে রেখেছি। পদ্মা সেতু চালু হওয়া মানে আমাদের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের একটা বিশাল স্বপ্ন পূরণ। সেই স্বপ্নকে ছোঁয়ার জন্য প্রথম প্রথম অগণিত মানুষ সড়কপথে ছুটবে, এটাই স্বাভাবিক। আমি মনে করি, এই পরিস্থিতি স্থায়ী হবে না। এটা ঠিক যে হঠাৎ জরুরি প্রয়োজনে মানুষ সেতু পার হয়ে কম সময়ে ঢাকা যাবে। কিন্তু স্বাভাবিক যাত্রায় লঞ্চের যে চাহিদা ছিল, তা কমবে তো না-ই বরং আরও বাড়বে।

সালমা শিপিং করপোরেশনের এজিএম রিয়াজুল করিম বেলাল বলেন, সোমবার বরিশাল থেকে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চে প্রথম শ্রেণির ৫০ ভাগ আসন খালি ছিল। এতে মোটেই হতাশ নই আমরা। সত্যি বলতে গেলে, এখন ঢাকা যাওয়ার দরকার পড়লে আমিও সড়কপথেই যাব-স্বপ্নের পদ্মা সেতু দেখতে। মাসখানেক পর বোঝা যাবে যে লঞ্চের যাত্রী কমল কি না।

পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় সবচেয়ে বেশি সমস্যা হতে পারে ঢাকা-বরিশাল রুটে দিনের বেলায় চলাচল করা গ্রিন লাইনের ওয়াটার বাসের। ৬শ আসনের এই ওয়াটার বাস ঢাকা থেকে সকাল ৮টা এবং বরিশাল থেকে বিকাল ৩টায় ছাড়ে। ৬ ঘণ্টায় এটি পৌঁছায় গন্তব্যে। ভাড়া ৭শ এবং ১১শ টাকা। ৩ ঘণ্টায় গন্তব্যে পৌঁছানোর সুযোগে সড়কপথে যাত্রী বেড়ে যাওয়ায় দিবা সার্ভিসের এই ওয়াটার বাসটি শেষ পর্যন্ত টিকবে কি না, তাই নিয়ে ভাবছেন অনেকে। তবে গ্রিন লাইনের বরিশাল দপ্তরের কর্মকর্তা হাসান বাদশা বলেন, এখন পর্যন্ত তেমন প্রভাব পড়েনি ওয়াটার বাসে। যাত্রীর সংখ্যাও কমেনি।

বরিশাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, লঞ্চ আসলে কখনোই ‘মরবে না’। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় সড়কপথে রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগে সময় কমেছে ঠিক, তবে তাতে লঞ্চের যাত্রী কমার কোনো আশঙ্কা দেখছি না। লঞ্চ রাতে চলায় মানুষের কর্মঘণ্টা নষ্ট হয় না। তাছাড়া নিু আয়ের মানুষ যত কম খরচে লঞ্চে যেতে পারবে, সড়কপথে তা সম্ভব নয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

কমছে লঞ্চের যাত্রী, বাড়ছে বাস ও ট্রিপ

আপডেট টাইম : ০৯:০৩:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জুন ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পদ্মা সেতু চালুর পর সড়কপথে মাত্র তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টায় ঢাকা থেকে বরিশালে আসা-যাওয়া করছে মানুষ। রোববার সেতু চালুর দিন থেকে মোটামুটি এই সময়ের মধ্যে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছে বাসগুলো। ওইদিন ভোরে পদ্মার টোল গেটে ভিড়ের কারণে প্রথমদিকের বাসগুলো খানিকটা দেরি করলেও পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়। সোমবার আরও মসৃণ হয় এই গতি। মাত্র তিন ঘণ্টায় ঢাকায় যেতে পেরে সড়কপথে যাত্রী বাড়লেও কমতে শুরু করেছে ঢাকা-বরিশাল রুটের ঐতিহ্যবাহী লঞ্চ সার্ভিসের যাত্রী। এই সময়ের মধ্যে কম করে হলেও ৫০ ভাগ যাত্রী হারানোর বিষয়টি স্বীকার করেছেন লঞ্চ মালিকরা। যদিও এখনই এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে কোনো কিছু বলতে রাজি নন তারা। তাদের মতে, স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় অনেকেই শখ করে হলেও সড়কপথে যাচ্ছেন। কুরবানির ঈদের অন্তত মাসখানেক পর বোঝা যাবে প্রকৃত পরিস্থিতি।

জানা যায়, যাত্রী বাড়ায় নিয়মিত সার্ভিসের পাশাপাশি দেশের বেশ কয়েকটি নামিদামি কোম্পানি এই রুটে চালু করেছে তাদের বিলাসবহুল বাস। বিশেষ করে গ্রিন লাইন, সাকুরা, প্রচেষ্টাসহ কয়েকটি কোম্পানি তাদের ডবল ডেকার এবং ম্যান বাস চালু করেছে এই রুটে। গ্রিন লাইন পরিবহণের কর্মকর্তা হাসান সরদার বাদশা বলেন, ৪০ ও ২৭ সিটের মোট ১২টি বাস আমরা চালু করেছি এই রুটে। যাত্রী চাহিদার ওপর ভিত্তি করে প্রয়োজনে আরও বাড়বে বাসের সংখ্যা।

সাকুরা পরিবহণের মালিক হুমায়ুন কবির বলেন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ডবল ডেকার, ম্যানসহ আমাদের ৭০টি বাস চলছে ঢাকা-বরিশাল রুটে। উভয় প্রান্ত থেকে প্রতি ৩০ মিনিট অন্তর বাস ছাড়ছি আমরা।

বরিশালের নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকা-বরিশাল রুটে চলাচলকারী বাসগুলোর কাউন্টার থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, সেতু চালু হওয়ার পর শতকরা ৩০ ভাগ যাত্রী বেড়েছে ঢাকা-বরিশালের সড়কপথে। সাড়ে ৩শ থেকে সর্বোচ্চ ১১শ টাকায় মানুষ আসা-যাওয়া করছে বাসে। বরিশাল বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে বলেন, সেতু চালু হওয়ার পর এই রুটে যেমন বাসের সংখ্যা বেড়েছে, তেমনই বাড়ছে ট্রিপ। আগে ফেরি পার হয়ে ঢাকা-বরিশাল রুটে দেড়শর মতো ট্রিপ দিত বাসগুলো। গত দুদিনে তা বেড়ে ৩শ হয়েছে। সেতু চালুর পরিপ্রেক্ষিতে যাত্রী বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, এখনই স্পষ্ট কিছু বলা সম্ভব নয়। মাসতিনেক পর বোঝা যাবে পরিস্থিতি। এখন অনেকেই আনন্দে অথবা সেতু দেখার জন্য বাসে যাওয়া-আসা করছে। ২/৩ মাস গেলে বোঝা যাবে আসল অবস্থা। তবে কিছু যাত্রী বাড়বে এটা ঠিক।

সড়কপথে যে হারে বাড়ছে, ঠিক একই হারে কমছে ঢাকা-বরিশাল রুটের লঞ্চের যাত্রী। গত দুদিনে পরিবর্তনের এই দৃশ্য চোখে পড়েছে বরিশাল লঞ্চঘাটে। যদিও রোববার লঞ্চে যাত্রীর খুব একটা সংকট ছিল না। কিন্তু সোমবার সংকটের চিত্র দেখা যায় লঞ্চগুলোয়। একাধিক লঞ্চের কর্মকর্তা বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষ্যে দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় সব লঞ্চ গিয়েছিল মাদারীপুরের শিবচরে। টানা দুদিন স্বাভাবিকভাবে লঞ্চ চলেনি এই রুটে। লঞ্চ না থাকায় যেসব যাত্রী এই দুদিন গন্তব্যে যোতে পারেননি, তারাই আসলে ভিড় করেন রোববার। পদ্মা সেতুর প্রভাব কতটুকু পড়ল, তা বোঝা গেছে সোমবার। হাতেগোনা ২/১টি লঞ্চ ছাড়া বাকি সবকটিতেই কমেছে যাত্রী। বিশেষ করে প্রথম শ্রেণির কেবিনগুলোয় ৫০ ভাগ যাত্রীও হয়নি। ডেকে যদিও এখন পর্যন্ত তেমন প্রভাব পড়েনি, তবে কেবিনের ক্ষেত্রে যাত্রী কমবে এটা নিশ্চিত।

সুন্দরবন নেভিগেশনের পরিচালক আকতার হোসেন আকেজ বলেন, প্রথম প্রথম একটু প্রভাব পড়লেও লঞ্চের যাত্রী কমবে, এটা মনে করছি না আমরা। ৩শ টাকা ভাড়ায় আমরা ডেক শ্রেণির যাত্রীদের বহন করি। স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে ছোট বাচ্চা থাকলে তার ভাড়া নেওয়া হয় না। এই সুবিধা তো বাস মালিকরা দিতে পারবে না। তাছাড়া সড়কপথে ভাড়াও অনেক বেশি পড়বে।

সুরভী নেভিগেশনের পরিচালক রেজিন উল কবির বলেন, দুদিন ধরে প্রথম শ্রেণির যাত্রীর সংখ্যা কিছুটা কম। তবে ডেকে খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না। এটা যে হবে তা আমরা আগে থেকেই ধারণা করে রেখেছি। পদ্মা সেতু চালু হওয়া মানে আমাদের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের একটা বিশাল স্বপ্ন পূরণ। সেই স্বপ্নকে ছোঁয়ার জন্য প্রথম প্রথম অগণিত মানুষ সড়কপথে ছুটবে, এটাই স্বাভাবিক। আমি মনে করি, এই পরিস্থিতি স্থায়ী হবে না। এটা ঠিক যে হঠাৎ জরুরি প্রয়োজনে মানুষ সেতু পার হয়ে কম সময়ে ঢাকা যাবে। কিন্তু স্বাভাবিক যাত্রায় লঞ্চের যে চাহিদা ছিল, তা কমবে তো না-ই বরং আরও বাড়বে।

সালমা শিপিং করপোরেশনের এজিএম রিয়াজুল করিম বেলাল বলেন, সোমবার বরিশাল থেকে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চে প্রথম শ্রেণির ৫০ ভাগ আসন খালি ছিল। এতে মোটেই হতাশ নই আমরা। সত্যি বলতে গেলে, এখন ঢাকা যাওয়ার দরকার পড়লে আমিও সড়কপথেই যাব-স্বপ্নের পদ্মা সেতু দেখতে। মাসখানেক পর বোঝা যাবে যে লঞ্চের যাত্রী কমল কি না।

পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় সবচেয়ে বেশি সমস্যা হতে পারে ঢাকা-বরিশাল রুটে দিনের বেলায় চলাচল করা গ্রিন লাইনের ওয়াটার বাসের। ৬শ আসনের এই ওয়াটার বাস ঢাকা থেকে সকাল ৮টা এবং বরিশাল থেকে বিকাল ৩টায় ছাড়ে। ৬ ঘণ্টায় এটি পৌঁছায় গন্তব্যে। ভাড়া ৭শ এবং ১১শ টাকা। ৩ ঘণ্টায় গন্তব্যে পৌঁছানোর সুযোগে সড়কপথে যাত্রী বেড়ে যাওয়ায় দিবা সার্ভিসের এই ওয়াটার বাসটি শেষ পর্যন্ত টিকবে কি না, তাই নিয়ে ভাবছেন অনেকে। তবে গ্রিন লাইনের বরিশাল দপ্তরের কর্মকর্তা হাসান বাদশা বলেন, এখন পর্যন্ত তেমন প্রভাব পড়েনি ওয়াটার বাসে। যাত্রীর সংখ্যাও কমেনি।

বরিশাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, লঞ্চ আসলে কখনোই ‘মরবে না’। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় সড়কপথে রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগে সময় কমেছে ঠিক, তবে তাতে লঞ্চের যাত্রী কমার কোনো আশঙ্কা দেখছি না। লঞ্চ রাতে চলায় মানুষের কর্মঘণ্টা নষ্ট হয় না। তাছাড়া নিু আয়ের মানুষ যত কম খরচে লঞ্চে যেতে পারবে, সড়কপথে তা সম্ভব নয়।