ঢাকা ০৯:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভর্তুকি বাড়েনি কৃষি খাতে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৫৫:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুন ২০১৫
  • ৩৬৪ বার
এবারের বাজেট বরাদ্দ থেকে কৃষি খাত বঞ্চিত হয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে কৃষি খাতে ভর্তুকির পরিমাণ এক টাকাও বাড়েনি। জাতীয় বাজেট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে কৃষি মন্ত্রণালয়ে সংশোধিত বাজেটের পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ভর্তুকির পরিমাণ ছিল ৯ হাজার কোটি টাকা। আর নতুন অর্থবছরের (২০১৫-১৬) প্রস্তাবিত মোট বাজেটের মধ্যে (দুই লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা) কৃষি মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দের প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে ১২ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা। যা গত বছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ৪২১ কোটি টাকা বেশি। কিন্তু ভর্তুকির পরিমাণ গত বছরের মতো ৯ হাজার টাকাই আছে। গতকাল নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট থেকে এসব তথ্য পাওয়া  গেছে। তবে কৃষির ?উন্নয়নকে ধরে রাখার জন্য বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী কৃষি সংশ্লিষ্টদের বিভিন্ন সুবিধার কথা তুলে ধরেছেন। এর মধ্য অন্যতম হলো সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ সুবিধা, কৃষি উপকরণ সহায়তা, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও সেচ সুবিধার মাধ্যমে কৃষি জমির আওতা সমপ্রসারণ, কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড প্রদান, কৃষকদের ডাটাবেজ তৈরিকরণ, কৃষকদের পুনর্বাসন সহায়তা প্রদান, প্রশিক্ষণ, শস্য বহুমুখীকরণ, কৃষিপণ্যের বাজারজাতকরণ সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি, জৈব সারের উৎপাদন ও ব্যবহারে উৎসাহিতকরণ, বীজ সরবরাহসহ বিভিন্ন কার্যক্রম। এসব কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে চলবে বলে জানান তিনি। তিনি আরও জানান, কৃষিখাতে বিদ্যমান প্রণোদনার মধ্যে রয়েছে কৃষিঋণের শতকরা ৬০ ভাগ শস্য খাতে বিতরণের নির্দেশনা, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোতে কৃষকদের জন্য ১০ টাকা ব্যাংক হিসাব খোলা, বর্গাচাষিদের ঋণ সুবিধা প্রদানের জন্য পুনঃ অর্থায়ন স্কিম প্রবর্তন, আমদানি বিকল্প ফসল চাষে চার শতাংশ রেয়াতি সুদে ঋণ প্রদান ইত্যাদি। বাজেট বক্তৃতায় কৃষি গবেষণাকে প্রাধান্য দেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, উচ্চফলনশীল শস্যের জাত উদ্ভাবন, অভিযোজন কৌশল ও পরিবেশবান্ধব কৃষি প্রযুক্তি সমপ্রসারণ এবং লবণাক্ততা, জলবদ্ধতা ও খরাসহিঞ্চু ধানের জাত উদ্ভাবনসহ সার্বিক কৃষি গবেষণা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, নতুন অর্থবছরের জন্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ভর্তুকির পরিমাণ ৯ হাজার ৪০০ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ বিভাগ ৯ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাব করে। তবে ভর্তুকির পরিমাণ বাড়ানো উচিত বলে মনে করছেন কৃষি অর্থনীতি ও বাজেট বিশ্লেষকরা। না হলে উৎপাদন খরচ, দ্রব্যের মূল্য এবং কৃষকের ওপর প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে একজন কৃষি ও বাজেট বিশেষজ্ঞ জানান, ভর্তুকির মাধ্যমে কৃষকদের উৎপাদনমুখী করে রাখা সহজ হয়। তাই এর পরিমাণ বাড়ানোর পাশাপাশি সঠিক ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ভর্তুকির পরিমাণ বাড়ানো না হলে কৃষকদের উৎপাদন খরচের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ ভর্তুকির পরিমাণ না বাড়লেও উৎপাদন খরচ ঠিকই বাড়বে। আয়ের তুলনায় ব্যয় বেড়ে গেলে অর্থাৎ উৎপাদন খরচের তুলনায় পণ্য বিক্রির দাম কম অথবা ভর্তুকি না পেলে কৃষকরা হতাশ হয়ে অন্য কর্মে চলে যাবেন।

এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ভর্তুকি বাড়েনি কৃষি খাতে

আপডেট টাইম : ০৪:৫৫:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুন ২০১৫
এবারের বাজেট বরাদ্দ থেকে কৃষি খাত বঞ্চিত হয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে কৃষি খাতে ভর্তুকির পরিমাণ এক টাকাও বাড়েনি। জাতীয় বাজেট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে কৃষি মন্ত্রণালয়ে সংশোধিত বাজেটের পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ভর্তুকির পরিমাণ ছিল ৯ হাজার কোটি টাকা। আর নতুন অর্থবছরের (২০১৫-১৬) প্রস্তাবিত মোট বাজেটের মধ্যে (দুই লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা) কৃষি মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দের প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে ১২ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা। যা গত বছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ৪২১ কোটি টাকা বেশি। কিন্তু ভর্তুকির পরিমাণ গত বছরের মতো ৯ হাজার টাকাই আছে। গতকাল নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট থেকে এসব তথ্য পাওয়া  গেছে। তবে কৃষির ?উন্নয়নকে ধরে রাখার জন্য বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী কৃষি সংশ্লিষ্টদের বিভিন্ন সুবিধার কথা তুলে ধরেছেন। এর মধ্য অন্যতম হলো সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ সুবিধা, কৃষি উপকরণ সহায়তা, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও সেচ সুবিধার মাধ্যমে কৃষি জমির আওতা সমপ্রসারণ, কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড প্রদান, কৃষকদের ডাটাবেজ তৈরিকরণ, কৃষকদের পুনর্বাসন সহায়তা প্রদান, প্রশিক্ষণ, শস্য বহুমুখীকরণ, কৃষিপণ্যের বাজারজাতকরণ সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি, জৈব সারের উৎপাদন ও ব্যবহারে উৎসাহিতকরণ, বীজ সরবরাহসহ বিভিন্ন কার্যক্রম। এসব কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে চলবে বলে জানান তিনি। তিনি আরও জানান, কৃষিখাতে বিদ্যমান প্রণোদনার মধ্যে রয়েছে কৃষিঋণের শতকরা ৬০ ভাগ শস্য খাতে বিতরণের নির্দেশনা, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোতে কৃষকদের জন্য ১০ টাকা ব্যাংক হিসাব খোলা, বর্গাচাষিদের ঋণ সুবিধা প্রদানের জন্য পুনঃ অর্থায়ন স্কিম প্রবর্তন, আমদানি বিকল্প ফসল চাষে চার শতাংশ রেয়াতি সুদে ঋণ প্রদান ইত্যাদি। বাজেট বক্তৃতায় কৃষি গবেষণাকে প্রাধান্য দেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, উচ্চফলনশীল শস্যের জাত উদ্ভাবন, অভিযোজন কৌশল ও পরিবেশবান্ধব কৃষি প্রযুক্তি সমপ্রসারণ এবং লবণাক্ততা, জলবদ্ধতা ও খরাসহিঞ্চু ধানের জাত উদ্ভাবনসহ সার্বিক কৃষি গবেষণা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, নতুন অর্থবছরের জন্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ভর্তুকির পরিমাণ ৯ হাজার ৪০০ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ বিভাগ ৯ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাব করে। তবে ভর্তুকির পরিমাণ বাড়ানো উচিত বলে মনে করছেন কৃষি অর্থনীতি ও বাজেট বিশ্লেষকরা। না হলে উৎপাদন খরচ, দ্রব্যের মূল্য এবং কৃষকের ওপর প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে একজন কৃষি ও বাজেট বিশেষজ্ঞ জানান, ভর্তুকির মাধ্যমে কৃষকদের উৎপাদনমুখী করে রাখা সহজ হয়। তাই এর পরিমাণ বাড়ানোর পাশাপাশি সঠিক ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ভর্তুকির পরিমাণ বাড়ানো না হলে কৃষকদের উৎপাদন খরচের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ ভর্তুকির পরিমাণ না বাড়লেও উৎপাদন খরচ ঠিকই বাড়বে। আয়ের তুলনায় ব্যয় বেড়ে গেলে অর্থাৎ উৎপাদন খরচের তুলনায় পণ্য বিক্রির দাম কম অথবা ভর্তুকি না পেলে কৃষকরা হতাশ হয়ে অন্য কর্মে চলে যাবেন।

এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত