মিল্ক ভিটার মতো প্যাকেট, ১২ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা আসছে

মোড়ক দেখতে ঠিক মিল্ক ভিটার মতো, নামটা ভিন্ন হলেও লেখার ফন্ট ও রং এক রকম হওয়ায় দূর থেকে মিল্ক ভিটা বলে ভুল হওয়াটা স্বাভাবিক। এভাবেই সমবায়ভিত্তিক আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠান মিল্ক ভিটার সুনাম ব্যবহার করে গ্রাহকদের প্রতারিত ও শিশু স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছেন এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী।মিল্ক ভিটার মতো প্যাকেট, ১২ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা আসছে

প্যাকেটজাত ভেজাল দুধের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের সচেতন থাকার অনুরোধ জানিয়ে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা সাংবাদিকদের আজ রবিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ ধরনের ১২টি প্রতিষ্ঠানের সন্ধান পেয়েছে সরকার। এ সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ।

প্রতিমন্ত্রী প্রাইম, ডেইরি ফ্রেস, আফতাব মিল্ক, আলট্রা মিল্ক, পিউরা মিল্ক, মিল্ক ফ্রেস, রিয়াল মিল্ক নামে মিল্ক ভিটার মতো দেখতে সাতটি প্যাকেট সাংবাদিকদের সামনে হাজির করেন।

মিল্ক ভিটা জীবানুমুক্ত করে গ্রাহকদের জন্য নিরাপদ দুধ সরবরাহ করে জানিয়ে মশিউর রহমান বলেন, ‘দুধ জীবানুমুক্ত করে বাজারজাতকরণের মেশিন মিল্ক ভিটা ছাড়াও আর দু’একটি কোম্পানির আছে। এ সব কোম্পানির কাছে ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করার মতো মেশিন নেই। মিল্ক ভিটা শিশু খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বয়স্কদেরও মিল্কভিটা খাওয়ানো হয়। মিল্ক ভিটা মনে করে এ সব দুধ খাওয়ালে ব্যাকটেরিয়া বাচ্চাদের শরীরে ঢুকে ক্ষতি হয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘মিল্ক ভিটার মতো প্যাকেটে দুধ বাজারজাত করে গ্রাহকদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। অল্প শিক্ষিত গরিব মানুষ এটা দেখে চিনতে পারবে না। মনে করবে এটাই বোধহয় মিল্ক ভিটা।’

বাজারে মিল্ক ভিটার মতো ১২ ধরনের প্যাকেটে দুধ বিক্রি হচ্ছে জানিয়ে মশিউর রহমান বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে র‌্যাবের মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি। প্যাকেটগুলো পাঠিয়ে দিলে তিনি দেখে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন। একই সঙ্গে আমরা আমাদের আইনজীবীদের সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা বলব।’

‘প্যাকেটে বিএসটিআই’র লোগো আছে, আমি জানি না বিএসটিআই’র অনুমোদন আছে কিনা। সংগ্রহ করা দুধগুলো বিএসটিআইতে পাঠানো হবে পরীক্ষার জন্য। যারা ট্রেড মার্ক দেয় তাদেরও এ বিষয়টি জানাব। কেউ যাতে নকল দুধ তৈরি করতে না পারে আমরা সেদিকে নজর দিয়েছি’ বলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য রাঙ্গা।

সমবায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শতভাগ গ্যারান্টি দিতে পারি, মিল্ক ভিটাই একমাত্র রিফাইন করে দুধ বাজারে ছাড়ছে। অন্যরা দুধের সঙ্গে বিভিন্ন জিনিস মিশিয়ে দিচ্ছে। মিল্ক ভিটায় কোন ধরনের প্রিজারভেটিব ব্যবহার করা হয় না। মিল্কভিটা কখনও ভেজাল কিছু তৈরি করবে না।’

মিল্ক ভিটার চেয়ারম্যান শেখ নাদির হোসেন লিপু বলেন, ‘বিদেশ থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ দুধ আমদানি করে এনে প্যাকেটজাত করে বিক্রি করছে বিভিন্ন কোম্পানি। এভাবে অনেক লাভ করে থাকে তারা। মিল্ক ভিটা নিজস্ব খামারীদের কাছ থেকে দুধ সংগ্রহ করে।’

তিনি বলেন, ‘বিএসটিআইয়ের রিপোর্ট পাওয়ার পর মিল্ক ভিটার মতো প্যাকেট ব্যবহারের জন্য আমরা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে উকিল নোটিশ পাঠাব। চূড়ান্তভাবে এগুলো বন্ধ করে দেওয়ার জন্য আমরা মামলা করব।’

সারা দেশে প্রতিদিন ১২ লাখ লিটার দুধের চাহিদা রয়েছে জানিয়ে চেয়্যারম্যান বলেন, ‘মিল্ক ভিটা প্রতিদিন ২ লাখ লিটার ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো মিলে ২ লাখ লিটার দুধ সরবরাহ করে থাকে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর