হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে সৃষ্ট বন্যায় সুনামগঞ্জের হাওরে ফসলহানি হয়েছে। কিছু ধান তোলা সম্ভব হলেও সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন বাদাম চাষিরা। এখনও অপরিপক্ক বাদাম গাছ তলিয়ে গেছে বন্যার পানিতে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এই বন্যায় প্রায় ৭০ হেক্টর জমির বাদাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আজ শনিবার সকালে জেলা শহর থেকে দোয়ারাবাজার উপজেলার আজমপুর যাওয়ার পুরো সড়কে ধান শুকানো, মাড়াই, পরিষ্কার করা, খড় শুকানোর কাজ করতে দেখা গেছে। কেই হাওরের পানিতে ডুবে যাওয়া ধান তুলে এনে সড়কের পাশে রাখছিলেন, কেউ ধান মাড়াই করছিলেন। নারীরা ব্যস্ত ধান শুকাতে।
তবে, এমন ব্যস্ততা নেই বাদাম চাষিদের।
আজমপুরের মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘২০০ টাকা করে বাদামের বীজ কিনেছিলাম। রোপণ করা পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু একটা টাকাও আর উঠাতে পারব না। পুরো টাকাই জলে গেল। এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছিলাম। কিভাবে সেই টাকা শোধ করব বুঝে উঠতে পারছি না।’
কৃষক সানোয়ার মিয়া এক একর জমিতে বাদাম চাষ করেছিলেন। আজ সকালে তিনি নৌকায় করে হাওর থেকে ভেজা বাদাম গাছ তুলে এনে সড়কের ধারে রাখেন। গাছের বাদামগুলো ভেজা এবং অপরিপক্ক।
সানোয়ার মিয়া বলেন, ‘উপায় না পেয়ে হাওড় থেকে এগুলো তুলে এনেছি, নিজেরা খাব। বুক সমান পানি থেকে অল্প কিছু বাদাম তুলেছি। বাকি সব শেষ হয়ে গেল।’
অপর কৃষক সায়েদ মিয়া বলেন, ‘করচার হাওরে ৬ একর জমিতে বাদাম আবাদ করেছিলাম। বন্যায় সব জমির বাদাম তলিয়ে গেছে। কিছু গাছ রাত জেগে তুলে এনেছিলাম, কিন্তু শুকাতে পারছি না।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, ‘চারদিকে বন্যার পানি থাকায় ফসল শুকানোর জায়গার সংকট দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় গ্রামের পাশের সড়কই ভরসা। কিন্তু বৃষ্টিতে সেটিও ঠিকমতো করতে পারছেন না কৃষক। টানা বৃষ্টির কারণেই হাওড়ের কৃষক ফসল শুকানো নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় ৭০ হেক্টর জমির বাদাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি।’