ছায়ার সঙ্গে ক্লাসও ঘোরে

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গাংনী উপজেলার প্রত্যন্ত জনপদের ধানখোলা ইউনিয়নের ‘কসবা ডিপিপি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’। স্কুলটি অনেক বছর ধরে শ্রেণিকক্ষ সংকটে রয়েছে। ফলে স্থান সংকুলান না হওয়ায় গাছের ছায়ায় ক্লাস বসান শিক্ষকরা। সূর্য ঘুরলে ছায়ার সঙ্গে শিক্ষার্থীদেরও ঘুরতে হয়।

সরেজমিন দেখা যায়, বাঁশগাছের ছায়ায় সারি সারি বেঞ্চ বসানো। পাশের জাম গাছের সঙ্গে পেরেক লাগিয়ে ব্লাকবোর্ড ঝুলানো। সব ঋতুতেই খোলা আকাশের নিচে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। তবে বিপাকে পড়তে হয় বর্ষাকালে। আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা দেখলেই শিক্ষার্থীরা বাড়ির পথ ধরে। বৃষ্টির দিনে অঘোষিতভাবেই স্কুল ছুটি। শ্রেণিকক্ষ সংকটের পাশাপাশি শিক্ষক সংকটও রয়েছে। মাত্র চারজন শিক্ষক দিয়ে চলে স্কুল।

শিক্ষার্থীরা জানায়, তাপদাহের কারণে ক্লাসে গাদাগাদি করে বসা যায় না। গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনাও আছে। যেদিন বেশি ছাত্রছাত্রী স্কুলে আসে সেদিন আমরা কক্ষের বাইরে বেঞ্চ পেতে ক্লাস করি। বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠার ৩৩ বছর পার করেছে স্কুলটি। জাতীয়করণ হয়েছে ২০১৩ সালে। করোনা পরিস্থিতিতে অনেক শিক্ষার্থী ঝরে গেলেও বর্তমানে ১৪৯ জন নিয়মিত ক্লাস করে থাকে। স্কুলভবন কিংবা বেঞ্চসহ নানা সংকট তো রয়েছেই।

আজও নির্মাণ হয়নি স্কুলটির প্রাচীর। চার কক্ষের একতলা ভবনে একটি অফিস। তিনটি রুমে গাদাগাদি করে ক্লাস নিতে পারছেন না শিক্ষকরা। শিক্ষার্থীরাও পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে স্কুলবিমুখ হচ্ছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফজালুল হক জানান, ৩৩ শতাংশ জমির ওপর ১৯৮৯ সালে কসবা ডিপিপি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হয়। নানা প্রতিকূলতা পাশ কাটিয়ে ২০০৩ সালে সরকারিভাবে স্বল্প পরিসরে অবকাঠামো গড়ে উঠলেও বর্তমানে ওই ভবনে আর স্থান সংকুলান হচ্ছে না। এখন নতুন ভবন, শিক্ষক, বেঞ্চ ও সীমানা প্রাচীর দরকার। ইতোমধ্যে শিক্ষা অফিসার, ইউএনও, জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ত্রাণ অধিদপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। গাংনী উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) শাহজাহান রেজা বলেন, স্কুলটির ভবন ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণের বিষয়ে আবেদন পেয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী খানম বলেন, আমরা স্কুলটি পরিদর্শন করে দেখব। সংকট কাটাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর