নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি হিসেবে সুখ্যাতি রয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের। স্বতন্ত্রতা এনে দিয়েছে পরিযায়ী পাখির আগমন, শীতের রাতে খেঁকশিয়ালের ডাক, হরেক প্রজাতির প্রাণীর বসবাস ও ঋতুভিত্তিক ফুল-ফলের সমারোহ। সবুজ ক্যাম্পাসের এ স্বতন্ত্রতা ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে ছুটির দিনে আগমন ঘটে অতিথিদের। ক্যাম্পাসে প্রায় সর্বত্র এখন জারুল ফুলের সমাহার। গ্রীষ্মের দাবদাহের সঙ্গে যেন প্রতিযোগিতা করে জারুল ফুল ফুটছে। প্রকৃতির মাঝে এই জারুল ফুলের সৌন্দর্য অবলোকন ও গ্রীষ্মের কাঠফাটা রোদের হাত থেকে আত্মরক্ষার জন্য সবুজের ছায়ায় জড়ো হয় শিক্ষার্থীসহ প্রকৃতিপ্রেমীর দল।
জারুল ফুলে চারদিক ঘ্রাণে মোহিত হয় না বটে, কিন্তু দৃষ্টিনন্দন শোভায় সবারই চোখ আটকে যায়। এই পাতাঝরা বৃক্ষ শীতকালে পত্রশূন্য অবস্থায় থাকে। বসন্তে নতুন গাঢ় সবুজ পাতা গজায়। গ্রীষ্মে ফোটে অসম্ভব সুন্দর বেগুনি রঙের থোকা থোকা ফুল। জারুল ফুলগুলো থাকে শাখার ডগায়, পাতার ওপরের স্তরে। গ্রীষ্মের শুরুতেই এর ফুল ফোটে এবং শরৎ পর্যন্ত তা দেখা যায়।
আকৃতি ভিন্ন হলেও জারুল ফুলের রং সাধারণত কচুরিপানা ফুলের মতো বেগুনি আর সাদার মিশেল। এর বৈজ্ঞানিক নাম লেজারস্ট্রমিয়া স্পেসিওজা। নামটির প্রথমাংশ এসেছে সুইডেনের অন্যতম তরু অনুরাগী লেজারস্ট্রমের নাম থেকে। স্পেসিওজা ল্যাটিন শব্দ, অর্থ সুন্দর। জারুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েই কবি জীবনানন্দ দাশ লিখেছিলেন— ‘এই পৃথিবীর এক স্থান আছে সবচেয়ে সুন্দর করুণ সেখানে সবুজ ডাঙা ভরে আছে—মধুকুপী ঘাসে অবিরল, সেখানে গাছের নাম: কাঁঠাল, অশ্বত্থ, বট, জারুল, হিজল।’ তবে এখন সারা দেশেই জারুলের উপস্থিতি তেমন লক্ষ করা যায় না।