হাওর বার্তা ডেস্কঃ ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ২৭ দেশ এবং নরওয়ে, আইসল্যান্ড ও লিখটেনস্টাইনে গত বছর ১৯ হাজার ৯৯০ জন বাংলাদেশি আশ্রয়ের আবেদন করেছে। তবে বাংলাদেশিদের আবেদনের ৯৬ শতাংশই প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। আবেদন মঞ্জুর হওয়া ব্যক্তিদের উৎস দেশের তালিকায় নিচের দিকে আছে বাংলাদেশ। গত মঙ্গলবার ইইউয়ের আশ্রয়বিষয়ক সংস্থার বার্ষিক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
ইইউ বলেছে, গত বছর বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের আশ্রয়ের আবেদন মহামারির আগের সময়ের ধারায় ফিরে এসেছে। ‘ইইউ প্লাস’ অঞ্চলে (ইইউ এবং নরওয়ে, আইসল্যান্ড ও লিখটেনস্টাইন) ২০২০ সালে আশ্রয়ের আবেদনের সংখ্যা ছিল অস্বাভাবিক মাত্রায় কম। গত বছর আবেদনের সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ বেড়েছে। এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে আফগান ও সিরীয় আবেদনকারীরা।
ইইউয়ের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, গত বছর ইইউ প্লাস অঞ্চলে প্রায় ছয় লাখ ১৭ হাজার ৮০০ আবেদনকারী আন্তর্জাতিক সুরক্ষার জন্য আবেদন করেছে। আবেদনকারীদের উৎস দেশগুলো মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার। সবচেয়ে বেশি আবেদন করেছে সিরীয়রা (প্রায় এক লাখ ছয় হাজার)। ২০১৫-১৬ সালের পর সিরীয় ও আফগানদের আশ্রয়ের জন্য এটিই সর্বোচ্চসংখ্যক আবেদন। আবেদনকারীদের উৎস দেশগুলোর তালিকায় আছে ইরাক (প্রায় ২৮ হাজার ৭০০), পাকিস্তান (২৪ হাজার ৬০০), তুরস্ক (২৩ হাজার ৭০০) ও বাংলাদেশ (২০ হাজার)। ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে আশ্রয়ের জন্য বেশি আবেদন করেছে এই দেশগুলোর নাগরিকরা। সোমালিয়া, নাইজেরিয়া, মরক্কোসহ পূর্ব, পশ্চিম ও উত্তর আফ্রিকা থেকেও আগের চেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়েছে। ইউরোপে আশ্রয় আবেদনে বাংলাদেশিরা আছে ষষ্ঠ অবস্থানে। ২০২০ সালের চেয়ে ২০২১ সালে বাংলাদেশিদের আবেদনের হার তিন-চতুর্থাংশ বেড়েছে। আবেদনকারীদের মধ্যে রেকর্ডসংখ্যক ‘অপ্রাপ্তবয়স্ক’ বাংলাদেশিও আছে।
ইইউয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে ২৭ হাজার ৩০০ জন আশ্রয় আবেদনকারী তাদের ‘অভিভাবকহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক’ হিসেবে দাবি করেছে। এটি গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এদের মধ্যে প্রায় ১৩ হাজার জনই আফগান। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সিরীয়দের আবেদনের সংখ্যা ছিল সাড়ে চার হাজার। এর পরই রয়েছে বাংলাদেশিরা। তাদের এমন প্রায় এক হাজার ৪০০ আবেদন জমা পড়েছে, যা এযাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০২০ সালের তুলনায় এই সংখ্যা ১৭৪ শতাংশ বেশি। তবে বাংলাদেশি মোট আবেদনকারীর হিসাবে ‘অভিভাবকহীন অপ্রাপ্তবয়স্কের’ সংখ্যা মাত্র ৭ শতাংশ।
গত বছর ভেনিজুয়েলা, কলম্বিয়া ও লাতিন আমেরিকার অন্য দেশগুলোর নাগরিকদের আশ্রয়ের আবেদন কমেছে। ইউরোপীয় আবেদনকারীদের মধ্যে বেলারুশীয়দের আবেদন গত বছর বেড়ে তিন গুণ হয়েছে। অন্যদিকে উত্তর মেসিডোনিয়ার আবেদনকারীর সংখ্যা বেড়ে চার গুণ হয়েছে।