ঢাকা ০৪:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
পলাতক ওসি শাহ আলমকে ধরতে রেড অ্যালার্ট ২০০ বিলিয়ন ছাড়িয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানলের ক্ষয়ক্ষতি কাতারের আমিরের প্রতি তারেক রহমানের কৃতজ্ঞতা তামিম-হেলসের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন ভিন্নমত বিএনপিসহ বেশির ভাগ দলের ফেক ছবি শনাক্তে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ফিচার ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর শামীম ওসমানের দাঁড়ি-গোফ যুক্ত ছবি ভাইরাল, যা বলছে ফ্যাক্টচেক ঢাকায় যানজট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপের নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা চার-ছক্কা হাঁকানো ভুলে যাননি সাব্বির হজযাত্রীর সর্বনিম্ন কোটা নির্ধারণে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা নেই : ধর্ম উপদেষ্টা

প্রথমবারের মতো দেশে চাষ হচ্ছে সুপার ফুড ‘কিনোয়া’

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১৯:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ১৭৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ উত্তর আমেরিকায় বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কিনোয়ার চাষাবাদ। সেই কিনোয়ার নিয়ে বাংলাদেশের শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ বছর গবেষণা করা হয়েছে। দীর্ঘ গবেষণা শেষে মাঠ পর্যায়ে পাঁচটি প্লটে নতুন ফসলটির চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে লালমনিরহাটে দুটি, কুড়িগ্রামে একটি ও পটুয়াখালীতে দুটি প্লটে চাষাবাদ হচ্ছে। ২ টি প্লটে ৫০ শতাংশ জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে লালমনিরহাটে। আশানুরূপ উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন কৃষকরা।

 

বেসরকারি কোম্পানির কৃষিবিদ ইকবাল হাসান বলেন, প্রতি শতাংশ জমিতে কিনোয়া চাষ করতে খরচ হয় ৫০০-৬০০ টাকা আর উৎপাদন হতে পারে ৪-৬ কেজি। আমি ব্যক্তিগতভাবে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনজন কৃষককে দিয়ে কিনোয়া চাষ করেছি পাইলটিং হিসেবে। ফলাফল খুবই সন্তোষ জনক।

 

তিনি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে কিনোয়ার ব্যাপক চাহিদা আছে। তবে, বাংলাদেশে এখনো সেভাবে মার্কেট গড়ে ওঠেনি। রাজধানী ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে কিনোয়ার চাহিদা আছে। বাংলাদেশে ভোক্তাদের অগ্রিম চাহিদা দিয়ে আমদানিকৃত প্রতি কেজি কিনোয়া কিনতে হচ্ছে ১৬০০ টাকা দরে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়ুয়া গ্রামের কৃষক মুকুল কুমার রায় বলেন, আমি বেসরকারি কোম্পানির কৃষিবিদ ইকবাল হাসানের পরামর্শে ২৫ শতাংশ জমিতে কিয়ানা চাষ করেছি। তার কাছ থেকে বীজ সহায়তা পেয়েছি এবং তিনি এই ফসলের চাষ পদ্ধতি দেখিয়ে দিয়েছেন। কোনো রাসায়নিক সারের ব্যবহার ছাড়াই জৈব সার ব্যবহার করে এই ফসলের চাষ করেছি। ফলন আশানুরূপ হয়েছে। মার্কেট সুবিধা পেলে আগামীতে বেশি জমিতে এ ফসল চাষ করব।

 

একই উপজেলার চিনিপাড়া গ্রামের কৃষক ইসরাইল হোসেন বলেন, আমিও কিনোয়া ফসল সম্পর্কে জানতাম না। কৃষিবিদ ইকবাল হাসানের পরামর্শে ২৫ শতাংশ জমিতে কিনোয়া চাষ করেছি। কিনোয়া চাষ করতে আমার খরচ হয়েছে ১৩ হাজার টাকা। আশা করছি ২৫ শতাংশ জমি থেকে ৮০-৯০ কেজি ফলন পাব।

 

শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রোনমির প্রফেসর ড. পরিমল কান্তি বিশ্বাস বলেন, আমি পাঁচ বছর গবেষণার পর পাইলটিং করতে মাঠ পর্যায়ে কিনোয়া চাষ শুরু করেছি। ফলাফলও আশানুরূপ। আমার আবেদনের পর ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে কিনোয়া চাষের অনুমোদন দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। খরা প্রবণ ও লবণাক্ত দুই ধরনের জমিতেই কিনোয়া চাষ সম্ভব। নভেম্বরের মাঝামাঝি এ ফসল চাষ করে মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে মাঝামাঝি সময় ফলন ঘরে তোলা যায়।

 

তিনি বলেন, বাংলাদেশে কিনোয়ার মার্কেট তৈরি হলে আমাদের কৃষক কিনোয়া চাষ করে লাভবান হতে পারবেন। দেশে কিনোয়ার মার্কেট তৈরিতে কাজ চলছে। উৎপাদিত কিনোয়া বিদেশেও রপ্তানি করা যেতে পারে।

 

প্রফেসর ড. পরিমল কান্তি বিশ্বাস আরো বলেন, কিনোয়া হলো হাউ প্রোটিন সম্পন্ন খাবার। এটিকে সুপার ফুডও বলা হয়। কিনোয়া অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে এবং লাইসিন সমৃদ্ধ, যা সারা শরীর জুড়ে স্বাস্থ্যকর টিস্যু বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। কিনোয়া আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন-ই, পটাসিয়াম এবং ফাইবারের একটি উৎকৃষ্ট উৎস। রান্না করা হলে এর দানাগুলো আকারে চারগুণ হয়ে যায় এবং প্রায় স্বচ্ছ হয়ে যায়।

 

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামীম আশরাফ বলেন, শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এটি নিয়ে গবেষণা করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে চাষাবাদ শুরু করেছে। লালমনিরহাটে কিনোয়ার চাষ শুরু হওয়ার বিষয়টা আমরা জানতে পেরেছি।

 

তথ্যসূত্রঃ বাংলাদেশ জার্নাল

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

পলাতক ওসি শাহ আলমকে ধরতে রেড অ্যালার্ট

প্রথমবারের মতো দেশে চাষ হচ্ছে সুপার ফুড ‘কিনোয়া’

আপডেট টাইম : ১১:১৯:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ উত্তর আমেরিকায় বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কিনোয়ার চাষাবাদ। সেই কিনোয়ার নিয়ে বাংলাদেশের শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ বছর গবেষণা করা হয়েছে। দীর্ঘ গবেষণা শেষে মাঠ পর্যায়ে পাঁচটি প্লটে নতুন ফসলটির চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে লালমনিরহাটে দুটি, কুড়িগ্রামে একটি ও পটুয়াখালীতে দুটি প্লটে চাষাবাদ হচ্ছে। ২ টি প্লটে ৫০ শতাংশ জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে লালমনিরহাটে। আশানুরূপ উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন কৃষকরা।

 

বেসরকারি কোম্পানির কৃষিবিদ ইকবাল হাসান বলেন, প্রতি শতাংশ জমিতে কিনোয়া চাষ করতে খরচ হয় ৫০০-৬০০ টাকা আর উৎপাদন হতে পারে ৪-৬ কেজি। আমি ব্যক্তিগতভাবে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনজন কৃষককে দিয়ে কিনোয়া চাষ করেছি পাইলটিং হিসেবে। ফলাফল খুবই সন্তোষ জনক।

 

তিনি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে কিনোয়ার ব্যাপক চাহিদা আছে। তবে, বাংলাদেশে এখনো সেভাবে মার্কেট গড়ে ওঠেনি। রাজধানী ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে কিনোয়ার চাহিদা আছে। বাংলাদেশে ভোক্তাদের অগ্রিম চাহিদা দিয়ে আমদানিকৃত প্রতি কেজি কিনোয়া কিনতে হচ্ছে ১৬০০ টাকা দরে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়ুয়া গ্রামের কৃষক মুকুল কুমার রায় বলেন, আমি বেসরকারি কোম্পানির কৃষিবিদ ইকবাল হাসানের পরামর্শে ২৫ শতাংশ জমিতে কিয়ানা চাষ করেছি। তার কাছ থেকে বীজ সহায়তা পেয়েছি এবং তিনি এই ফসলের চাষ পদ্ধতি দেখিয়ে দিয়েছেন। কোনো রাসায়নিক সারের ব্যবহার ছাড়াই জৈব সার ব্যবহার করে এই ফসলের চাষ করেছি। ফলন আশানুরূপ হয়েছে। মার্কেট সুবিধা পেলে আগামীতে বেশি জমিতে এ ফসল চাষ করব।

 

একই উপজেলার চিনিপাড়া গ্রামের কৃষক ইসরাইল হোসেন বলেন, আমিও কিনোয়া ফসল সম্পর্কে জানতাম না। কৃষিবিদ ইকবাল হাসানের পরামর্শে ২৫ শতাংশ জমিতে কিনোয়া চাষ করেছি। কিনোয়া চাষ করতে আমার খরচ হয়েছে ১৩ হাজার টাকা। আশা করছি ২৫ শতাংশ জমি থেকে ৮০-৯০ কেজি ফলন পাব।

 

শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রোনমির প্রফেসর ড. পরিমল কান্তি বিশ্বাস বলেন, আমি পাঁচ বছর গবেষণার পর পাইলটিং করতে মাঠ পর্যায়ে কিনোয়া চাষ শুরু করেছি। ফলাফলও আশানুরূপ। আমার আবেদনের পর ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে কিনোয়া চাষের অনুমোদন দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। খরা প্রবণ ও লবণাক্ত দুই ধরনের জমিতেই কিনোয়া চাষ সম্ভব। নভেম্বরের মাঝামাঝি এ ফসল চাষ করে মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে মাঝামাঝি সময় ফলন ঘরে তোলা যায়।

 

তিনি বলেন, বাংলাদেশে কিনোয়ার মার্কেট তৈরি হলে আমাদের কৃষক কিনোয়া চাষ করে লাভবান হতে পারবেন। দেশে কিনোয়ার মার্কেট তৈরিতে কাজ চলছে। উৎপাদিত কিনোয়া বিদেশেও রপ্তানি করা যেতে পারে।

 

প্রফেসর ড. পরিমল কান্তি বিশ্বাস আরো বলেন, কিনোয়া হলো হাউ প্রোটিন সম্পন্ন খাবার। এটিকে সুপার ফুডও বলা হয়। কিনোয়া অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে এবং লাইসিন সমৃদ্ধ, যা সারা শরীর জুড়ে স্বাস্থ্যকর টিস্যু বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। কিনোয়া আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন-ই, পটাসিয়াম এবং ফাইবারের একটি উৎকৃষ্ট উৎস। রান্না করা হলে এর দানাগুলো আকারে চারগুণ হয়ে যায় এবং প্রায় স্বচ্ছ হয়ে যায়।

 

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামীম আশরাফ বলেন, শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এটি নিয়ে গবেষণা করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে চাষাবাদ শুরু করেছে। লালমনিরহাটে কিনোয়ার চাষ শুরু হওয়ার বিষয়টা আমরা জানতে পেরেছি।

 

তথ্যসূত্রঃ বাংলাদেশ জার্নাল