ঢাকা ০৩:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
ফেক ছবি শনাক্তে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ফিচার ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর শামীম ওসমানের দাঁড়ি-গোফ যুক্ত ছবি ভাইরাল, যা বলছে ফ্যাক্টচেক ঢাকায় যানজট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপের নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা চার-ছক্কা হাঁকানো ভুলে যাননি সাব্বির হজযাত্রীর সর্বনিম্ন কোটা নির্ধারণে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা নেই : ধর্ম উপদেষ্টা একাত্তরের ভূমিকার জন্য ক্ষমা না চেয়ে জামায়াত উল্টো জাস্টিফাই করছে: মেজর হাফিজ ‘আল্লাহকে ধন্যবাদ’ পিএইচডি করে ১৯ সন্তানের মা শমী কায়সারের ব্যাংক হিসাব তলব আগামী মাসের মধ্যে পাঠ্যপুস্তক সবাই হাতে পাবে : প্রেস সচিব নিক্কেই এশিয়াকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস তিন মেয়াদে ভুয়া নির্বাচন মঞ্চস্থ করেছেন হাসিনা

চাকরী ছেড়ে গরুর খামারে আয় ১৮ লাখ টাকা!

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:২৫:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ১৯৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ একটি কোম্পানির বড় পদে চাকরি করতেন তিনি। কিন্তু চাকরিতে মন বসে না। কারো অধীনস্থ থাকতেও ভালো লাগে না। তাই চাকরি ছেড়ে বাড়ি চলে আসেন। প্রথমে চারটি উন্নতমানের গাভী দিয়ে শুরু করেন খামার। এরপর থেকে বাড়তে থাকে গরুর সংখ্যা। বর্তমানে তার খামারে গরু রয়েছে ৩২টি। তার মধ্যে ১৩টি গাভী, প্রতিদিন দিচ্ছে দেড়শ’ লিটারের বেশি দুধ।

আর সে দুধ বিক্রি করে মাসে আয় করছেন লাখ টাকারও বেশি। বছরে আয় ১৫ থেকে ১৮ লাখ টাকা। বলছিলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রবিউল করিম’র কথা। তিনি ২০১১ সালে স্নাতক পাস করেন। রাজশাহী নগরী থেকে প্রায় নয় কিলোমিটার দূরে কাটাখালীর শ্যামনগর গ্রাম। সেখানেই ‘আবরার ডেইর ফার্ম’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, বেশ বড়সড় জায়গা নিয়ে রয়েছে একটি গরুর খামার। চারিদিকে গরুর হাম্বা-হাম্বা ডাক। দুধ সংগ্রহের জন্য প্রস্তুতি চলছে। পাত্র রেডি করছেন দুজন কর্মচারী। খামার থেকে একটু দূরেই গরুকে খাওয়ানোর জন্য ৪ বিঘা জমিতে উন্নত জাতের নেপিয়ার ঘাস লাগানো হয়েছে।

শুরুর গল্প সম্পর্কে রবিউল বলেন, ২০১১ সালে স্নাতক শেষ করে চাকরিতে জয়েন করি। চাকরি করতে ভালো লাগে না, তাই ছেড়ে দিয়ে চলে আসি বাড়িতে। প্রথমে ছাগলের খামার করি। এক বছর পর তা ছেড়ে দেই। রাজশাহীতে গরুর খাঁটি দুধের খুব আকাল। সেই থেকেই দুধের ব্যবসা করার মনস্থির করি। গাভী কিনে পালন করা শুরু করি।

লোভনীয় চাকরি ছাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরের অধীনস্থ থাকতে আমার ভালো লাগে না। নিজের মেধা দিয়ে পরের কোম্পানি কেন গড়ে দেবো? আমার ইচ্ছা নিজেই একটা কোম্পানি করবো। সেখানে আট-দশটা মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এটাই আমার কাছে ভালো লাগে, তাই চাকরি ছেড়ে চলে আসি। চাকরি করেই বা কত টাকা পেতাম। এখন আমার বছরে আয় ১৫ থেকে ১৮ লাখ টাকা। প্রতি মাসে আয় লাখ টাকার উপরে।

একজন এমবিএ ডিগ্রিধারী রবিউল করিম দুধ বিক্রি করছেন। তা নিয়ে প্রতিবেশীরা ঠাট্টা করেননি এমনটি নয়! তবে দৃঢ় সংকল্প নিয়ে এগিয়েছেন তিনি। করোনাকালে বেশির ভাগ ডেইরি খামারিদের লোকসান হয়েছে। তার লোকসান হয়নি এমনটি নয়। তবে তা বুদ্ধি দিয়ে উতরে গেছেন। অবিক্রিত দুধ ছানা তৈরি করে রাখছেন ফ্রিজে। সেখান থেকে বিক্রি করছেন মিষ্টির দোকানে।

রবিউল বলেন, খামার দেখাশুনার জন্য ২ জন কর্মচারী রাখা হয়েছে। তারা দুধ দোহন করা, খাবার দেয়া, গরুকে গোসল করানো থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ করে। গরুকে খাওয়ানোর জন্য ৪ বিঘা জমিতে উন্নত জাতের নেপিয়ার ঘাস লাগিয়েছি। গাভীকে সব সময় দানাদার খাবার দিতে হয়। ভুট্টা, গম, ধানসহ আরো নানা উপাদান মিশিয়ে দানাদার খাবার নিজেই তৈরি করি। এতে খরচ অনেক বেঁচে যায়।

নতুন খামারিদের উদ্দেশ্যে রবিউল বলেন, চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়া ভালো। গরুর খামার করে লোকসানের কথা ভাবা যায় না। শুধুমাত্র সঠিক পরিকল্পনা আর দৃঢ় মনোবল থাকলে এগিয়ে যাওয়া যায়। কৃষিকাজ, পশুপালন শিক্ষিতদের জন্য। একদিকে যেমন স্বাবলম্বী হওয়া যায় সেইসঙ্গে ২-৫ জনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায়। ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে রবিউল করিম বলেন, রাজশাহী নগরীর নিউ মার্কেট এলাকায় দুগ্ধজাত পণ্যের দোকান করা ইচ্ছা রয়েছে। তথ্যসূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ফেক ছবি শনাক্তে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ফিচার

চাকরী ছেড়ে গরুর খামারে আয় ১৮ লাখ টাকা!

আপডেট টাইম : ০৫:২৫:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ একটি কোম্পানির বড় পদে চাকরি করতেন তিনি। কিন্তু চাকরিতে মন বসে না। কারো অধীনস্থ থাকতেও ভালো লাগে না। তাই চাকরি ছেড়ে বাড়ি চলে আসেন। প্রথমে চারটি উন্নতমানের গাভী দিয়ে শুরু করেন খামার। এরপর থেকে বাড়তে থাকে গরুর সংখ্যা। বর্তমানে তার খামারে গরু রয়েছে ৩২টি। তার মধ্যে ১৩টি গাভী, প্রতিদিন দিচ্ছে দেড়শ’ লিটারের বেশি দুধ।

আর সে দুধ বিক্রি করে মাসে আয় করছেন লাখ টাকারও বেশি। বছরে আয় ১৫ থেকে ১৮ লাখ টাকা। বলছিলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রবিউল করিম’র কথা। তিনি ২০১১ সালে স্নাতক পাস করেন। রাজশাহী নগরী থেকে প্রায় নয় কিলোমিটার দূরে কাটাখালীর শ্যামনগর গ্রাম। সেখানেই ‘আবরার ডেইর ফার্ম’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, বেশ বড়সড় জায়গা নিয়ে রয়েছে একটি গরুর খামার। চারিদিকে গরুর হাম্বা-হাম্বা ডাক। দুধ সংগ্রহের জন্য প্রস্তুতি চলছে। পাত্র রেডি করছেন দুজন কর্মচারী। খামার থেকে একটু দূরেই গরুকে খাওয়ানোর জন্য ৪ বিঘা জমিতে উন্নত জাতের নেপিয়ার ঘাস লাগানো হয়েছে।

শুরুর গল্প সম্পর্কে রবিউল বলেন, ২০১১ সালে স্নাতক শেষ করে চাকরিতে জয়েন করি। চাকরি করতে ভালো লাগে না, তাই ছেড়ে দিয়ে চলে আসি বাড়িতে। প্রথমে ছাগলের খামার করি। এক বছর পর তা ছেড়ে দেই। রাজশাহীতে গরুর খাঁটি দুধের খুব আকাল। সেই থেকেই দুধের ব্যবসা করার মনস্থির করি। গাভী কিনে পালন করা শুরু করি।

লোভনীয় চাকরি ছাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরের অধীনস্থ থাকতে আমার ভালো লাগে না। নিজের মেধা দিয়ে পরের কোম্পানি কেন গড়ে দেবো? আমার ইচ্ছা নিজেই একটা কোম্পানি করবো। সেখানে আট-দশটা মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এটাই আমার কাছে ভালো লাগে, তাই চাকরি ছেড়ে চলে আসি। চাকরি করেই বা কত টাকা পেতাম। এখন আমার বছরে আয় ১৫ থেকে ১৮ লাখ টাকা। প্রতি মাসে আয় লাখ টাকার উপরে।

একজন এমবিএ ডিগ্রিধারী রবিউল করিম দুধ বিক্রি করছেন। তা নিয়ে প্রতিবেশীরা ঠাট্টা করেননি এমনটি নয়! তবে দৃঢ় সংকল্প নিয়ে এগিয়েছেন তিনি। করোনাকালে বেশির ভাগ ডেইরি খামারিদের লোকসান হয়েছে। তার লোকসান হয়নি এমনটি নয়। তবে তা বুদ্ধি দিয়ে উতরে গেছেন। অবিক্রিত দুধ ছানা তৈরি করে রাখছেন ফ্রিজে। সেখান থেকে বিক্রি করছেন মিষ্টির দোকানে।

রবিউল বলেন, খামার দেখাশুনার জন্য ২ জন কর্মচারী রাখা হয়েছে। তারা দুধ দোহন করা, খাবার দেয়া, গরুকে গোসল করানো থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ করে। গরুকে খাওয়ানোর জন্য ৪ বিঘা জমিতে উন্নত জাতের নেপিয়ার ঘাস লাগিয়েছি। গাভীকে সব সময় দানাদার খাবার দিতে হয়। ভুট্টা, গম, ধানসহ আরো নানা উপাদান মিশিয়ে দানাদার খাবার নিজেই তৈরি করি। এতে খরচ অনেক বেঁচে যায়।

নতুন খামারিদের উদ্দেশ্যে রবিউল বলেন, চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়া ভালো। গরুর খামার করে লোকসানের কথা ভাবা যায় না। শুধুমাত্র সঠিক পরিকল্পনা আর দৃঢ় মনোবল থাকলে এগিয়ে যাওয়া যায়। কৃষিকাজ, পশুপালন শিক্ষিতদের জন্য। একদিকে যেমন স্বাবলম্বী হওয়া যায় সেইসঙ্গে ২-৫ জনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায়। ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে রবিউল করিম বলেন, রাজশাহী নগরীর নিউ মার্কেট এলাকায় দুগ্ধজাত পণ্যের দোকান করা ইচ্ছা রয়েছে। তথ্যসূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ।