ঢাকা ১০:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এসি ছাড়াই ঠান্ডা থাকুন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:৩৯:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুন ২০১৫
  • ৬২৯ বার
প্রতি বছরই লাফিয়ে বাড়ছে তাপমাত্রা। আর তার সঙ্গে ব্যাপক হারে বাড়ছে এসি বা কুলারের ব্যবহার। শুধুমাত্র ফ্যান দিয়ে আর ঘর ঠাণ্ডা রাখা সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু এসি বা কুলার ছাড়াও বাড়িতে আরামে বসবাস করা যায়। সে উপায়গুলো জেনে নেয়া যাক।
জানালা: বাড়ি বা ফ্ল্যাট সাজানোর আগে নজর দিন জানালার দিকে। একালে কাঠের জানালা প্রায় দেখা যায় না বললেই চলে। তাই আপনার জানালা তৈরি করান অ্যালুমিনিয়াম বা ইউপিভিসির। তার সঙ্গে অবশ্যই উন্নতমানের টাফেন গ্লাস। কারণ এসি বা ফ্যান যাই থাক না কেন তার হাওয়া যেন কোনওভাবেই বাইরে বেরিয়ে যেতে না পারে। অর্থাৎ আপনার জানালা হবে এয়ার টাইট। আর অ্যালুমিনিয়ামের জানালা গরম হাওয়াকে শুষে নিতে সাহায্য করে। আর যদি আপনার পুরনো বাড়িতে কাঠের জানালা থাকে সেক্ষেত্রেও কোনও সমস্যা নেই। শুধু খেয়াল রাখবেন, জানালাতে যেন কোনও ফাঁক না থাকে।
ভেন্টিলেশন: বিপরীত দেওয়ালে দুটি জানালায় সর্বদা ক্রস ভেন্টিলেশন খুব ভালো হয়। যদিও একালে এসি হওয়ার ফলে এতো জানালা বা ভেন্টিলেশন হয় না। তবে বাথরুম আর রান্নাঘরে ভেন্টিলেশন কিন্তু মাস্ট। সঙ্গে ফ্যান। এছাড়া বাথরুমে একটা ছোট ফ্যান আর রান্নাঘরে চিমনি গরম হাওয়া বাইরে বার করে দিতে সাহায্য করে। যদি একান্তই গ্রীষ্মকালে গিজার চালাতে চান, সেক্ষেত্রে তা খুবই কম তাপমাত্রায় রাখুন। এছাড়া রান্নাঘরে ফ্রিজ, মাইক্রোভেন, গ্যাস অর্থাৎ যেকোনও রকমের বৈদ্যুতিক জিনিস থেকে গরম তাপ বেরোতে পারে। তাই তা ব্যবহার করার পর বন্ধ করে রাখুন।
ফ্যান: যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ফ্যান এখন হরেক রকম দেখা যায়। যত বড় ফ্যান হবে, তা বেশি জায়গা জুড়ে বাতাস চলাচল করতে সাহায্য করবে। তবে অবশ্যই ঘরের আয়তন বুঝে। ছোট ঘরে ৪৮ ইঞ্চি আর বড় ঘরে ৫২ ইঞ্চির ফ্যান লাগানোই ভালো। মাথায় রাখবেন, বেশি ব্লেডযুক্ত ফ্যানে হাওয়া কমে যায়। তাই তিনটি ব্লেডযুক্ত ফ্যান কেনাই বাঞ্চনীয়। খুব বেশি গরমে সিলিং ফ্যান ছাড়াও স্ট্যাণ্ড, টেবিল, ওয়াল কিংবা বক্স ফ্যান ব্যবহার করুন। ইচ্ছা করলে, নতুন ফ্ল্যাটে ফ্যান্সি ফ্যান লাগাতে পারেন। তবে তা অবশ্যই কম ব্লেডযুক্ত।
এসি: গরম পড়ার আগে অবশ্যই এসি সার্ভিসিং করান। তাহলে তার ফিল্টার পরিষ্কার থাকবে। সর্বদা এসি না চালিয়ে তাঁকে থার্মোস্ট্যাট মোড (২৩-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) করে রাখুন। এছাড়া হাই-স্টারযুক্ত এসি কিনলেও আপনার বিদ্যুৎ খানিকটা সাশ্রয় হবে। ঘরের আয়তন বুঝে এসি কিনুন। প্রতি ১০০ বর্গফুটে ১টন এসি প্রয়োজন।
আলো: বাল্ব বা টিউবলাইট এখন আর ব্যবহার না করাই ভালো। তা একাধারে যেমন ঘর গরম করে অন্যথা বিদ্যুৎ অপচয় হয় বেশি। তার বদলে সিএফএল বা এলইডি আলো লাগান। অপ্রয়োজনে কখনও আলো জ্বালাবেন না। দরকারে ডিম স্যুইচ ব্যবহার করুন।
দিন আর রাতে ঘর ঠাণ্ডার উপায়: দুপুর বারোটার আগে জানলা বা দরজা খুলে রাখুন। তবে দক্ষিণ পশ্চিম দিকে যাদের জানলা তারা একটু আগেই জানলা বন্ধ করে দিন। অপরদিকে সারা সন্ধ্যা জানালা খুলে রাখুন বরং যাদের দক্ষিণ পশ্চিম দিকে ফ্ল্যাট তারা বিকেলে রোদ পড়লেই জানলা খুলে দিতে পারেন। কারণ এদিকে রোদ যেমন বেশি হাওয়াও প্রবল। দুপুরে রোদ ঢোকার সময় ভালো করে ব্লাইন্ডজ বা পর্দা লাগিয়ে দিন। তাহলে ঘরের তাপমাত্রা অনেক কমবে। খেয়াল রাখবেন, পর্দার লাইনিংটা যেন মোটা কাপড়ের হয়। জানালায় সান প্রোটেকটেড বা ব্ল্যাকআউট ফিল্ম কিংবা ব্ল্যাকআউট ব্লাইণ্ডজ লাগিয়ে নিন। তা রোদের তীব্রতা কমাতে সাহায্য করবে। এছাড়া হিট অবজার্ভিং গ্লাস কিংবা টিন্টেড গ্লাস লাগালেও মন্দ হবে না।
সতর্কতা: গ্রীষ্মে রাগস বা কার্পেট কম ব্যবহার করাই ভালো কারণ টাইলস বা মার্বেল ঘরকে ঠাণ্ডা রাখে। হালকা রঙের সোফা কভার, থ্রো, বেডশিট, বেডকভার এবং পর্দা ব্যবহার করুন। বাড়ি রং করানোর সময় বাড়ির বাইরে হিট রিফ্লেক্টিভ পেন্ট দিয়ে রং করান। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে গাছও ব্যবহার করতে পারেন। গাছও ঘরকে ঠাণ্ডা রাখে। তবে তা ইণ্ডোর প্লান্টস হতে হবে। শুধু তাই নয়,বাতাসের দূষণকে শুষে নিতে এরিকা, পাম, অ্যলোভেরা কিংবা ছোট রাবার গাছ লিভিং রুম বা বারান্দায় সাজিয়ে রাখুন।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

এসি ছাড়াই ঠান্ডা থাকুন

আপডেট টাইম : ০৫:৩৯:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুন ২০১৫
প্রতি বছরই লাফিয়ে বাড়ছে তাপমাত্রা। আর তার সঙ্গে ব্যাপক হারে বাড়ছে এসি বা কুলারের ব্যবহার। শুধুমাত্র ফ্যান দিয়ে আর ঘর ঠাণ্ডা রাখা সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু এসি বা কুলার ছাড়াও বাড়িতে আরামে বসবাস করা যায়। সে উপায়গুলো জেনে নেয়া যাক।
জানালা: বাড়ি বা ফ্ল্যাট সাজানোর আগে নজর দিন জানালার দিকে। একালে কাঠের জানালা প্রায় দেখা যায় না বললেই চলে। তাই আপনার জানালা তৈরি করান অ্যালুমিনিয়াম বা ইউপিভিসির। তার সঙ্গে অবশ্যই উন্নতমানের টাফেন গ্লাস। কারণ এসি বা ফ্যান যাই থাক না কেন তার হাওয়া যেন কোনওভাবেই বাইরে বেরিয়ে যেতে না পারে। অর্থাৎ আপনার জানালা হবে এয়ার টাইট। আর অ্যালুমিনিয়ামের জানালা গরম হাওয়াকে শুষে নিতে সাহায্য করে। আর যদি আপনার পুরনো বাড়িতে কাঠের জানালা থাকে সেক্ষেত্রেও কোনও সমস্যা নেই। শুধু খেয়াল রাখবেন, জানালাতে যেন কোনও ফাঁক না থাকে।
ভেন্টিলেশন: বিপরীত দেওয়ালে দুটি জানালায় সর্বদা ক্রস ভেন্টিলেশন খুব ভালো হয়। যদিও একালে এসি হওয়ার ফলে এতো জানালা বা ভেন্টিলেশন হয় না। তবে বাথরুম আর রান্নাঘরে ভেন্টিলেশন কিন্তু মাস্ট। সঙ্গে ফ্যান। এছাড়া বাথরুমে একটা ছোট ফ্যান আর রান্নাঘরে চিমনি গরম হাওয়া বাইরে বার করে দিতে সাহায্য করে। যদি একান্তই গ্রীষ্মকালে গিজার চালাতে চান, সেক্ষেত্রে তা খুবই কম তাপমাত্রায় রাখুন। এছাড়া রান্নাঘরে ফ্রিজ, মাইক্রোভেন, গ্যাস অর্থাৎ যেকোনও রকমের বৈদ্যুতিক জিনিস থেকে গরম তাপ বেরোতে পারে। তাই তা ব্যবহার করার পর বন্ধ করে রাখুন।
ফ্যান: যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ফ্যান এখন হরেক রকম দেখা যায়। যত বড় ফ্যান হবে, তা বেশি জায়গা জুড়ে বাতাস চলাচল করতে সাহায্য করবে। তবে অবশ্যই ঘরের আয়তন বুঝে। ছোট ঘরে ৪৮ ইঞ্চি আর বড় ঘরে ৫২ ইঞ্চির ফ্যান লাগানোই ভালো। মাথায় রাখবেন, বেশি ব্লেডযুক্ত ফ্যানে হাওয়া কমে যায়। তাই তিনটি ব্লেডযুক্ত ফ্যান কেনাই বাঞ্চনীয়। খুব বেশি গরমে সিলিং ফ্যান ছাড়াও স্ট্যাণ্ড, টেবিল, ওয়াল কিংবা বক্স ফ্যান ব্যবহার করুন। ইচ্ছা করলে, নতুন ফ্ল্যাটে ফ্যান্সি ফ্যান লাগাতে পারেন। তবে তা অবশ্যই কম ব্লেডযুক্ত।
এসি: গরম পড়ার আগে অবশ্যই এসি সার্ভিসিং করান। তাহলে তার ফিল্টার পরিষ্কার থাকবে। সর্বদা এসি না চালিয়ে তাঁকে থার্মোস্ট্যাট মোড (২৩-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) করে রাখুন। এছাড়া হাই-স্টারযুক্ত এসি কিনলেও আপনার বিদ্যুৎ খানিকটা সাশ্রয় হবে। ঘরের আয়তন বুঝে এসি কিনুন। প্রতি ১০০ বর্গফুটে ১টন এসি প্রয়োজন।
আলো: বাল্ব বা টিউবলাইট এখন আর ব্যবহার না করাই ভালো। তা একাধারে যেমন ঘর গরম করে অন্যথা বিদ্যুৎ অপচয় হয় বেশি। তার বদলে সিএফএল বা এলইডি আলো লাগান। অপ্রয়োজনে কখনও আলো জ্বালাবেন না। দরকারে ডিম স্যুইচ ব্যবহার করুন।
দিন আর রাতে ঘর ঠাণ্ডার উপায়: দুপুর বারোটার আগে জানলা বা দরজা খুলে রাখুন। তবে দক্ষিণ পশ্চিম দিকে যাদের জানলা তারা একটু আগেই জানলা বন্ধ করে দিন। অপরদিকে সারা সন্ধ্যা জানালা খুলে রাখুন বরং যাদের দক্ষিণ পশ্চিম দিকে ফ্ল্যাট তারা বিকেলে রোদ পড়লেই জানলা খুলে দিতে পারেন। কারণ এদিকে রোদ যেমন বেশি হাওয়াও প্রবল। দুপুরে রোদ ঢোকার সময় ভালো করে ব্লাইন্ডজ বা পর্দা লাগিয়ে দিন। তাহলে ঘরের তাপমাত্রা অনেক কমবে। খেয়াল রাখবেন, পর্দার লাইনিংটা যেন মোটা কাপড়ের হয়। জানালায় সান প্রোটেকটেড বা ব্ল্যাকআউট ফিল্ম কিংবা ব্ল্যাকআউট ব্লাইণ্ডজ লাগিয়ে নিন। তা রোদের তীব্রতা কমাতে সাহায্য করবে। এছাড়া হিট অবজার্ভিং গ্লাস কিংবা টিন্টেড গ্লাস লাগালেও মন্দ হবে না।
সতর্কতা: গ্রীষ্মে রাগস বা কার্পেট কম ব্যবহার করাই ভালো কারণ টাইলস বা মার্বেল ঘরকে ঠাণ্ডা রাখে। হালকা রঙের সোফা কভার, থ্রো, বেডশিট, বেডকভার এবং পর্দা ব্যবহার করুন। বাড়ি রং করানোর সময় বাড়ির বাইরে হিট রিফ্লেক্টিভ পেন্ট দিয়ে রং করান। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে গাছও ব্যবহার করতে পারেন। গাছও ঘরকে ঠাণ্ডা রাখে। তবে তা ইণ্ডোর প্লান্টস হতে হবে। শুধু তাই নয়,বাতাসের দূষণকে শুষে নিতে এরিকা, পাম, অ্যলোভেরা কিংবা ছোট রাবার গাছ লিভিং রুম বা বারান্দায় সাজিয়ে রাখুন।