হাওর বার্তা ডেস্কঃ নরসিংদীর রায়পুরায় ধানক্ষেত থেকে রুনা বেগম (২৫) নামে এক নারীর ডান চোখ উপড়ানো লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের চর মরজাল উত্তরপাড়ার কৃষক ইব্রাহীম মিয়ার ধানক্ষেত থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত ওই নারী একই এলাকার মোসলেম উদ্দিন ভূঁইয়ার মেয়ে এবং সৌদিপ্রবাসী আবুল কালামের স্ত্রী। খবর পেয়ে রায়পুরা সার্কেলের এএসপি ও রায়পুরা থানার ওসি ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারী লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠান।
নিহতের বোন শান্তি বেগম জানান, গত রাত ৮টায় খাবার খেয়ে চর মরজাল উত্তরপাড়া গ্রামে মামার বাড়ি যাওয়ার কথা বলে বের হন রুনা। ওই রাতে আর বাড়ি ফিরেনি সে। আজ সকালে স্থানীয় কৃষক ইব্রাহীম খবর দেন তার জমিতে এক নারী লাশ পড়ে আছে। পরে রুনার স্বজনরা গিয়ে লাশটি শনাক্ত করে। ওই সময় রুনার পরনে লাল রংয়ের থ্রি পিচ এবং ডান চোখটি উপড়ানো অবস্থায় ছিল বলে জানান তিনি।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বার বছর আগে একই গ্রাম চর মরজাল উত্তরপাড়ার রুনা বেগম ও আবুল কালাম প্রেম করে বিয়ে করেন। পরে বিষয়টি উভয় পরিবার মেনেও নেয়। বার বছরের সংসারে তাদের এক প্রতিবন্ধী পুত্র ও দুই কন্যা সন্তান জন্ম হয়। গত চার বছর আগে শশুরবাড়ি টাকায় সৌদিতে পাড়ি জমান কালাম। প্রবাসে যাওয়ার ছয় মাসের মাথায় ডিভোর্সের জন্য স্ত্রীকে চাপ দেন কালাম। তাতে রাজি না হয়ে তিন সন্তান নিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসেন রুনা। এরপর থেকে বাবার বাড়িতেই থাকছিল সে।
এদিকে বাবার বাড়ির ধার শোধ করতে প্রবাসি স্বামীকে ফোন দেয় রুনা। কিন্তু কালাম তাকে ডিভোর্স দিলে টাকা দেবেন বলে জানান। পরে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বার একটি সালিশী বৈঠকও করেন। এরই জের ধরে প্রবাসি স্বামী রুনাকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসছিল বলে জানান তার বোন।
রুনার শাশুড়ি চেহারা বেগম বলে, ছেলে বিদেশ যাওয়ার ছয় মাস পর তিন সন্তান নিয়ে পুত্রবধূ তার বাবার বাড়িতে চলে যায়। এরপর তাদের মধ্যে কি ঘটেছে কিছুই জানেনা তিনি।
রায়পুরা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) গোবিন্দ্র সরকার জানান, নিহত নারীর লাশ সুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি হত্যাকাণ্ড। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও লিখিত অভিযোগ পাননি বলেও জানান তিনি।