ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির হাজারো অভিযোগ। অভিযোগ নিয়ে প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করছে বিএনপি। অভিযোগ, অনুযোগ নিয়ে নির্বাচন কমিশনেও গিয়েও নালিশের অন্ত নেই বিএনপির। অভিযোগের ডালা সাজিয়ে বিএনপি হালে পানি পায়নি প্রথম দফার নির্বাচনে। সর্বত্রই ভরাডুবি হয়েছে বৃহত্তর এই দলটির।
শত অভিযোগে মিডিয়ায় ঝড় তুললেও মাঠেই দাঁড়াতে পারেনি বিএনপি। দাঁড়াতে পারেনি নির্বাচনের দিনেও।
আর তৃণমূলের এই নির্বাচনে বিএনপির অপারপর দুর্বলতাই ক্ষমাতাসীন দল অাওয়ামী লীগের জন্য বুমেরাং হচ্ছে। অধিকতর দুর্বল বিএনপিই অাওয়ামী লীগের মধ্যকার সংঘর্ষের প্রেক্ষাপট তৈরি করে দিচ্ছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক ( সুজন)-এর সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘বিএনপি শক্তি প্রয়োগ করলে হয়ত ক্ষমতার ভারসাম্য হতো। নতুবা বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যকার সংঘাত তীব্র হতো।’
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপর সহিংসতা শুরু হয়। দিন যতই ঘনিয়ে আসে সহিংসতা ততই বাড়তে থাকে। প্রথম দফা নির্বাচনের অাগেই সহিংসতায় নিহত হয় ১৬ জন নেতাকর্মী। নির্বাচনের দিনই সহিংসতায় নিহত হয় ১১ জন। আহত হয় তিন সহস্রাধিক নেতাকর্মী।
পূর্বে নির্বাচনী সহিংসতায় বিরোধী পক্ষের নেতাকর্মীরা হতাহত হলেও এবার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ক্ষমতাসীন দলের মধ্যেই হতাহতের ঘটনা ঘটছে। নির্বাচনের দিন নিহত ১১ জনের মধ্যে ১০ জনই অাওয়ামী লীগের বলে জানা গেছে। নির্বাচনী মাঠে সহিংসতা ঘটেছে অাওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সঙ্গে দলটির বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের।
ক্ষমতাসীন দলের মধ্যকার এসব সংঘর্ষ দমাতে ব্যর্থ হচ্ছে প্রশাসন, নির্বাচন কমিশনও। নির্বাচনে সহিংসতার প্রসঙ্গে বার বার নিজেদের অসহায়ত্বের কথা স্বীকার করে সংবাদ সম্মেলন করেছে নির্বাচন কমিশন।
সংঘাত, সহিংসতার অাশংকা নিয়ে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতীয় দফার নির্বাচন। একতরফা এবং পক্ষপাতিত্বের এমন নির্বাচন আওয়ামী লীগকেই ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে বলে মনে করেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞ বদিউল অালম মজুমদার।
তিনি বলেন, ‘দলীয় প্রতীকে হচ্ছে বলেই স্থানীয় নির্বাচনে বিরোধী দলের ভূমিকা এবং শক্তি দুই-ই গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয় নির্বাচনে বিএনপি যে দুর্বলতার পরিচয় দিচ্ছে, তা গোটা জাতির জন্য হতাশার। মূলত বিএনপির দুর্বলতার কারণেই আওয়ামী লীগের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। বিএনপি মাঠে অবস্থান নিতে পারছে না বলেই আওয়ামী লীগ নিজেরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে।’