কালোজিরা চাষে ভাগ্য বদলাচ্ছে চলনবিলের কৃষকরা। মসলা ও তৈল জাতীয় ফসল কালোজিরার প্রাকৃতিক গুণাগুণ অসীম। কালোজিরা রোগমুক্তির একটা অপরিসীম নিয়ামত। যার গুণাগুণ সম্পর্কে পবিত্র হাদীস শরীফেও গুরুত্ব সহকারে বলা হয়েছে।
চলনবিল অঞ্চলের নাটোর, পাবনা ও সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় এবার ওষুধি গুণসম্পন্ন কালোজিরার ব্যাপক চাষ হয়েছে। তাড়াশ, রায়গঞ্জ, সিংড়া, বড়াইগ্রাম, ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর, ফরিদপুর, আত্রাইসহ চর এলাকায় নানান প্রকার সবজি ফসলের পাশাপাশি কালোজিরা চাষ করা হয়েছে। ফসল হিসেবে বাংলাদেশে গৌণ হলেও আয়ুর্বেদী, ইউনানি, কবিরাজি ও লোকজ চিকিৎসায় কালোজিরার ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। আদিকাল থেকে ফসফেট, লৌহ, ফসফরাস ও ক্যারোটিন সমৃদ্ধ কালোজিরা বিভিন্ন রোগের মহৌষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলনবিলে কালোজিরার চাষের লক্ষ্যমাত্রা ৫শ’ ৭০ হেক্টর নির্ধারণ করা হলেও রোপণ করা হয়েছে ৬শ হেক্টর। গত বছর চাষ হয়েছিল সাড়ে তিনশ’ হেক্টর। এ বছর অর্ধেকের বেশী আবাদ অর্জিত হয়েছে।
সরেজমিনে চলনবিলের তাড়াশসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কালোজিরা আবাদ বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। এসব এলাকার মাঠে এখন শোভা পাচ্ছে নীলচে সাদা-কালো জাত বিশেষে হলুদ জাত কালোজিরা ফুল। আগামী ৮-১০ দিনের মধ্যে চাষিরা মাঠ থেকে কালোজিরা ঘরে তুলবে।
কৃষকেরা জানান, অগ্রহায়ণ মাসের শেষের দিকে কালোজিরা বীজ বপণ করতে হয় এবং তিন মাসের মধ্যে ফসল ঘরে নেওয়া যায়। সমতল, বেলে, দোঁ-আশ মাটিতে কালোজিরা ভাল হয়। চাষ, বীজ, সার ও পানি বাবদ বিঘা প্রতি ৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়, ফলন হয় ৩ থেকে সাড়ে ৩ মণ । বর্তমানে ১ মণ কালোজিরার বাজার মূল্য ১২ হাজার টাকা।
তাড়াশ উপজেলার বিন্নাবাড়ি গ্রামের কৃষক ইমান আলী জানান, বেশ কয়েক বছর যাবৎ কালোজিরা চাষ করে আসছি । এ বছরও অনেকেই ভাল ফলনের আশায় কালোজিরা চাষ করেছি। ফসলও ভাল হয়েছে, নিরাপদে ঘরে তুলে দাম ভাল পেলে কালজিরা চাষিদের অল্প খরচে অধিক লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম জানান, তাড়াশ উপজেলায় ৭ হেক্টর জমিতে কালোজিরার চাষ করা হয়েছে, ফসলও বেশ ভাল হয়েছে। কোন রোগ বালাই না হলে কৃষক নিশ্চিত লাভবান হবে।