ঢাকা ১২:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামই থাকছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৫৮:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ মার্চ ২০১৬
  • ৫৩২ বার

সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলে দায়ের করা রিট খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামই থাকছে।

সোমবার দুপুর ২টায় শুরু হওয়া এ রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি নাইমা হায়দারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ এ আদেশ দেন। অন্য দুই সদস্য বিচারপতি হলেন- বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল।

এর আগে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের শুনানির দিন ধার্য হওয়ার পর থেকে আবারও সংগঠিত হচ্ছিল মৌলবাদী হেফাজতে ইসলামসহ ইসলামী দল ও সংগঠনগুলো। এরই মধ্যে তারা একাধিক কর্মসূচিও দিয়েছে। আর জামায়াতে ইসলামীর ডাকে সারাদেশে আজ হরতাল চলছে।

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রিটের শুনানির জন্য ২৭ মার্চ দিন ধার্য করা হয়েছিল। তবে কার্যতালিকা অনুসারে ২৭ মার্চ নয়, পরদিন সোমবার আবেদনটির শুনানি হলো।

এর আগে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি শুনানির জন্য ২৭ মার্চ দিন ধার্য করেন আদালত একই সঙ্গে এই মামলায় আইনি সহায়তাকারী হিসেবে ১৪ অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়। ওই দিন আদালতে ড. কামাল হোসেন ও আইনজীবী জগলুল হায়দার আফ্রিক ছিলেন।

এর আগে সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনকালে কার্যত বিরোধী দলবিহীন চতুর্থ জাতীয় সংসদে ১৯৮৮ সালের ৫ জুন সংবিধানের অষ্টম সংশোধনী অনুমোদন হয়।

এর মাধ্যমে সংবিধানে অনুচ্ছেদ ২-এর পর ২ (ক) যুক্ত হয়। ২ (ক)-তে বলা হয়, ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম হবে ইসলাম, তবে অন্যান্য ধর্মও প্রজাতন্ত্রে শান্তিতে পালন করা যাইবে’।

ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হিসেবে ১৯৭১ সালে যাত্রা শুরু করা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মূলনীতিতে এ পরিবর্তনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তখনই ‘স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটির’পক্ষে সাবেক প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেন, কবি সুফিয়া কামাল, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীসহ ১৫ বিশিষ্ট নাগরিক হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।

রিট আবেদনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে নানা ধর্মবিশ্বাসের মানুষ বাস করে। এটি সংবিধানের মূল স্তম্ভে বলা হয়েছে। এখানে রাষ্ট্রধর্ম করে অন্যান্য ধর্মকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এটি বাংলাদেশের অভিন্ন জাতীয় চরিত্রের প্রতি ধ্বংসাত্মক।’

তার ২৩ বছর পর রিট আবেদনকারী পক্ষ ২০১১ সালের ৮ জুন একটি সম্পূরক আবেদন করে। তার প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সেদিনই বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের তৎকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল দিয়েছিলেন। রুলে সংবিধানের ওই সংশোধনীর মাধ্যমে ২ (ক) অন্তর্ভুক্তি কেন অসাংবিধানিক ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

জাতীয় সংসদের স্পিকার এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর রিট আবেদনকারীদের অপর একটি আবেদনে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টে বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করে দেন। পরে ওই রুল শুনানির জন্য আদালতের নজরে নেওয়া হলে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের বৃহত্তর এ বেঞ্চ ২৭ মার্চ দিন ধার্য করেছিলেন। তবে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইট অনুযায়ী সোমবার এ শুনানি হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামই থাকছে

আপডেট টাইম : ১১:৫৮:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ মার্চ ২০১৬

সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলে দায়ের করা রিট খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামই থাকছে।

সোমবার দুপুর ২টায় শুরু হওয়া এ রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি নাইমা হায়দারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ এ আদেশ দেন। অন্য দুই সদস্য বিচারপতি হলেন- বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল।

এর আগে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের শুনানির দিন ধার্য হওয়ার পর থেকে আবারও সংগঠিত হচ্ছিল মৌলবাদী হেফাজতে ইসলামসহ ইসলামী দল ও সংগঠনগুলো। এরই মধ্যে তারা একাধিক কর্মসূচিও দিয়েছে। আর জামায়াতে ইসলামীর ডাকে সারাদেশে আজ হরতাল চলছে।

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রিটের শুনানির জন্য ২৭ মার্চ দিন ধার্য করা হয়েছিল। তবে কার্যতালিকা অনুসারে ২৭ মার্চ নয়, পরদিন সোমবার আবেদনটির শুনানি হলো।

এর আগে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি শুনানির জন্য ২৭ মার্চ দিন ধার্য করেন আদালত একই সঙ্গে এই মামলায় আইনি সহায়তাকারী হিসেবে ১৪ অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়। ওই দিন আদালতে ড. কামাল হোসেন ও আইনজীবী জগলুল হায়দার আফ্রিক ছিলেন।

এর আগে সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনকালে কার্যত বিরোধী দলবিহীন চতুর্থ জাতীয় সংসদে ১৯৮৮ সালের ৫ জুন সংবিধানের অষ্টম সংশোধনী অনুমোদন হয়।

এর মাধ্যমে সংবিধানে অনুচ্ছেদ ২-এর পর ২ (ক) যুক্ত হয়। ২ (ক)-তে বলা হয়, ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম হবে ইসলাম, তবে অন্যান্য ধর্মও প্রজাতন্ত্রে শান্তিতে পালন করা যাইবে’।

ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হিসেবে ১৯৭১ সালে যাত্রা শুরু করা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মূলনীতিতে এ পরিবর্তনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তখনই ‘স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটির’পক্ষে সাবেক প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেন, কবি সুফিয়া কামাল, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীসহ ১৫ বিশিষ্ট নাগরিক হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।

রিট আবেদনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে নানা ধর্মবিশ্বাসের মানুষ বাস করে। এটি সংবিধানের মূল স্তম্ভে বলা হয়েছে। এখানে রাষ্ট্রধর্ম করে অন্যান্য ধর্মকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এটি বাংলাদেশের অভিন্ন জাতীয় চরিত্রের প্রতি ধ্বংসাত্মক।’

তার ২৩ বছর পর রিট আবেদনকারী পক্ষ ২০১১ সালের ৮ জুন একটি সম্পূরক আবেদন করে। তার প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সেদিনই বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের তৎকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল দিয়েছিলেন। রুলে সংবিধানের ওই সংশোধনীর মাধ্যমে ২ (ক) অন্তর্ভুক্তি কেন অসাংবিধানিক ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

জাতীয় সংসদের স্পিকার এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর রিট আবেদনকারীদের অপর একটি আবেদনে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টে বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করে দেন। পরে ওই রুল শুনানির জন্য আদালতের নজরে নেওয়া হলে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের বৃহত্তর এ বেঞ্চ ২৭ মার্চ দিন ধার্য করেছিলেন। তবে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইট অনুযায়ী সোমবার এ শুনানি হবে।