বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমানের বিদায়টা হৃদয়বিদারক। বিদায়বেলায় চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিদায়ী গভর্নর ড. আতিউরের পদত্যাগপত্র গ্রহণের সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী।
সে আবেগের সময়ের কথা জানিয়ে ড. আতিউর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমার পদত্যাগপত্র নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আপনি অনেক সাহসী মানুষ। সাহসী বলেই পদত্যাগ করতে পারছেন। আপনিই আমাদের অর্থনীতিকে একটা স্থিতিশীল অবস্থানে এনেছেন।
পদত্যাগপত্র নেয়ার সময় অশ্রুসিক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এর চেয়ে বেশি আর কী চাওয়ার আছে জীবনে! আবেগ তাড়িত হন কৃষক বাবার ছেলে ড. আতিউর যাকে সংসারের প্রয়োজনে রাখাল বালকের মতো মাঠে গরু চরাতে হয়েছে,
যাকে ক্যাডেট কলেজে ভর্তির সময় গ্রামের হাটে ভিক্ষার মতো চাঁদা তুলতে হয়েছে। সেই টাকায় ক্যাডেট কলেজে শিক্ষার আলো পেয়েছেন তিনি।
দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা ড. আতিউর রহমান সবসময় ভেবেছেন সাধারণ মানুষদের নিয়ে। চেয়েছেন এ দেশের সাধারণ মানুষের ভাগ্যবদল করার। নিজের সন্তানের মত বাংলাদেশ ব্যাংককে গড়ে তুলেছেন তিনি।
পদত্যাগের পর সাংবাদিকদের ড. আতিউর রহমান বলেন, দরিদ্র একটি পরিবার থেকে উঠে এসেছি। সেই জায়গা থেকে ধীরে ধীরে আজকের জায়গায়। আমি চেষ্টা করি সাধারণ মানুষকে নিয়ে, যাদের দিকে কেউ কখনো তাকায় না, তাদের কাছে কীভাবে টাকা নিয়ে যাওয়া যায়, সেই চেষ্টায় করেছি।
বিদায়ী গভর্নর সাংবাদিকদের বলেন, আমি সবসময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী। তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সব নির্দেশ ও উপদেশ আমি মেনে চলি। আমি বঙ্গবন্ধুর প্রতি খুবই কৃতজ্ঞ। তিনি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছিলেন বলেই বাংলাদেশ ব্যাংক হয়েছে, আমি এর গভর্নর হতে পেরেছি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু, তার সুযোগ্য কন্যা এবং এদেশের সাধারণ মানুষের প্রতিই আমার নিরঙ্কুশ আনুগত্য। ব্যাংক এবং ব্যাংকিংকে সেই সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। আমি যখন চলে যাচ্ছি তখন তিন কোটি নতুন মানুষ ব্যাংকিং সেবার অধীনে। সাড়ে ছয় কোটি ডলার থেকে রিজার্ভ ২৮ কোটি বিলিয়ন ডলার। আমার পদত্যাগে বঙ্গবন্ধু কন্যা অশ্রুসিক্ত। এর চেয়ে তৃপ্তির আর কী হতে পারে!