গত বিশ্বকাপের সেই হতাশার কথা আজো ভুলতে পারেনি বাংলাদেশের মানুষ। ইংল্যান্ডকে বিদায় করে কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু আম্পায়ারদের কয়েকটি বিতর্কিত সিদ্ধান্তের শিকার হয়ে শেষ চারে খেলার স্বপ্নপূরণ হয়নি মাশরাফির দলের। বিশ্বকাপের পর ভারতকে ওয়ানডে সিরিজে হারালেও সেই জ্বালা যেন পুরোপুরি জুড়ায়নি। এশিয়া কাপের ফাইনালে বাংলাদেশের সামনে আবার ‘টিম ইন্ডিয়া’। এবার কি প্রতিশোধের শতভাগ লক্ষ্যপূরণ হবে? অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা অবশ্য ‘প্রতিশোধ’ শব্দটা মনে আনতেই চাইছেন না।
শুধু ক্রিকেটার হিসেবেই বড় নন, মানুষ হিসেবেও বিশাল মনের অধিকারী মাশরাফি। পাকিস্তানের ব্যাটিং কোচ ও জিম্বাবুয়ের সাবেক তারকা ব্যাটসম্যান গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ার তো তাঁকে ‘সিংহ-হৃদয়ের মানুষ’ বলেই অভিহিত করেছেন। বিনয়ী মাশরাফির কাছে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল, গত বছরের মার্চে মেলবোর্নের সেই হারের প্রতিশোধ নিয়ে তিনি ভাবছেন কি না। ক্রিকেট ওয়েবসাইট বিডিক্রিকটিম ডটকমের এই প্রশ্ন একদম তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’, ‘আমি কোনোরকম প্রতিশোধ-তত্ত্বে বিশ্বাসী নই। আমার কোনো দলকে আঘাত করার প্রয়োজন নেই। অবশ্যই আমি জিততে চাই। কিন্তু সে জন্য কেন অন্যকে আঘাত করতে যাব? আমি মনে করি না, দলকে অনুপ্রাণিত করতে এমন দৃষ্টিভঙ্গির দরকার আছে। এতদিনে আমরা মেলবোর্নের ম্যাচটির কথা ভুলেই গেছি। আমরা এখন শুধু সামনের দিকে তাকিয়ে।’
আপাতত ‘সামনে’ মানে রোববারের ফাইনাল। মিরপুর স্টেডিয়ামে যে ম্যাচ জিতলেই প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের শিরোপা-উৎসবে মেতে উঠবে বাংলাদেশের মানুষ। ভোলা যাবে চার বছর আগে দুই রানে হেরে শিরোপা হাতছাড়া হওয়ার দুঃখ। ‘মহারণে’র আগে মাশরাফি অবশ্য আবেগকে একপাশে সরিয়ে রেখে যথেষ্ট বাস্তববাদী। ফাইনালে ধোনির দলকেই এগিয়ে রাখছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘ভারত পরিষ্কার ফেভারিট। এতে কোনো সন্দেহই নেই। এটা হতে যাচ্ছে র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বরের সঙ্গে দশ নম্বর দলের লড়াই। যদিও আমরা ওদের সঙ্গে ভালো লড়াই করার ব্যাপারে প্রত্যয়ী।’
ফাইনালের আগে একটা হতাশা লুকিয়ে রাখতে পারছেন না মাশরাফি। চোটের কারণে প্রতিভাবান পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে হারিয়ে ভীষণ হতাশ বাংলাদেশের ক্রিকেটকে বদলে দেওয়ার স্থপতি, ‘আমরা মুস্তাফিজের অনুপস্থিতি অনুভব করবই। বুধবারের ম্যাচে সে থাকলে পাকিস্তান হয়তো ১০০ রানও করতে পারত না। ফাইনালে সে আমাদের জন্য বড় সম্পদ হতে পারত। তবে এখন তো আর কিছু করার নেই। আমরা অবশ্য হাল ছেড়ে দিচ্ছি না।’