ঢাকা ০৬:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

অসময়ে বাঁধাকপি চাষে লাখপতি মিজানুর!

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:১৮:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুন ২০২১
  • ১৪৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশের কৃষকের কাছে বাঁধাকপি শীতকালীন সবজি হিসেবে পরিচিত। প্রতিবছর শীতকালে কপি জাতীয় ফসলের চাষাবাদে অভ্যস্ত আমাদের দেশের কৃষক।
তবে, বর্তমান সময়ে কৃষিক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। আমাদের দেশের কৃষক এখন আধুনিক চাষ পদ্ধতি অবলম্বন করে একই জমিতে বছরজুড়েই চাষাবাদ করেন। এমনকি, আলাদা-আলাদা রাসায়নিক সারের পরিবর্তে মিশ্র সার ব্যবহার করে নজিরবিহীন উৎপাদনের রেকর্ড গড়ছে কৃষক।
এমনই একজন কৃষক কেশবপুর উপজেলার হাসানপুর ইউনিয়নের রেজাকাঠি গ্রামের সোলাইমান সরদারের ছেলে মিজানুর রহমান। কৃষকের ঘরে জন্ম নেওয়া মিজানুর ছোট বেলা থেকেই বাবার সঙ্গে মাঠে চাষাবাদ করেন। তবে, অসময়ে যেকোনো ফসলের ভালো দাম পাওয়া চাই এমন চিন্তা থেকে গতবছর অসময়ে বাঁধাকপি চাষের উদ্যোগ নেন তিনি।

এ সময় তার চাষ দেখে ওই গ্রামের আরও দুইজন চাষ করেন। তবে, বিধিবাম! অতিবৃষ্টিতে পুরো চাষ নষ্ট হয়ে যায়। এতেও হাল ছাড়েননি মিজানুর। ঠিক, চলতি বছর আবারও একই পদ্ধতিতে অসময়ে বাঁধাকপি চাষের উদ্যোগ নেন। তবে, গতবছর বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিবেশি সেই দুই কৃষক এবার আর বাঁধাকপি চাষে মিজানুর রহমানকে নিরুৎসায়িত করেন। তবে, থামেনি তার উদ্যোগ!

সফল হবেনই এ প্রত্যয় নিয়ে চলতি বছরের চৈত্র মাসে আবারও বাঁধাকপির বীজতলা তৈরি করে বীজ লাগান। ওই বীজতলায় চারা গজালে বৈশাখের শুরুতে ওই চারা ২৮ শতক জমিতে লাগান।

এরপর পরিচর্চা-সার-বীজ ও শ্রমিক বাবদ প্রায় ২৫ হাজার টাকা ব্যয় করে আড়াই মাসের ব্যাবধানে প্রতিটি বাঁধাকপি ৫০০-৬০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়। এখন পাইকারা মিজানুর রহমানের ক্ষেতের বাঁধাকপি ৪০ টাকা দরে কিনে ঢাকা-চট্টগ্রামে সরবরাহ করছেন। তবে, এ বছর টানা বৃষ্টিতে কিছুটা ক্ষতি হলেও লাখপতি হতে চলেছেন কৃষক মিজানুর রহমান।

স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ ধরনের শাক-সবজি চাষাবাদে আলাদা আলাদা রাসায়নিক সার কিনে প্রয়োগের প্রথা থেকে বেরিয়ে ‘বেঙ্গল মিশ্র’ সার ব্যবহার করে অভাবনীয় ফলন পাচ্ছে। এতে চাষাবাদে খরচ কমানোর পাশাপাশি তুলনামূলক ফসলের পোকা-ভাইরাসজনিত সমস্যা কম হচ্ছে। ফসলের চেহারা সুন্দর হওয়ায় ভালো দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছে কৃষক।

কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, আসলে অসময়ে যেকোনো ফসল উৎপাদন করা গেলে ভালো দামে বিক্রি করে লাভবান হওয়া যায়। আগামীতে আরও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে অসময়ে ফসল ফলানোর স্বপ্ন দেখছেন তিনি।

সবমিলিয়ে ২৫ হাজার টাকা খরচ হলেও প্রায় এক লাখ টাকার বাঁধাকপি বেচাকেনা হবে বলে ধারণা করছেন ওই কৃষক।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে একসাথে সাকিব-তামিম

অসময়ে বাঁধাকপি চাষে লাখপতি মিজানুর!

আপডেট টাইম : ১০:১৮:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুন ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশের কৃষকের কাছে বাঁধাকপি শীতকালীন সবজি হিসেবে পরিচিত। প্রতিবছর শীতকালে কপি জাতীয় ফসলের চাষাবাদে অভ্যস্ত আমাদের দেশের কৃষক।
তবে, বর্তমান সময়ে কৃষিক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। আমাদের দেশের কৃষক এখন আধুনিক চাষ পদ্ধতি অবলম্বন করে একই জমিতে বছরজুড়েই চাষাবাদ করেন। এমনকি, আলাদা-আলাদা রাসায়নিক সারের পরিবর্তে মিশ্র সার ব্যবহার করে নজিরবিহীন উৎপাদনের রেকর্ড গড়ছে কৃষক।
এমনই একজন কৃষক কেশবপুর উপজেলার হাসানপুর ইউনিয়নের রেজাকাঠি গ্রামের সোলাইমান সরদারের ছেলে মিজানুর রহমান। কৃষকের ঘরে জন্ম নেওয়া মিজানুর ছোট বেলা থেকেই বাবার সঙ্গে মাঠে চাষাবাদ করেন। তবে, অসময়ে যেকোনো ফসলের ভালো দাম পাওয়া চাই এমন চিন্তা থেকে গতবছর অসময়ে বাঁধাকপি চাষের উদ্যোগ নেন তিনি।

এ সময় তার চাষ দেখে ওই গ্রামের আরও দুইজন চাষ করেন। তবে, বিধিবাম! অতিবৃষ্টিতে পুরো চাষ নষ্ট হয়ে যায়। এতেও হাল ছাড়েননি মিজানুর। ঠিক, চলতি বছর আবারও একই পদ্ধতিতে অসময়ে বাঁধাকপি চাষের উদ্যোগ নেন। তবে, গতবছর বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিবেশি সেই দুই কৃষক এবার আর বাঁধাকপি চাষে মিজানুর রহমানকে নিরুৎসায়িত করেন। তবে, থামেনি তার উদ্যোগ!

সফল হবেনই এ প্রত্যয় নিয়ে চলতি বছরের চৈত্র মাসে আবারও বাঁধাকপির বীজতলা তৈরি করে বীজ লাগান। ওই বীজতলায় চারা গজালে বৈশাখের শুরুতে ওই চারা ২৮ শতক জমিতে লাগান।

এরপর পরিচর্চা-সার-বীজ ও শ্রমিক বাবদ প্রায় ২৫ হাজার টাকা ব্যয় করে আড়াই মাসের ব্যাবধানে প্রতিটি বাঁধাকপি ৫০০-৬০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়। এখন পাইকারা মিজানুর রহমানের ক্ষেতের বাঁধাকপি ৪০ টাকা দরে কিনে ঢাকা-চট্টগ্রামে সরবরাহ করছেন। তবে, এ বছর টানা বৃষ্টিতে কিছুটা ক্ষতি হলেও লাখপতি হতে চলেছেন কৃষক মিজানুর রহমান।

স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ ধরনের শাক-সবজি চাষাবাদে আলাদা আলাদা রাসায়নিক সার কিনে প্রয়োগের প্রথা থেকে বেরিয়ে ‘বেঙ্গল মিশ্র’ সার ব্যবহার করে অভাবনীয় ফলন পাচ্ছে। এতে চাষাবাদে খরচ কমানোর পাশাপাশি তুলনামূলক ফসলের পোকা-ভাইরাসজনিত সমস্যা কম হচ্ছে। ফসলের চেহারা সুন্দর হওয়ায় ভালো দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছে কৃষক।

কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, আসলে অসময়ে যেকোনো ফসল উৎপাদন করা গেলে ভালো দামে বিক্রি করে লাভবান হওয়া যায়। আগামীতে আরও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে অসময়ে ফসল ফলানোর স্বপ্ন দেখছেন তিনি।

সবমিলিয়ে ২৫ হাজার টাকা খরচ হলেও প্রায় এক লাখ টাকার বাঁধাকপি বেচাকেনা হবে বলে ধারণা করছেন ওই কৃষক।