ঢাকা ০৯:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দালান ঘরে থাকব পারবো ভাবিনি, শেখের বেটির জন্য থাকতে পারছি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৫৯:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুন ২০২১
  • ১৩১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দিগন্ত জুড়ে সবুজ প্রকৃতির মাঝে উঁকি দিচ্ছে সারি সারি সবুজ ঘর। গৃহ ও ভূমিহীনরা পেয়েছেন তাদের স্বপ্নের বাড়ী। পেয়েছেন বেঁচে থাকার স্বপ্ন। মুজিব বর্ষে কেউ-ই গৃহ ও ভূমিহীন থাকবে না, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ঘোষণার পর মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘর ও জমির দলিল পেয়ে খুশি জামালপুরের সরিষাবাড়ীর ৩২০টি গৃহ ও ভূমিহীন পরিবার।

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, সারাদেশের ন্যায় প্রথম পর্যায়ে এ উপজেলায় ২৯৫ টি ঘর বরাদ্ধ আসে। দ্বিতীয় পর্যায়ে আসে ২৫ টি ঘর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নে ৮৪টি, মহাদান ৩০টি, আওনা ১৬৭টি, ভাটারা ১১টি, ডোয়াইল ৯টি, কামরাবাদ ১০টি ও পৌরসভায় তৃতীয় লিঙ্গের জন্য বিশেষ বরাদ্ধ হিসেবে ৯টি পরিবারকে দেয়া হয়েছে দুই শতক জমিসহ একটি আধাপাকা ঘর। যেখানে ২টি শয়নকক্ষের পাশাপাশি, রয়েছে রান্নাঘর ও পয়ঃনিস্কাশনের ব্যবস্থা।

স্থানীয়দের সহযোগিতায় উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সার্বিক তদারকিতে সুষ্ঠভাবে যারা ঘর পাওয়ার উপযুক্ত তাদেরকে বাছাই করে এলাকা ভিত্তিক গুচ্ছ গ্রাম নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। ঘর নির্মাণ করা হলে সহায়-সম্বলহীন পরিবারগুলো নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছে। ঘর নির্মাণে অনিয়ম ঠেকাতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিহাব উদ্দিন আহমেদ সার্বক্ষণিক তদারকি করেছেন।

সরেজমিনে আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়নের দৃশ্য দেখতে উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের চর পোগলদিঘা গুচ্চ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সারি-সারি রঙ্গীন টিনের আধাপাঁকা ঘর। এসব প্রতিটি ঘরে রয়েছে বিদ্যুৎ এবং সুপেয় পানির জন্য টিউবওয়েলের ব্যবস্থা।

এক ব্যক্তি বলেন, আগে সরিষাবাড়ীতে ভাড়া বাসায় থাকতাম, আমি মানুষের বাড়ীতে ও ইট ভাঙ্গার কাজ করে সংসার চালাই। সরকার আমাকে ঘর দেওয়াতে আমি খুব খুশি।

অটোরিকশা চালক বলেন, আমি অটো চালাই, আমি কখনো ভাবিনি সরকার আমাকে ঘর বানাইয়া দিবো। এ ঘরটা হওয়াতে খুব উপকার হইছে, থাকা নিয়ে আর চিন্তা করা লাগবে না। এখন আমি আমার জমিতে, আমার নিজের ঘরে থাকি।

৯০ বছরের বৃদ্ধা তারা রাণী বলেন, আমি মেয়ে নিয়ে সরিষাবাড়ীতে ভাড়া বাসায় থাকতাম। আমার মেয়ে মানুষের বাড়ীতে কাজ করতো। আমি ভিক্ষে করতাম। সরকার আমাকে ঘড় দিবে বা আমি দালান ঘরে থাকবো এটা আমি স্বপ্নেও কোনদিন ভাবিনি। আমি ঘর পেয়ে খুব খুশি। শেখের বেটির জন্য দোয়া করি।

ঘর নির্মাণ প্রকল্পের সদস্য সচিব ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) হুমায়ুন কবির বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় উপকরণের সিমেন্ট, ইট-বালু, রড, কাঠ, টিন গুণগত শতভাগ মান বজায় রেখে কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে থাকা প্রতিটি পরিবারের সব সময় খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে। তাদের থাকার কোন অসুবিধা হলে তা তাৎক্ষনিক সমাধান করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

প্রকল্পের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিহাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিপন্ন মানুষের আশ্রয় ও আবাসন নিশ্চিত করা, ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল, অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন করার লক্ষেই আশ্রয়ণ কেন্দ্র গুলো তৈরি করা হয়েছে। এখানে থাকা প্রতিটি পরিবারকে ঋণ প্রদান ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহে সক্ষম করে তোলা এবং আয়বর্ধক কার্যক্রম সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণই আশ্রয়ণ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

দালান ঘরে থাকব পারবো ভাবিনি, শেখের বেটির জন্য থাকতে পারছি

আপডেট টাইম : ১১:৫৯:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুন ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দিগন্ত জুড়ে সবুজ প্রকৃতির মাঝে উঁকি দিচ্ছে সারি সারি সবুজ ঘর। গৃহ ও ভূমিহীনরা পেয়েছেন তাদের স্বপ্নের বাড়ী। পেয়েছেন বেঁচে থাকার স্বপ্ন। মুজিব বর্ষে কেউ-ই গৃহ ও ভূমিহীন থাকবে না, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ঘোষণার পর মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘর ও জমির দলিল পেয়ে খুশি জামালপুরের সরিষাবাড়ীর ৩২০টি গৃহ ও ভূমিহীন পরিবার।

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, সারাদেশের ন্যায় প্রথম পর্যায়ে এ উপজেলায় ২৯৫ টি ঘর বরাদ্ধ আসে। দ্বিতীয় পর্যায়ে আসে ২৫ টি ঘর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নে ৮৪টি, মহাদান ৩০টি, আওনা ১৬৭টি, ভাটারা ১১টি, ডোয়াইল ৯টি, কামরাবাদ ১০টি ও পৌরসভায় তৃতীয় লিঙ্গের জন্য বিশেষ বরাদ্ধ হিসেবে ৯টি পরিবারকে দেয়া হয়েছে দুই শতক জমিসহ একটি আধাপাকা ঘর। যেখানে ২টি শয়নকক্ষের পাশাপাশি, রয়েছে রান্নাঘর ও পয়ঃনিস্কাশনের ব্যবস্থা।

স্থানীয়দের সহযোগিতায় উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সার্বিক তদারকিতে সুষ্ঠভাবে যারা ঘর পাওয়ার উপযুক্ত তাদেরকে বাছাই করে এলাকা ভিত্তিক গুচ্ছ গ্রাম নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। ঘর নির্মাণ করা হলে সহায়-সম্বলহীন পরিবারগুলো নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছে। ঘর নির্মাণে অনিয়ম ঠেকাতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিহাব উদ্দিন আহমেদ সার্বক্ষণিক তদারকি করেছেন।

সরেজমিনে আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়নের দৃশ্য দেখতে উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের চর পোগলদিঘা গুচ্চ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সারি-সারি রঙ্গীন টিনের আধাপাঁকা ঘর। এসব প্রতিটি ঘরে রয়েছে বিদ্যুৎ এবং সুপেয় পানির জন্য টিউবওয়েলের ব্যবস্থা।

এক ব্যক্তি বলেন, আগে সরিষাবাড়ীতে ভাড়া বাসায় থাকতাম, আমি মানুষের বাড়ীতে ও ইট ভাঙ্গার কাজ করে সংসার চালাই। সরকার আমাকে ঘর দেওয়াতে আমি খুব খুশি।

অটোরিকশা চালক বলেন, আমি অটো চালাই, আমি কখনো ভাবিনি সরকার আমাকে ঘর বানাইয়া দিবো। এ ঘরটা হওয়াতে খুব উপকার হইছে, থাকা নিয়ে আর চিন্তা করা লাগবে না। এখন আমি আমার জমিতে, আমার নিজের ঘরে থাকি।

৯০ বছরের বৃদ্ধা তারা রাণী বলেন, আমি মেয়ে নিয়ে সরিষাবাড়ীতে ভাড়া বাসায় থাকতাম। আমার মেয়ে মানুষের বাড়ীতে কাজ করতো। আমি ভিক্ষে করতাম। সরকার আমাকে ঘড় দিবে বা আমি দালান ঘরে থাকবো এটা আমি স্বপ্নেও কোনদিন ভাবিনি। আমি ঘর পেয়ে খুব খুশি। শেখের বেটির জন্য দোয়া করি।

ঘর নির্মাণ প্রকল্পের সদস্য সচিব ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) হুমায়ুন কবির বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় উপকরণের সিমেন্ট, ইট-বালু, রড, কাঠ, টিন গুণগত শতভাগ মান বজায় রেখে কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে থাকা প্রতিটি পরিবারের সব সময় খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে। তাদের থাকার কোন অসুবিধা হলে তা তাৎক্ষনিক সমাধান করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

প্রকল্পের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিহাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিপন্ন মানুষের আশ্রয় ও আবাসন নিশ্চিত করা, ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল, অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন করার লক্ষেই আশ্রয়ণ কেন্দ্র গুলো তৈরি করা হয়েছে। এখানে থাকা প্রতিটি পরিবারকে ঋণ প্রদান ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহে সক্ষম করে তোলা এবং আয়বর্ধক কার্যক্রম সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণই আশ্রয়ণ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।