ঢাকা ০৮:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সবজি চাষে ঘুরল কৃষকের ভাগ্যের চাকা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:৩৩:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ নভেম্বর ২০২০
  • ১৯৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় শীতকালীন সবজি বাজার দখল করতে চাষ ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। অনেক কৃষক আগাম সবজি ক্ষেত থেকে বিক্রি করে আবারো জমিতে সবজি চাষ শুরু করেছেন।

আগাম জাতের সবজি উঠিয়ে এখন ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, লাল শাক, চমেটো, শিম, করলা, লাউসহ নানা প্রজাতির সবজি চাষ করছেন কৃষকরা।

শুধু শীত নয় সারা বছরই সবজির চাহিদা পূরণ করছেন এ উপজেলার কৃষকরা। ভোর থেকেই লোকজন ছুটে চলেন সবজি ক্ষেতে। নারী পুরুষসহ সব বয়সী লোকজন সবজি ক্ষেতে করছেন পরিচর্যা । আবার কেউ কেউ সবজি নিয়ে স্থানীয় বাজারে ও বিক্রি করছেন। পাশাপাশি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকায় এখানকার সবজি যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানেও।

সরেজমিনে পৌর শহরের তারাগন, দেবগ্রাম, নারায়নপুর, উপজেলার কালিনগর, সাতপাড়া, হীরাপুর, বাউতলা, উমেদপুর আজমপুর, চানপুর,বনগজ, কৃষ্ণনগর, খারকোট, মিনারকোটসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় গিয়ে দেখা যায় সবজি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।

সবজি চাষে বদলে দিয়েছে এখানকার শত শত কৃষকের ভাগ্যের চাকা। ফলন ভালো ও স্থানীয় বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে সবজির আবাদ। তবে ওইসব এলাকার বেশিরভাগ বার মাসই নানা প্রকার সবজি আবাদ করছেন। কেউ নিজেদের পতিত জমিতে, কেউ বাড়ির আঙ্গিনায়, পুকুর পাড়, আবার কেউ করছেন বাড়ির ছাদে।

সবজি ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক

সবজি ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক

একাধিক কৃষক জানান, নানা প্রতিকুলতা অপেক্ষা করে মৌসুম অনুযায়ী বছরের বেশির ভাগ সময় তারা সবজি আবাদ করছেন। ধানসহ অন্য ফসলের চাইতে সবজিতে ভালো আয় হওয়ায় বছর জুড়ে নানা প্রজাতির সবজি চাষ করছেন।

পৌর শহরের তারাগন এলাকায় সবজি চাষ করেন কৃষক মো. আমজাত খান। প্রায় ১৮০ শতক জায়গা এক বছরের জন্য ইজারা নিয়ে লাউ, করলা, তরমুজ, শসাসহ নানা প্রকার সবজি চাষ করেন। এ চাষে তার খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। কয়েক দফা বৃষ্টিতে সবজি ক্ষতি হলেও এরপর ফলন ভালো হয়েছে।   প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে খরচ বাদে আশা করছেন দেড় লাখ টাকা আয় হবে।

চাষি মো. আব্দুল মন্নান জানান, এ মৌসুমে দেশীয় পদ্ধতিতে ১৩০ শতক জমিতে শীতকালীন ফুলকপি, মুলা, লাল শাক, টমোটোসহ নানা জাতের সবজির আবাদ করা হয়েছে। ফুলকপি চারা লাগানো হয়েছে ৫ হাজার । এ চাষে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার টাকা। সবজি গাছের অবস্থা এখন পর্যন্ত খুবই ভালই রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে খরচ বাদে আশা করছেন এক লাখ টাকার বেশি আয় হবে।

সবজি ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক

সবজি ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক

কৃষক আব্দুল জলিল জানান, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এলাকায় সবজি চাষ করছেন। এখানকার মাটি  সবজি চাষের জন্য খুবই উর্বর। সেচ সুবিধা ভাল পানির কোনো অভাব নেই। এ বছর ৫০ শতক জমিতে শীতকালীন বাঁধাকপি লাউ, মুলা, লাল শাকসহ নানান সবজি আবাদ করা হয়। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সবজি বিক্রি করা যাবে। আশা করছেন গতবারের চাইতে এবার ভালো লাভবান হবেন।

আখাউড়া উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বছর জুড়ে নানা প্রকার সবজি আবাদ হচ্ছে। ফলন বৃদ্ধিতে সব সময় স্থানীয় কৃষকদেরকে পরামর্শ দেয়া হয়।

তিনি আরো বলেন, কয়েক দফা বৃষ্টি হওয়ায় কিছু ক্ষতি হলেও নিয়মিত পরিচর্যার কারণে সবজির ভালো ফলন হয়েছে। তাছাড়া স্থানীয় বাজারে দাম ভালো থাকায় সবজি চাষে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সবজি চাষে ঘুরল কৃষকের ভাগ্যের চাকা

আপডেট টাইম : ০৩:৩৩:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ নভেম্বর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় শীতকালীন সবজি বাজার দখল করতে চাষ ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। অনেক কৃষক আগাম সবজি ক্ষেত থেকে বিক্রি করে আবারো জমিতে সবজি চাষ শুরু করেছেন।

আগাম জাতের সবজি উঠিয়ে এখন ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, লাল শাক, চমেটো, শিম, করলা, লাউসহ নানা প্রজাতির সবজি চাষ করছেন কৃষকরা।

শুধু শীত নয় সারা বছরই সবজির চাহিদা পূরণ করছেন এ উপজেলার কৃষকরা। ভোর থেকেই লোকজন ছুটে চলেন সবজি ক্ষেতে। নারী পুরুষসহ সব বয়সী লোকজন সবজি ক্ষেতে করছেন পরিচর্যা । আবার কেউ কেউ সবজি নিয়ে স্থানীয় বাজারে ও বিক্রি করছেন। পাশাপাশি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকায় এখানকার সবজি যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানেও।

সরেজমিনে পৌর শহরের তারাগন, দেবগ্রাম, নারায়নপুর, উপজেলার কালিনগর, সাতপাড়া, হীরাপুর, বাউতলা, উমেদপুর আজমপুর, চানপুর,বনগজ, কৃষ্ণনগর, খারকোট, মিনারকোটসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় গিয়ে দেখা যায় সবজি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।

সবজি চাষে বদলে দিয়েছে এখানকার শত শত কৃষকের ভাগ্যের চাকা। ফলন ভালো ও স্থানীয় বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে সবজির আবাদ। তবে ওইসব এলাকার বেশিরভাগ বার মাসই নানা প্রকার সবজি আবাদ করছেন। কেউ নিজেদের পতিত জমিতে, কেউ বাড়ির আঙ্গিনায়, পুকুর পাড়, আবার কেউ করছেন বাড়ির ছাদে।

সবজি ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক

সবজি ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক

একাধিক কৃষক জানান, নানা প্রতিকুলতা অপেক্ষা করে মৌসুম অনুযায়ী বছরের বেশির ভাগ সময় তারা সবজি আবাদ করছেন। ধানসহ অন্য ফসলের চাইতে সবজিতে ভালো আয় হওয়ায় বছর জুড়ে নানা প্রজাতির সবজি চাষ করছেন।

পৌর শহরের তারাগন এলাকায় সবজি চাষ করেন কৃষক মো. আমজাত খান। প্রায় ১৮০ শতক জায়গা এক বছরের জন্য ইজারা নিয়ে লাউ, করলা, তরমুজ, শসাসহ নানা প্রকার সবজি চাষ করেন। এ চাষে তার খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। কয়েক দফা বৃষ্টিতে সবজি ক্ষতি হলেও এরপর ফলন ভালো হয়েছে।   প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে খরচ বাদে আশা করছেন দেড় লাখ টাকা আয় হবে।

চাষি মো. আব্দুল মন্নান জানান, এ মৌসুমে দেশীয় পদ্ধতিতে ১৩০ শতক জমিতে শীতকালীন ফুলকপি, মুলা, লাল শাক, টমোটোসহ নানা জাতের সবজির আবাদ করা হয়েছে। ফুলকপি চারা লাগানো হয়েছে ৫ হাজার । এ চাষে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার টাকা। সবজি গাছের অবস্থা এখন পর্যন্ত খুবই ভালই রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে খরচ বাদে আশা করছেন এক লাখ টাকার বেশি আয় হবে।

সবজি ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক

সবজি ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক

কৃষক আব্দুল জলিল জানান, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এলাকায় সবজি চাষ করছেন। এখানকার মাটি  সবজি চাষের জন্য খুবই উর্বর। সেচ সুবিধা ভাল পানির কোনো অভাব নেই। এ বছর ৫০ শতক জমিতে শীতকালীন বাঁধাকপি লাউ, মুলা, লাল শাকসহ নানান সবজি আবাদ করা হয়। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সবজি বিক্রি করা যাবে। আশা করছেন গতবারের চাইতে এবার ভালো লাভবান হবেন।

আখাউড়া উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বছর জুড়ে নানা প্রকার সবজি আবাদ হচ্ছে। ফলন বৃদ্ধিতে সব সময় স্থানীয় কৃষকদেরকে পরামর্শ দেয়া হয়।

তিনি আরো বলেন, কয়েক দফা বৃষ্টি হওয়ায় কিছু ক্ষতি হলেও নিয়মিত পরিচর্যার কারণে সবজির ভালো ফলন হয়েছে। তাছাড়া স্থানীয় বাজারে দাম ভালো থাকায় সবজি চাষে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ।