ঢাকা ০৮:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর ৪ প্রস্তাব

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৩০:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অক্টোবর ২০২০
  • ১৭৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে পৃথিবীকে রক্ষায় জাতিসংঘে চার প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (০১ অক্টোবর) সকালে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদের ৭৫তম অধিবেশনের সাইডলাইনে ভার্চুয়াল জীববৈচিত্র্য সম্মেলনে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
প্রথম প্রস্তাবে তিনি বলেন, ‘পৃথিবী এবং আমাদেরকে রক্ষার জন্য বিনিয়োগের সময় আমদের টেকসই ভবিষ্যতের প্রতি মনযোগী হতে হবে।’

দ্বিতীয় প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষা ব্যবস্থা ও গবেষণার মাধ্যমে জনগণের মধ্যে বৃহত্তর গণসচেতনতা সৃষ্টি এবং এবং জাতীয় পর্যায়ে আইন-কানুন জোরদার করা এবং নিরীক্ষণ প্রক্রিয়া জীববৈচিত্র্য রক্ষার মূল পদক্ষেপ।’

‘জেনেটিক রিসোর্স এবং ঐতিহ্যবাহী জ্ঞানের প্রকৃত মালিকদের জন্য বিশ্বব্যাপী সুফল বাটোয়ারায় প্রবেশাধিকার অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে,’ তিনি তৃতীয় প্রস্তাবে এ কথা উল্লেখ করেন।

চতুর্থ প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্যারিসের (সনদ) লক্ষ্য অর্জন আমাদের বিলুপ্তি এবং টিকে থাকার মধ্যে পার্থক্য তৈরি করতে পারে। আমাদের অবশ্যই সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।’

 টেকসই উন্নয়নের জন্য জীববৈচিত্র্য রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপের বিষয়ে বাংলাদেশ ‘সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা একটি আন্তঃনির্ভরশীল বিশ্বে বাস করি। যেখানে পৃথিবী গ্রহের প্রতিটি প্রজাতি আমাদের বাস্তুসংস্থানে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।’

ডব্লিউডব্লিউএফ এবং লন্ডন জিওলজিক্যাল সোসাইটির তথ্য মতে, ১৯৭০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বিশ্বের বন্য প্রাণীর সংখ্যা গড়ে ৬৮ শতাংশ কমেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশ মিঠা পানির ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মিঠা পানির জীববৈচিত্র্য বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুত হারে হ্রাস পাচ্ছে, বৈশ্বিক জলাভূমির ৮৫ শতাংশ ইতিমধ্যে শিল্প বিপ্লবের পরে হারিয়ে গেছে।’

 শেখ হানা বলেন, ‘১৯৭০ সাল থেকে মিঠা পানির স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি, উভচর, সরীসৃপ ও মাছের সংখ্যা প্রতি বছর গড়ে ৪ শতাংশ হারে হ্রাস পেয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জলবায়ু পরিবর্তন ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষয়ক্ষতি আশঙ্কাজনকভাবে বাড়িয়ে তুলছি এবং ফলস্বরূপ, কোভিড-১৯ এর মতো রোগের ঝুঁকি বেড়ে গেছে। বর্তমান ক্রিয়াকলাপ অব্যাহত রাখা হলে আমরা কেবল অন্যান্য প্রজাতির বিলুপ্তির কারণই হচ্ছি না, মূলত আমরা মানবজাতিরও চূড়ান্ত বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সংবিধানে রাষ্ট্রের মৌলিক নীতি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালের প্রথম দিকেই বন্য প্রাণি সংরক্ষণের আদেশ কার্যকর করেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জৈববৈচিত্র্য সম্পর্কিত কনভেনশন বাস্তবায়নের জন্য আইন-প্রণয়নকারী অল্প কয়েকটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। আমাদের সংসদ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বায়োলজিকাল ডাইভারসিটি অ্যাক্ট ২০১৭ পাস করেছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সরকার দেশের মোট স্থলভাগের ৫ শতাংশেরও বেশি এবং সামুদ্রিক জলভাগের প্রায় ৫ শতাংশ অঞ্চলকে সংরক্ষিত ও পরিবেশগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল ঘোষণা করেছে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর ৪ প্রস্তাব

আপডেট টাইম : ০৯:৩০:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অক্টোবর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে পৃথিবীকে রক্ষায় জাতিসংঘে চার প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (০১ অক্টোবর) সকালে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদের ৭৫তম অধিবেশনের সাইডলাইনে ভার্চুয়াল জীববৈচিত্র্য সম্মেলনে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
প্রথম প্রস্তাবে তিনি বলেন, ‘পৃথিবী এবং আমাদেরকে রক্ষার জন্য বিনিয়োগের সময় আমদের টেকসই ভবিষ্যতের প্রতি মনযোগী হতে হবে।’

দ্বিতীয় প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষা ব্যবস্থা ও গবেষণার মাধ্যমে জনগণের মধ্যে বৃহত্তর গণসচেতনতা সৃষ্টি এবং এবং জাতীয় পর্যায়ে আইন-কানুন জোরদার করা এবং নিরীক্ষণ প্রক্রিয়া জীববৈচিত্র্য রক্ষার মূল পদক্ষেপ।’

‘জেনেটিক রিসোর্স এবং ঐতিহ্যবাহী জ্ঞানের প্রকৃত মালিকদের জন্য বিশ্বব্যাপী সুফল বাটোয়ারায় প্রবেশাধিকার অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে,’ তিনি তৃতীয় প্রস্তাবে এ কথা উল্লেখ করেন।

চতুর্থ প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্যারিসের (সনদ) লক্ষ্য অর্জন আমাদের বিলুপ্তি এবং টিকে থাকার মধ্যে পার্থক্য তৈরি করতে পারে। আমাদের অবশ্যই সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।’

 টেকসই উন্নয়নের জন্য জীববৈচিত্র্য রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপের বিষয়ে বাংলাদেশ ‘সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা একটি আন্তঃনির্ভরশীল বিশ্বে বাস করি। যেখানে পৃথিবী গ্রহের প্রতিটি প্রজাতি আমাদের বাস্তুসংস্থানে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।’

ডব্লিউডব্লিউএফ এবং লন্ডন জিওলজিক্যাল সোসাইটির তথ্য মতে, ১৯৭০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বিশ্বের বন্য প্রাণীর সংখ্যা গড়ে ৬৮ শতাংশ কমেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশ মিঠা পানির ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মিঠা পানির জীববৈচিত্র্য বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুত হারে হ্রাস পাচ্ছে, বৈশ্বিক জলাভূমির ৮৫ শতাংশ ইতিমধ্যে শিল্প বিপ্লবের পরে হারিয়ে গেছে।’

 শেখ হানা বলেন, ‘১৯৭০ সাল থেকে মিঠা পানির স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি, উভচর, সরীসৃপ ও মাছের সংখ্যা প্রতি বছর গড়ে ৪ শতাংশ হারে হ্রাস পেয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জলবায়ু পরিবর্তন ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষয়ক্ষতি আশঙ্কাজনকভাবে বাড়িয়ে তুলছি এবং ফলস্বরূপ, কোভিড-১৯ এর মতো রোগের ঝুঁকি বেড়ে গেছে। বর্তমান ক্রিয়াকলাপ অব্যাহত রাখা হলে আমরা কেবল অন্যান্য প্রজাতির বিলুপ্তির কারণই হচ্ছি না, মূলত আমরা মানবজাতিরও চূড়ান্ত বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সংবিধানে রাষ্ট্রের মৌলিক নীতি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালের প্রথম দিকেই বন্য প্রাণি সংরক্ষণের আদেশ কার্যকর করেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জৈববৈচিত্র্য সম্পর্কিত কনভেনশন বাস্তবায়নের জন্য আইন-প্রণয়নকারী অল্প কয়েকটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। আমাদের সংসদ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বায়োলজিকাল ডাইভারসিটি অ্যাক্ট ২০১৭ পাস করেছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সরকার দেশের মোট স্থলভাগের ৫ শতাংশেরও বেশি এবং সামুদ্রিক জলভাগের প্রায় ৫ শতাংশ অঞ্চলকে সংরক্ষিত ও পরিবেশগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল ঘোষণা করেছে।’