ঢাকা ০২:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যশোরে ভেজাল সারে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২৫:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • ২০৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চলতি আমন মৌসুমে যশোরে ভেজাল সার তৈরি ও বিপণন আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের আর্থিক সুবিধা দিয়ে ম্যানেজ করে ভেজাল সারের কারবার চালিয়ে যাচ্ছে কিছু অসাধু ব্যক্তি।

এ চক্রের সদস্যরা দেশি-বিদেশি নামি-দামি কোম্পানির নকল প্যাকেটে ভেজাল সার ভরে বড় বড় দোকানে বিক্রি করে থাকে। যশোর সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা ডজনখানেক কারখানায় উৎপাদিত হচ্ছে ভেজাল দস্তা, জিংক, টিএসপি ও এমপি সার। এসব সার ব্যবহার করে কাঙ্ক্ষিত ফসল পাচ্ছেন না কৃষকরা।

এদিকে, ভেজালবিরোধী অভিযান চালিয়ে গত পাঁচ বছরে এসব কারখানার কয়েকটি সিলগালা করা হয়। কিছু কারখানার নিবন্ধন নবায়নের অনুমতি দেওয়া না হলেও থেমে থাকেনি ভেজাল সার উৎপাদন। ছাই, পচা শেওলা, পাথরের কুচি, পোড়া মাটি, জিপসাম, হাওর অঞ্চলের শামুকের কুচি, পাথর কুচির সাথে রং দিয়ে বানানো হয় সার। রাতের আঁধারে ও দিনের সুবিধাজনক সময়ে নানা কৌশলে মহিলা-পুরুষ শ্রমিক দিয়ে ভেজাল দস্তা সার উৎপাদন করা হচ্ছে। পরে এসব সার শিল্পনগর নওয়াপাড়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলের সারের দোকানে সববরাহ করা হয়।

অভিযোগ উঠেছে, সার ব্যবস্থাপনা আইন, ২০০৬ অনুযায়ী যিনি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, তিনিই সার উৎপাদন কার্যক্রম দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। নির্বাহী হাকিম ও পুলিশের সহায়তা নিয়ে ভেজালবিরোধী অভিযান চালানোর দায়িত্ব তারই ওপর ন্যস্ত। তবে, অজ্ঞাত কারণে গত কয়েক বছরে উপজেলার সার কারখানাগুলোতে তেমন অভিযান চালানো হয়নি।

কৃষকদের অভিযোগ, ভেজাল ও মানহীন সার ব্যবহার করায় ফসল উৎপাদন কমেছে। এতে তারা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

অবিলম্বে ভেজাল ও মানহীন সার উৎপাদন বন্ধ এবং উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কৃষিমন্ত্রী ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন কৃষকরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সার উৎপাদনকারী এ প্রতিবেদকে বলেন, ‘প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই আমরা এ ব্যবসা করে থাকি।’

যশোর সদর উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘যশোরে আমি যোগ দিয়েছি ১৫ দিন আগে। আমার কাছে ভেজাল সারের কারবারিদের তথ্য নেই। সাংবাদিকরা এ ব্যাপারে আমাকে সহযোগিতা করলে আমি উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে অবশ্যই ভেজাল সার কারবারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যস্থা গ্রহন করব। যারা ভেজাল সারের ব্যবসা করে কৃষিকে ক্ষতি করছে তাদেও কোনোভাবেই রক্ষা করা হবে না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

যশোরে ভেজাল সারে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক

আপডেট টাইম : ১১:২৫:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চলতি আমন মৌসুমে যশোরে ভেজাল সার তৈরি ও বিপণন আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের আর্থিক সুবিধা দিয়ে ম্যানেজ করে ভেজাল সারের কারবার চালিয়ে যাচ্ছে কিছু অসাধু ব্যক্তি।

এ চক্রের সদস্যরা দেশি-বিদেশি নামি-দামি কোম্পানির নকল প্যাকেটে ভেজাল সার ভরে বড় বড় দোকানে বিক্রি করে থাকে। যশোর সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা ডজনখানেক কারখানায় উৎপাদিত হচ্ছে ভেজাল দস্তা, জিংক, টিএসপি ও এমপি সার। এসব সার ব্যবহার করে কাঙ্ক্ষিত ফসল পাচ্ছেন না কৃষকরা।

এদিকে, ভেজালবিরোধী অভিযান চালিয়ে গত পাঁচ বছরে এসব কারখানার কয়েকটি সিলগালা করা হয়। কিছু কারখানার নিবন্ধন নবায়নের অনুমতি দেওয়া না হলেও থেমে থাকেনি ভেজাল সার উৎপাদন। ছাই, পচা শেওলা, পাথরের কুচি, পোড়া মাটি, জিপসাম, হাওর অঞ্চলের শামুকের কুচি, পাথর কুচির সাথে রং দিয়ে বানানো হয় সার। রাতের আঁধারে ও দিনের সুবিধাজনক সময়ে নানা কৌশলে মহিলা-পুরুষ শ্রমিক দিয়ে ভেজাল দস্তা সার উৎপাদন করা হচ্ছে। পরে এসব সার শিল্পনগর নওয়াপাড়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলের সারের দোকানে সববরাহ করা হয়।

অভিযোগ উঠেছে, সার ব্যবস্থাপনা আইন, ২০০৬ অনুযায়ী যিনি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, তিনিই সার উৎপাদন কার্যক্রম দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। নির্বাহী হাকিম ও পুলিশের সহায়তা নিয়ে ভেজালবিরোধী অভিযান চালানোর দায়িত্ব তারই ওপর ন্যস্ত। তবে, অজ্ঞাত কারণে গত কয়েক বছরে উপজেলার সার কারখানাগুলোতে তেমন অভিযান চালানো হয়নি।

কৃষকদের অভিযোগ, ভেজাল ও মানহীন সার ব্যবহার করায় ফসল উৎপাদন কমেছে। এতে তারা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

অবিলম্বে ভেজাল ও মানহীন সার উৎপাদন বন্ধ এবং উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কৃষিমন্ত্রী ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন কৃষকরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সার উৎপাদনকারী এ প্রতিবেদকে বলেন, ‘প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই আমরা এ ব্যবসা করে থাকি।’

যশোর সদর উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘যশোরে আমি যোগ দিয়েছি ১৫ দিন আগে। আমার কাছে ভেজাল সারের কারবারিদের তথ্য নেই। সাংবাদিকরা এ ব্যাপারে আমাকে সহযোগিতা করলে আমি উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে অবশ্যই ভেজাল সার কারবারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যস্থা গ্রহন করব। যারা ভেজাল সারের ব্যবসা করে কৃষিকে ক্ষতি করছে তাদেও কোনোভাবেই রক্ষা করা হবে না।