হজের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ সম্মেলন বিশ্বইজতেমা। লাখো মানুষের ইজতেমা। আল্লাহর জিকির বেশি হয়। ইবাদত বেশি হয়। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সামিয়ানার ভেতর আদায় হয়। এতে তেমন সমস্যা দেখা যায় না। কিন্তু জুমার নামাজে বরকত হাসিলের জন্য দূর দুরান্ত থেকে ছুটে আসে মুমিন মুসলমান। সামিয়ানায় জায়গা হয় না সব মুসল্লির। মাট, ঘাট, নদীর পাড়, লঞ্চ, কালভার্ট, আশপাশের রাস্তা, এমনকি হাইওয়ে পর্যন্ত সব বন্ধ হয়ে যায়। লোকে লোকারণ্য।
তালের পাটি, পাটের চট, কার্পেট কিংবা কাপড় নয়, এক সময় মানুষ মাটিতে বা জীব-জন্তুর ছবি সংবলিত পত্রিকায় পা রেখে দাঁড়িয়ে যায়। সামিয়ানার বাইরে মাইক থাকে না। এ ছাড়া মুকাব্বিরের আওয়াজ বাইরে যাওয়ার সুযোগও নেই। কর্তৃপক্ষ জুমার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও রাখেন না। তাহলে সামিয়ানার বাইরের প্রায় দুই-আড়াই কিলোমিটারজুড়ে দাঁড়ানো মুসল্লিদের কী অবস্থা? ইমামের আওয়াজ বা মুকাব্বিরের আওয়াজ না শুনে রুকু-সেজদা করবেন কীভাবে? দূরে দাঁড়ানো মানুষগুলো ইমামের অনুসরণ করার একমাত্র ভরসা গাইবি আওয়াজ। কিন্তু এ আওয়াজ ইমাম থেকে আসছে, না অন্য কোথায়ও থেকে, জানার উপায় নেই। ফলে ঘটে বিভ্রান্তি। ইমাম রুকুতে গেলে মুসল্লিরা সেজদায় চলে যায়। ইমাম সেজদা থেকে উঠে কেরাত শেষ করে ফেলেন কিন্তু মুসল্লিরা সেজদায় পড়ে থাকেন। আবার ইমাম সেজদায় থাকার সময় মুসল্লিরা সালাম ফিরিয়ে ফেলেন, এমন ঘটনা অহরহ। কেবলা ঠিক থাকে না এমন মুসল্লির সংখ্যাও কি কম? অথচ, নামাজ আদায়ে কেবলামুখী না হলে, ইমামের অনুসরণ না করলে, ইমামকে সেজদায় রেখে সালাম ফিরিয়ে ফেললে বা সেজদায় রেখে দাঁড়িয়ে গেলে নামাজ সহিহ হবে না। আবারও নামাজ পড়তে হয়। মাসালাটি জানা না থাকায় অধিক সওয়াবের জন্য গিয়ে গুণাহ করে ফেলেন কেউ কেউ। ইজতেমা কর্তৃপক্ষ ধর্মপ্রাণ মানুষদের বিশাল এ আয়োজন থেকে বঞ্চিত না হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় মাইকের ব্যবস্থা করলে, হাজারও মানুষ এ ক্ষতি থেকে বাঁচতে পারবে।