প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রতিটি ছেলেমেয়ে যাতে শিক্ষা নিতে পারে সে সুযোগ করে দিচ্ছি। আমরা ১ কোটি ২৮ লাখ শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিচ্ছি। সবাই যাতে লেখাপড়া করতে পারে তার ব্যবস্থা করছি। আজ বৃহস্পতিবার গণভবনে বেলা সাড়ে ১০টার দিকে পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষার ফল গ্রহণ শেষে এক বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছেলেমেয়েদের পড়ার চাপ না দিয়ে খেলার মধ্য দিয়ে শিক্ষাটা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, দারিদ্র্যের কারণে কেউ যেন শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখছে সরকার।
তিনি বলেন, আমাদের জন্য শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমিক শিক্ষার ভিত্তি তৈরি করে দিয়ে গেছেন। তিনি সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় করণ করে দিলেন। ওই সময় একটা যুদ্ধ বিদ্ধস্ত দেশে এতো সমস্যার মধ্যেও এভাবে জাতীকরণ করা একটা বিশাল ব্যাপার। সব শিক্ষককে সরকারি চাকরি দিয়ে শিক্ষার ভিত্তিটা তৈরি করে দিয়ে গেলেন। তিনি বলেন, আমরা সরকারে আসার পর তারই পদাঙ্ক অনুসরন করে ২৬ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সরকারি করে দিয়েছি। চার হাজার শিক্ষককে সরকারি চাকরির মর্যাদা দিয়েছি। বাজেটে আমরা শিক্ষার জন্য সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দিয়েছি।
এসময় প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়াতে কিছু পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলো তার সাবেক শিক্ষার্থী ও এলাকার দানশীলদের নিয়ে গঠিত ফান্ড ও এলামনাই ট্রাস্ট নিয়ে চলতে পারে। তারা টিফিনের ব্যবস্থা করতে পারে। এতে ওই প্রতিষ্ঠানকে কারও মুখাপেক্ষী হতে হবে না। এটাই জাতির পিতা আমাদের শিখিয়েছেন। শিক্ষার উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের নানা পদক্ষেপের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, তার সরকার ১ কোটি ২৮ লাখ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা তহবিলে এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অটিস্টিক ছেলে-মেয়েদেরও যেন স্কুলে পাঠানো হয়, তাদের সুচিকিৎসার জন্যও তার সরকার বিভিন্ন তৎপরতা চালাচ্ছে।
এসময় মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার ও তাদের দোসরদের বর্বরতা-নৃশংসতার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি স্মরণ করেন, মুক্তিযুদ্ধের পর ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে জাতির পিতা দেশ গড়তে মনোনিবেশ করেন। প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক ও অবৈতনিক করেন। প্রাথমিক শিক্ষার ভিত গড়ে দিতে নানামুখী পদক্ষেপ নেন। সেই ধারাবাহিকতায় শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার। অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজার রহমান, দুই মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।