ঢাকা ০৭:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশে বাধা দিল্লিকে ঢাকার চিঠি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:২০:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুন ২০২০
  • ২৪৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনা সংক্রমণের কারণে বন্ধ থাকা আমদানি-রফতানি কার্যক্রম চালু করতে সম্প্রতি ভারত ও বাংলাদেশের স্থলবন্দরগুলো খুলে দেয়া হয়। এজন্য বহু দেনদরবার করতে হয়েছে।
ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য প্রবেশ স্বাভাবিক থাকলেও বাংলাদেশ থেকে বেশিরভাগ বন্দর দিয়ে ট্রাক ঢুকতে দিচ্ছে না ভারত।
বিষয়টি দুদেশের মধ্যকার চুক্তির লঙ্ঘণ হিসেবে দেখছে ঢাকা। তবে এ সমস্যা সমাধানে কূটনৈতিকভাবে চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। বাণিজ্য স্বাভাবিক করতে ইতোমধ্যে দিল্লিকে চিঠিও পাঠিয়েছে ঢাকা। পররাষ্ট্র এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে নৌ সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন বলেন, আমরা বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত আছি। আপাতত এটুকু বলতে পারি যে, বাংলাদেশি পণ্য ভারতে প্রবেশের বাধা দূর করতে কূটনৈতিকভাবে চেষ্টা চলছে। আশা করছি, দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে।

সূত্র জানায়, করোনা পরিস্থিতির কারণে মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে বেশ কিছুদিন দুদেশের মধ্যকার বাণিজ্য বন্ধ থাকায় দুই দেশের অর্থনীতিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বাণিজ্য স্বাভাবিক করতে প্রথমে উদ্যোগ নেয় ভারত। দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি ও উন্নয়নে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের উদ্যোগে বাংলাদেশের বাণিজ্য, পররাষ্ট্র এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়সহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে বৈঠক হয়।
এ ছাড়া একাধিক ফোনকল ও ভার্চুয়াল বৈঠকে বাণিজ্য স্বাভাবিক করার বিষয়ে জোর দিতে থাকে ভারত। পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য নিয়ে বৈঠক হয়। এসব বৈঠকের পরিপ্রেক্ষিতে ৬ জুন থেকে বাংলাদেশে পণ্য রফতানি শুরু করে ভারত। তবে বাংলাদেশি পণ্য দেশটিতে প্রবেশে বাধা পেতে থাকে।
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, বাংলাদেশের পণ্য প্রবেশে বাধা পাওয়া নিয়ে ইতোমধ্যে ভারতের সঙ্গে কয়েক দফা যোগাযোগ করা হয়েছে। ভারতীয় পণ্য আমদানির মতো বাংলাদেশি পণ্য রফতানিও যাতে নির্বিঘেœ হয় সে বিষেয়ে দিল্লিকে চিঠিও দেয়া হয়েছে। তবে সমস্যার সমাধান হয়নি।

বিষয়টি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনও। তিনি বলেন, আমরা দুপক্ষই বাণিজ্য চালু করতে একমত হয়েছি। দুদেশের চুক্তি অনুযায়ী সমানভাবে পণ্য আমদানি ও রফতানি চলবে। কিন্তু কেন বাংলাদেশ পণ্য রফতানি করতে পারছে না, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এর আগে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার রাজি থাকলেও পশ্চিমবঙ্গের বাধায় কিছুদিন দুদেশের স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রফতানি বন্ধ রাখতে হয়। তখন বাংলাদেশি সীমানায় পণ্য দিতে আসা ট্রাক চালকদের বাধ্যতামূলক ১৪দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখার কথা বলে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এরপর দুদেশের জিরো পয়েন্টে পণ্য নামানোর সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু ওই স্থানে সব পণ্য নামিয়ে আবার বাংলাদেশি ট্রাকে তোলার মতো পরিস্থিতি না থাকায় এই সিদ্ধান্ত কাজে দেয়নি।
বাধ্য হয়ে তখন আমরা রেলপথে পণ্য পরিবহনের কথা ভাবি। এরপর নানা আলোচনার মাধ্যমে আবারও বন্দর খোলার সিদ্ধান্ত আসে। কিন্তু এরপরেও বাংলাদেশি পণ্য ভারতে প্রবেশ করতে না পারা দুঃখজনক। আশা করি, আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশে বাধা দিল্লিকে ঢাকার চিঠি

আপডেট টাইম : ০২:২০:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুন ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনা সংক্রমণের কারণে বন্ধ থাকা আমদানি-রফতানি কার্যক্রম চালু করতে সম্প্রতি ভারত ও বাংলাদেশের স্থলবন্দরগুলো খুলে দেয়া হয়। এজন্য বহু দেনদরবার করতে হয়েছে।
ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য প্রবেশ স্বাভাবিক থাকলেও বাংলাদেশ থেকে বেশিরভাগ বন্দর দিয়ে ট্রাক ঢুকতে দিচ্ছে না ভারত।
বিষয়টি দুদেশের মধ্যকার চুক্তির লঙ্ঘণ হিসেবে দেখছে ঢাকা। তবে এ সমস্যা সমাধানে কূটনৈতিকভাবে চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। বাণিজ্য স্বাভাবিক করতে ইতোমধ্যে দিল্লিকে চিঠিও পাঠিয়েছে ঢাকা। পররাষ্ট্র এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে নৌ সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন বলেন, আমরা বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত আছি। আপাতত এটুকু বলতে পারি যে, বাংলাদেশি পণ্য ভারতে প্রবেশের বাধা দূর করতে কূটনৈতিকভাবে চেষ্টা চলছে। আশা করছি, দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে।

সূত্র জানায়, করোনা পরিস্থিতির কারণে মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে বেশ কিছুদিন দুদেশের মধ্যকার বাণিজ্য বন্ধ থাকায় দুই দেশের অর্থনীতিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বাণিজ্য স্বাভাবিক করতে প্রথমে উদ্যোগ নেয় ভারত। দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি ও উন্নয়নে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের উদ্যোগে বাংলাদেশের বাণিজ্য, পররাষ্ট্র এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়সহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে বৈঠক হয়।
এ ছাড়া একাধিক ফোনকল ও ভার্চুয়াল বৈঠকে বাণিজ্য স্বাভাবিক করার বিষয়ে জোর দিতে থাকে ভারত। পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য নিয়ে বৈঠক হয়। এসব বৈঠকের পরিপ্রেক্ষিতে ৬ জুন থেকে বাংলাদেশে পণ্য রফতানি শুরু করে ভারত। তবে বাংলাদেশি পণ্য দেশটিতে প্রবেশে বাধা পেতে থাকে।
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, বাংলাদেশের পণ্য প্রবেশে বাধা পাওয়া নিয়ে ইতোমধ্যে ভারতের সঙ্গে কয়েক দফা যোগাযোগ করা হয়েছে। ভারতীয় পণ্য আমদানির মতো বাংলাদেশি পণ্য রফতানিও যাতে নির্বিঘেœ হয় সে বিষেয়ে দিল্লিকে চিঠিও দেয়া হয়েছে। তবে সমস্যার সমাধান হয়নি।

বিষয়টি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনও। তিনি বলেন, আমরা দুপক্ষই বাণিজ্য চালু করতে একমত হয়েছি। দুদেশের চুক্তি অনুযায়ী সমানভাবে পণ্য আমদানি ও রফতানি চলবে। কিন্তু কেন বাংলাদেশ পণ্য রফতানি করতে পারছে না, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এর আগে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার রাজি থাকলেও পশ্চিমবঙ্গের বাধায় কিছুদিন দুদেশের স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রফতানি বন্ধ রাখতে হয়। তখন বাংলাদেশি সীমানায় পণ্য দিতে আসা ট্রাক চালকদের বাধ্যতামূলক ১৪দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখার কথা বলে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এরপর দুদেশের জিরো পয়েন্টে পণ্য নামানোর সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু ওই স্থানে সব পণ্য নামিয়ে আবার বাংলাদেশি ট্রাকে তোলার মতো পরিস্থিতি না থাকায় এই সিদ্ধান্ত কাজে দেয়নি।
বাধ্য হয়ে তখন আমরা রেলপথে পণ্য পরিবহনের কথা ভাবি। এরপর নানা আলোচনার মাধ্যমে আবারও বন্দর খোলার সিদ্ধান্ত আসে। কিন্তু এরপরেও বাংলাদেশি পণ্য ভারতে প্রবেশ করতে না পারা দুঃখজনক। আশা করি, আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।