সিলেটে শিশু সাঈদ হত্যা মামলায় তিনজনের ফাঁসি দিয়েছেন আদালত। অপর অভিযুক্ত মাসুমের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে। সোমবার সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন।
চলতি বছরের ১১ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিলেট নগরীর রায়নগর থেকে স্কুলছাত্র আবু সাঈদকে অপহরণ করা হয়। এরপর ১৪ মার্চ রাত সাড়ে ১০টায় নগরীর বিমানবন্দর থানা পুলিশের কনস্টেবল এবাদুর রহমান পুতুলের কুমারপাড়ার ঝর্ণারপাড়ের বাসার ছাদ থেকে ৯ বছর বয়সি সাঈদের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেন।
একই সঙ্গে অপহরণকারীদের সঙ্গেও চলতে থাকে কথাবার্তা। ৫ লাখ টাকা দেওয়ার সামর্থ্য নেই জানিয়ে চলে দর-কষাকষি। শেষ পর্যন্ত ২ লাখ টাকায় সম্মত হয় অপহরণকারীরা। টাকা নিয়ে সিলেট নগরীর বাইশটিলা এলাকায় যাওয়ার পর ফোন দিয়ে অপহরণকারীরা বলে, ‘বিষয়টি পুলিশকে কেন জানানো হলো?’ তারা সাঈদকে হত্যার হুমকি দিয়ে ফোন রেখে দেয়। অপহরণের তিন দিন পর ১৪ মার্চ দিবাগত রাতে সাঈদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
কনস্টেবল (বর্তমানে বরখাস্ত) এবাদুর রহমান একসময় সাঈদদের পাশের বাসায় ভাড়া থাকতেন। সেই সুবাদে সাঈদের পরিবারের সবার সঙ্গে পরিচয় ছিল তার। আবু সাঈদ তাকে ‘মামা’ ডাকত। সাঈদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বাবা মতিন মিয়া বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় আটককৃত তিনজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
হত্যাকাণ্ডের প্রায় ছয় মাস পর গত ২৩ সেপ্টেম্বর সিলেট মহানগর হাকিম প্রথম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) আবদুল আহাদ চৌধুরী। মামলাটি তদন্ত করেন কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসাইন। গত ৭ অক্টোবর অভিযোগপত্রের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
পরে ১৭ নভেম্বর সাঈদ অপহরণ ও হত্যা মামলায় চারজনের বিরুদ্ধে আদালত অভিযোগ গঠন করেন। ওই চারজন হচ্ছেন নগরীর বিমানবন্দর থানার কনস্টেবল (বরখাস্তকৃত) এবাদুর রহমান পুতুল, র্যাবের কথিত সোর্স আতাউর রহমান গেদা, সিলেট জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম রাকিব ও প্রচার সম্পাদক মাহিব হোসেন মাসুম।