ঢাকা ০৬:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
টাকার পাহাড় গড়েছেন সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে শেখ হাসিনা: সেলিমা রহমান ভারতে থাকার বৈধ মেয়াদ শেষ, কী ঘটবে শেখ হাসিনার ভাগ্যে ভারতে ‘এক দেশ এক ভোট’ কি সত্যিই হবে পুলিশের কাজ পুলিশকে দিয়েই করাতে হবে, আইন হাতে তুলে নেওয়া যাবে না জাতিসংঘ অধিবেশন নিউইয়র্কে যাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে ড. ইউনূসের বৈশ্বিক-আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক জরুরি: বাইডেন ইলিশের দাম কমছে না কেন বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের মধ্যে হাতাহাতি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েন বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের মধ্যে হাতাহাতি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েন

নির্বাচন কমিশন: প্রশিক্ষণে বাড়তি চাহিদা সাড়ে ৬০ কোটি টাকা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:২২:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২০
  • ২৩০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চলতি অর্থবছরের বাকি ৬ মাসের জন্য প্রশিক্ষণ খাতে বাড়তি সাড়ে ৬০ কোটি টাকা চেয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয়ের আপত্তির মুখে আপাতত ৩ মাসের জন্য ৩৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বরাদ্দের চাহিদা দেয়া হয়েছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এ অর্থের সিংহভাগ ব্যয় হবে।

ওই টাকা বরাদ্দ পেতে ইসির সিনিয়র সচিব অর্থ বিভাগের সচিবের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। তবে এখনও চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ পায়নি কমিশন। এমন অবস্থায় ইসির বিভিন্ন খাত থেকে ২০ কোটি টাকা প্রশিক্ষণ খাতে স্থানান্তর করেছে। আপাতত ওই টাকায় আজ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো এসব তথ্য জানিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ব্যালটের পরিবর্তে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) নির্বাচন হওয়ায় প্রশিক্ষণ খরচই বেড়েছে অন্তত আটগুণ। এ কারণেই চলতি অর্থবছরের বরাদ্দের অতিরিক্ত ছয়গুণ বেশি অর্থের প্রয়োজন হচ্ছে।

সূত্র জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরে প্রশিক্ষণ খাতে ইসির বরাদ্দ ১০ কোটি ২৫ লাখ টাকা। বিভিন্ন নির্বাচনে বরাদ্দ দেয়ার পর বর্তমানে এ খাতে ইসির হাতে রয়েছে প্রায় সাত লাখ টাকা। অথচ ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে প্রশিক্ষণ খাতে সম্ভাব্য বাজেট ধরা হয়েছে ২৩ কোটি ৯০ লাখ ৯২ হাজার টাকা। ওই টাকা বরাদ্দ পেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ইসিকে।

আরও জানিয়েছে, প্রশিক্ষণের বাইরে নির্বাচন পরিচালনা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা খাতে কমবেশি ৪০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হচ্ছে।

ইভিএমে ভোট নেয়ার খরচ বেশি হওয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেন, ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচন করতে যে পরিমাণ টাকা খরচ হয়, ইভিএমে ভোট নিলে তার চেয়ে অনেক বেশি খরচ হয়। কারণ সেখানে অনেক টেকনোলজির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নানা রকম প্রশক্ষণও দিতে হয়। ইভিএমে টেকনিক্যাল সমস্যা হলে প্রিসাইডিং অফিসার ঠিক করতে পারবেন না। ফলে সেখানে টেকনিক্যাল এক্সপার্টও থাকবে। সে হিসাব করে বাজেট করা হয়। তিনি বলেন, এবার সরকারি নিয়ম অনুসরণ করে প্রশিক্ষণের যে বাজেট বা রেট সেটাই করার চেষ্টা করেছি।

জানা গেছে, নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটে (ইটিআই) কোর্স পরিচালকসহ বিভিন্ন পদ ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে হরিলুট চলে আসছিল। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর ইটিআইর মহাপরিচালক পদে রদবদল আনে কমিশন। তৈরি করা হয় প্রশিক্ষণের নির্দিষ্ট নীতিমালাও। বিলুপ্ত করা হয়ে অপ্রয়োজনীয় কয়েকটি পদও।

এতে প্রশিক্ষণের খরচ কিছুটা কমে আসে। তবে নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন ধরনের নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার বাড়িয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ায় প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষক দুইয়ের সংখ্যাও বেড়ে গেছে। এর ফলে প্রশিক্ষণ খাতেই খরচ বেড়েছে প্রায় আটগুণ।

আরও জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে প্রশিক্ষণ খাতে বাজেটে ১৭ কোটি ২৫ লাখ ৪ হাজার টাকা বরাদ্দ চেয়েছিল ইসি। এর বিপরীতে বরাদ্দ পেয়েছে ১০ কোটি ২৫ লাখ টাকা। ইতিমধ্যে বিভিন্ন নির্বাচনের প্রশিক্ষণের জন্য ১০ কোটি ১৮ লাখ টাকার বেশি ছাড় করেছে। ইটিআইর হাতে বরাদ্দ রয়েছে প্রায় সাত লাখ টাকা। এমন পরিস্থিতিতে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের প্রশিক্ষণ আয়োজন করতে হিমশিম খাচ্ছে এ প্রতিষ্ঠানটি।

বিষয়টি জানিয়ে অতিরিক্ত চাহিদা চেয়ে ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীরকে চিঠি দেন ইটিআইর মহাপরিচালক মো. নূরুজ্জামান তালুকদার। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ ডিসেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। এমনকি সম্প্রতি ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর নিজে অর্থ মন্ত্রণালয়ে গিয়ে অর্থ বিভাগের সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ইসির চাহিদা অনুযায়ী এ মুহূর্তে টাকা দিতে অপরাগতা জানায় অর্থ মন্ত্রণালয়। কমিশনের অপ্রয়োজনীয় খাত থেকে টাকা প্রশিক্ষণ খাতে স্থানান্তরের মৌখিক পরামর্শ দেয়া হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় এসংক্রান্ত চিঠি ইসিতে পাঠাবে বলে জানিয়েছে।

আরও জানা গেছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে নির্বাচন কমিশনের বিভিন্ন খাত থেকে ২০ কোটি টাকা প্রশিক্ষণ খাতে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ইসিতে অনুষ্ঠিত এ সংক্রান্ত বৈঠকে ওই টাকা স্থানান্তর করা হয়।

খরচ বেড়েছে আটগুণ : চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাকি ৬ মাসের প্রয়োজনীয় বাজেট প্রাক্কলন করেছে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট। এতে দেখা গেছে, ব্যালটের চেয়ে ইভিএমে ভোটগ্রহণে প্রশিক্ষণ খাতেই অন্তত আটগুণ বেশি খরচ হয়। বাজেট প্রাক্কলনে ঢাকার দুই সিটি ও চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটে প্রশিক্ষণ খাতে খরচ ধরা হয় ৪ কোটি ৫৬ লাখ ৮৮ হাজার টাকা।

অপরদিকে এ তিন সিটিতে ইভিএমে ভোটগ্রহণে খরচ ধরা হয়েছে ৩২ কোটি ৫ লাখ ৬৭ হাজার ২৫০ টাকা। অপরদিকে জাতীয় সংসদের ৫টি আসনের উপনির্বাচনে ব্যালটে ভোটগ্রহণ করলে প্রশিক্ষণ খাতে ৬৪ লাখ ৩৫ হাজার ৩৭৫ টাকা সম্ভাব্য খরচ ধরা হয়েছে। আর ওই ৫ আসনে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করলে তা বেড়ে দাঁড়াবে ৬ কোটি ৮১ লাখ ৬৩ হাজার ৩৭৫ টাকা।

প্রতিষ্ঠানটির হিসাব অনুযায়ী, আগামী ৬ মাসে জাতীয় সংসদের ৫টি উপনির্বাচন, ৩টি সিটি কর্পোরেশন, ৫টি পৌরসভা, ১২টি উপজেলা পরিষদ ও ১২২টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ব্যালটে করা হলে সম্ভাব্য খরচ দাঁড়াবে ৮ কোটি ২৬ লাখ ৬ হাজার টাকা। এর মধ্যে নির্বাচনের বাইরে আরও কয়েক ধরনের প্রশিক্ষণও রয়েছে।

অপরদিকে ইভিএমে ভোট হলে এসব নির্বাচনের প্রশিক্ষণ খাতে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৬১ কোটি ১৫ লাখ ৯১ হাজার টাকা।

আপৎকালীন ৩৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা চায় ইসি : জানা গেছে, চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আপত্তির মুখে আপৎকালীন ৩৩ কোটি ৭৫ লাখ ৩৯ হাজার ৯৫০ টাকা চেয়েছে ইসি। ওই টাকা বরাদ্দ পেলে মার্চ পর্যন্ত যেসব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সেগুলোর ওপর প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এর বাইরেও কয়েকটি কোর্সের প্রশিক্ষণ চলবে।

আরও জানা গেছে, ওই টাকার মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটিতে ১২ কোটি ৯১ লাখ ১৭ হাজার টাকা এবং দক্ষিণ সিটিতে ১০ কোটি ৯৮ লাখ ৭৫ হাজার ২০০ টাকা প্রশিক্ষণ খাতে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে। এছাড়া জাতীয় সংসদের চট্টগ্রাম-৮ শূন্য আসনের উপনির্বাচনে তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন শিক্ষকদের ইভিএম সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ খাতে ৬ লাখ ৮২ হাজার টাকা, চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে ৩৭ লাখ ৫৩ হাজার ৩০০ টাকা ও ১৯টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রশিক্ষণে ৪১ লাখ ৯৫ হাজার ৪০০ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। বাকি টাকা অন্যান্য প্রশিক্ষণ খাতে ধরা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

টাকার পাহাড় গড়েছেন সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা

নির্বাচন কমিশন: প্রশিক্ষণে বাড়তি চাহিদা সাড়ে ৬০ কোটি টাকা

আপডেট টাইম : ০৮:২২:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চলতি অর্থবছরের বাকি ৬ মাসের জন্য প্রশিক্ষণ খাতে বাড়তি সাড়ে ৬০ কোটি টাকা চেয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয়ের আপত্তির মুখে আপাতত ৩ মাসের জন্য ৩৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বরাদ্দের চাহিদা দেয়া হয়েছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এ অর্থের সিংহভাগ ব্যয় হবে।

ওই টাকা বরাদ্দ পেতে ইসির সিনিয়র সচিব অর্থ বিভাগের সচিবের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। তবে এখনও চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ পায়নি কমিশন। এমন অবস্থায় ইসির বিভিন্ন খাত থেকে ২০ কোটি টাকা প্রশিক্ষণ খাতে স্থানান্তর করেছে। আপাতত ওই টাকায় আজ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো এসব তথ্য জানিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ব্যালটের পরিবর্তে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) নির্বাচন হওয়ায় প্রশিক্ষণ খরচই বেড়েছে অন্তত আটগুণ। এ কারণেই চলতি অর্থবছরের বরাদ্দের অতিরিক্ত ছয়গুণ বেশি অর্থের প্রয়োজন হচ্ছে।

সূত্র জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরে প্রশিক্ষণ খাতে ইসির বরাদ্দ ১০ কোটি ২৫ লাখ টাকা। বিভিন্ন নির্বাচনে বরাদ্দ দেয়ার পর বর্তমানে এ খাতে ইসির হাতে রয়েছে প্রায় সাত লাখ টাকা। অথচ ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে প্রশিক্ষণ খাতে সম্ভাব্য বাজেট ধরা হয়েছে ২৩ কোটি ৯০ লাখ ৯২ হাজার টাকা। ওই টাকা বরাদ্দ পেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ইসিকে।

আরও জানিয়েছে, প্রশিক্ষণের বাইরে নির্বাচন পরিচালনা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা খাতে কমবেশি ৪০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হচ্ছে।

ইভিএমে ভোট নেয়ার খরচ বেশি হওয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেন, ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচন করতে যে পরিমাণ টাকা খরচ হয়, ইভিএমে ভোট নিলে তার চেয়ে অনেক বেশি খরচ হয়। কারণ সেখানে অনেক টেকনোলজির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নানা রকম প্রশক্ষণও দিতে হয়। ইভিএমে টেকনিক্যাল সমস্যা হলে প্রিসাইডিং অফিসার ঠিক করতে পারবেন না। ফলে সেখানে টেকনিক্যাল এক্সপার্টও থাকবে। সে হিসাব করে বাজেট করা হয়। তিনি বলেন, এবার সরকারি নিয়ম অনুসরণ করে প্রশিক্ষণের যে বাজেট বা রেট সেটাই করার চেষ্টা করেছি।

জানা গেছে, নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটে (ইটিআই) কোর্স পরিচালকসহ বিভিন্ন পদ ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে হরিলুট চলে আসছিল। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর ইটিআইর মহাপরিচালক পদে রদবদল আনে কমিশন। তৈরি করা হয় প্রশিক্ষণের নির্দিষ্ট নীতিমালাও। বিলুপ্ত করা হয়ে অপ্রয়োজনীয় কয়েকটি পদও।

এতে প্রশিক্ষণের খরচ কিছুটা কমে আসে। তবে নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন ধরনের নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার বাড়িয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ায় প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষক দুইয়ের সংখ্যাও বেড়ে গেছে। এর ফলে প্রশিক্ষণ খাতেই খরচ বেড়েছে প্রায় আটগুণ।

আরও জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে প্রশিক্ষণ খাতে বাজেটে ১৭ কোটি ২৫ লাখ ৪ হাজার টাকা বরাদ্দ চেয়েছিল ইসি। এর বিপরীতে বরাদ্দ পেয়েছে ১০ কোটি ২৫ লাখ টাকা। ইতিমধ্যে বিভিন্ন নির্বাচনের প্রশিক্ষণের জন্য ১০ কোটি ১৮ লাখ টাকার বেশি ছাড় করেছে। ইটিআইর হাতে বরাদ্দ রয়েছে প্রায় সাত লাখ টাকা। এমন পরিস্থিতিতে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের প্রশিক্ষণ আয়োজন করতে হিমশিম খাচ্ছে এ প্রতিষ্ঠানটি।

বিষয়টি জানিয়ে অতিরিক্ত চাহিদা চেয়ে ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীরকে চিঠি দেন ইটিআইর মহাপরিচালক মো. নূরুজ্জামান তালুকদার। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ ডিসেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। এমনকি সম্প্রতি ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর নিজে অর্থ মন্ত্রণালয়ে গিয়ে অর্থ বিভাগের সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ইসির চাহিদা অনুযায়ী এ মুহূর্তে টাকা দিতে অপরাগতা জানায় অর্থ মন্ত্রণালয়। কমিশনের অপ্রয়োজনীয় খাত থেকে টাকা প্রশিক্ষণ খাতে স্থানান্তরের মৌখিক পরামর্শ দেয়া হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় এসংক্রান্ত চিঠি ইসিতে পাঠাবে বলে জানিয়েছে।

আরও জানা গেছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে নির্বাচন কমিশনের বিভিন্ন খাত থেকে ২০ কোটি টাকা প্রশিক্ষণ খাতে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ইসিতে অনুষ্ঠিত এ সংক্রান্ত বৈঠকে ওই টাকা স্থানান্তর করা হয়।

খরচ বেড়েছে আটগুণ : চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাকি ৬ মাসের প্রয়োজনীয় বাজেট প্রাক্কলন করেছে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট। এতে দেখা গেছে, ব্যালটের চেয়ে ইভিএমে ভোটগ্রহণে প্রশিক্ষণ খাতেই অন্তত আটগুণ বেশি খরচ হয়। বাজেট প্রাক্কলনে ঢাকার দুই সিটি ও চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটে প্রশিক্ষণ খাতে খরচ ধরা হয় ৪ কোটি ৫৬ লাখ ৮৮ হাজার টাকা।

অপরদিকে এ তিন সিটিতে ইভিএমে ভোটগ্রহণে খরচ ধরা হয়েছে ৩২ কোটি ৫ লাখ ৬৭ হাজার ২৫০ টাকা। অপরদিকে জাতীয় সংসদের ৫টি আসনের উপনির্বাচনে ব্যালটে ভোটগ্রহণ করলে প্রশিক্ষণ খাতে ৬৪ লাখ ৩৫ হাজার ৩৭৫ টাকা সম্ভাব্য খরচ ধরা হয়েছে। আর ওই ৫ আসনে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করলে তা বেড়ে দাঁড়াবে ৬ কোটি ৮১ লাখ ৬৩ হাজার ৩৭৫ টাকা।

প্রতিষ্ঠানটির হিসাব অনুযায়ী, আগামী ৬ মাসে জাতীয় সংসদের ৫টি উপনির্বাচন, ৩টি সিটি কর্পোরেশন, ৫টি পৌরসভা, ১২টি উপজেলা পরিষদ ও ১২২টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ব্যালটে করা হলে সম্ভাব্য খরচ দাঁড়াবে ৮ কোটি ২৬ লাখ ৬ হাজার টাকা। এর মধ্যে নির্বাচনের বাইরে আরও কয়েক ধরনের প্রশিক্ষণও রয়েছে।

অপরদিকে ইভিএমে ভোট হলে এসব নির্বাচনের প্রশিক্ষণ খাতে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৬১ কোটি ১৫ লাখ ৯১ হাজার টাকা।

আপৎকালীন ৩৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা চায় ইসি : জানা গেছে, চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আপত্তির মুখে আপৎকালীন ৩৩ কোটি ৭৫ লাখ ৩৯ হাজার ৯৫০ টাকা চেয়েছে ইসি। ওই টাকা বরাদ্দ পেলে মার্চ পর্যন্ত যেসব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সেগুলোর ওপর প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এর বাইরেও কয়েকটি কোর্সের প্রশিক্ষণ চলবে।

আরও জানা গেছে, ওই টাকার মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটিতে ১২ কোটি ৯১ লাখ ১৭ হাজার টাকা এবং দক্ষিণ সিটিতে ১০ কোটি ৯৮ লাখ ৭৫ হাজার ২০০ টাকা প্রশিক্ষণ খাতে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে। এছাড়া জাতীয় সংসদের চট্টগ্রাম-৮ শূন্য আসনের উপনির্বাচনে তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন শিক্ষকদের ইভিএম সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ খাতে ৬ লাখ ৮২ হাজার টাকা, চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে ৩৭ লাখ ৫৩ হাজার ৩০০ টাকা ও ১৯টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রশিক্ষণে ৪১ লাখ ৯৫ হাজার ৪০০ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। বাকি টাকা অন্যান্য প্রশিক্ষণ খাতে ধরা হয়েছে।