হাওর বার্তা ডেস্কঃ বরেণ্য চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের পৈত্রিক বাড়ি রাজশাহীর মিয়াপাড়ার ভবনটিকে হেরিটেজ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন নিউইয়র্কে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেলের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেওয়া এক স্মারকলিপিতে এ দাবি জানানো হয়।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ড সিটির বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল কার্যালয়ে গিয়ে কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসার সঙ্গে সাক্ষাত করেন। এসময় প্রতিনিধি দলের নেতা সংস্কৃতিকর্মী গোপাল সান্যাল কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসার কাছে ঋত্বিক ঘটকের বাড়িটি রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরেন। পরে কনসাল জেনারেলের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি স্মারকলিপি হস্তান্তর করা হয়।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, বরেণ্য চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের পৈত্রিক বাড়িটি ভেঙে ফেলার অশুভ উদ্যোগকে আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করি। পরিত্যক্ত ওই বাড়িটি ‘ঋত্বিক চলচ্চিত্র কেন্দ্র’ প্রতিষ্ঠা দেশের চলচ্চিত্রকর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবি। কিন্তু সেনাশাসন ও স্বৈরশাসনকালে বাড়িতে একটি কথিত হোমিও কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। রাজশাহীর ‘ঋত্বিক চলচ্চিত্র সংসদ’ কর্মীরা সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের কাছে ঐতিহ্যবাহী বাড়িতে একটি চলচ্চিত্রকেন্দ্র করার জন্য দাবিপত্র জমা দেয়। কিন্তু গত তিন বছরে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। গত ২১ ডিসেম্বর কলেজ কর্তৃপক্ষ সাইকেল স্ট্যান্ড করার অজুহাতে ভবনের একটি অংশ গুঁড়িয়ে দেয়। আমরা এ হীন কাজের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বিষয়টি সংস্কৃতিমন্ত্রীর গোচরে এলে তিনি দ্রুত জেলা প্রশাসককে ভাঙার কাজ স্থগিত করতে আশু পদক্ষেপ গ্রহণে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। নির্দেশমতো ভাঙার কাজ স্থগিত হয়েছে। কিন্তু এটা সাময়িক ব্যবস্থা।
অবিলম্বে ‘ঋত্বিক ফিল্ম সেন্টার’ প্রতিষ্ঠা করে আমাদের চলচ্চিত্রের ঐতিহ্য রক্ষার জন্য ভবনটিকে ‘হেরিটেজ’ ঘোষণা করে স্থায়ী সমাধানের আহ্বান জানিয়ে স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, দেশবিদেশের চলচ্চিত্র প্রদর্শন, গবেষণা, প্রশিক্ষণ ও উৎসব আয়োজনের মধ্য দিয়ে উত্তরবঙ্গে একটি ভিন্ন মাত্রার চলচ্চিত্র আন্দোলন এই প্রস্তাবিত প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠবে। আর এ ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়ে তুললে আমাদের চলচ্চিত্র সংস্কৃতির বিকাশ সাধিত হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
স্মারকলিপিতে হোমিও কলেজটি ভিন্ন একটি স্থানে স্থানান্তর করে ‘ঋত্বিক চলচ্চিত্র কেন্দ্র’ প্রতিষ্ঠার জোর দাবি জানানো হয়। স্মারকলিপিতে নিউইয়র্কের বিভিন্ন পেশাজীবী ও সংস্কৃতিকর্মীরা স্মাক্ষর করেছেন।