ঢাকা ০৬:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিজয়ের মাসে আমি জয়ের বাণী শুনি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:৩০:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯
  • ২৩৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃযেখানে দেখিবে যা পড়িয়া দেখিবে তা, শিখিলেও শিখিতে পারও নতুন কিছু। একটু কবিতার মত ছন্দ করে লিখলাম কথাগুলো। তবে প্রকৃত ঘটনা যা আমাকে মুগ্ধ করেছে তার বর্ণনা নীচের অংশটুকু।

মাওয়ায় ফেরিতে মুড়ি বিক্রেতা মজিবর ভাইয়ের সঙ্গে কথোপকথন। মুড়িতে বাড়তি পিঁয়াজ দিতে দিতে বললেন, খান – পিঁয়াজের দাম কইম্যা গেছে- ৮০ টাকা কেজিতে কিনছি। সামনের সাপ্তায় ৫০ এ নামব। পদ্মা ব্রীজ হয়ে গেলে ফেরি থাকবে না- কি করবেন? আত্মবিশ্বাস নিয়ে হেসে বললেন – অনেক কাজ পারি- মাটি কাটা, রিক্সা চালানো ইত্যাদি। ২৫ বছর আগে শিবচরে পদ্মায় বাড়ি চইল্যা গেছে। বাইচ্যা আছি, কাজ কইরা খাই- দেড় বছর পরের চিন্তা তখন করমু। দোয়া কইরেন।

চমৎকার কথাগুলো লিখেছে আমার এক ঢাকা রেসিডেন্সসিয়াল মডেল কলেজের বন্ধু, ব্যাংক এক্সিকিউটিভ – আহমেদ শাহিন। পদ্মা নদীর মাওয়ার ফেরিতে মুড়ি খাওয়া, সঙ্গে টেলিফোন ক্যামেরায় তোলা একটি ছবি এবং কিছু কথা। শাহিনের ওপরের কথাগুলো পড়তেই মনে ধরলো, এতো শুধু কিছু কথা নয়, এর মধ্যে রয়েছে একজন আত্নবিশ্বাসী মেহেনতি মানুষের হৃদয়ের কিছু বানী। মুজিবর ভাই শুধু আশার বানী দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি। সে তার কর্মের নিশ্চয়তার উপর তার মতামত ব্যক্ত করেছে। – ‘২৫ বছর আগে শিবচরে পদ্মায় বাড়ি চইল্যা গেছে । বাইচ্যা আছি, কাজ কইরা খাই- দেড় বছর পরের চিন্তা তখন করমু।’ ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের দিন, বন্ধুর ফেসবুকের স্ট্যাটাসে মজিবর ভাইয়ের কথাগুলো হৃদয়ে বেশ লেগেছে। অন্যের কথা নয় এবার আমি আমার নিজের কথা বলি।

হাজারও সুযোগ সুবিধা রয়েছে জীবনে, বসবাস সুইডেনে, হঠাৎ যদি চাকরী না থাকে বা অসুস্থ হই কোন সমস্যা নেই। সব কিছুর সুন্দর একটি ব্যবস্থা রয়েছে সত্বেও সারাক্ষণ চিন্তিত থাকি কি হবে, কি করতে হবে, কি না করতে হবে ইত্যাদি। সুইডেনে যেমন ইন্সুরেন্স রয়েছে বাড়ি, গাড়ি, অবসর সময়, জার্নী, চিকিৎসা, কর্ম বলতে গেলে পুরো জীবনের সব কিছুর ওপরে। তার পরও চিন্তিত এক ঘন্টা পরে কি হবে, আগামীকাল কি হবে ইত্যাদি।

অথচ মজিবর ভাই কি সুন্দর এবং সহজ করে বলে দিল তার জীবনের পরবর্তি সময়গুলো কিভাবে সে পার করবে। তার আত্মবিশ্বাস আমাকে মুগ্ধ করেছে যা বন্ধু শাহিনের স্ট্যাটাসে ফুলের মত ফুটে উঠেছে। মজিবর ভাই বহু কর্মে পারদর্শী। যেমন বলেছে ‘অনেক কাজ পারি- মাটি কাটা, রিক্সা চালানো ইত্যাদি।’

এই যে পারা নানা ধরনের কাজ করতে, এটাই তার জীবনের আত্নবিশ্বাস। বর্তমানে নতুন প্রজন্ম হতাশ তাদের ভবিষ্যত নিয়ে। বাংলাদেশের চলমান রাজনীতিতে হতাশা, প্রশিক্ষণে হতাশা, পরিবারে হতাশা, বলতে গেলে সারাদেশ হতাশায় হাবুডুবু খাচ্ছে। ঠিক তেমন একটি সময় মজিবর ভাই তার আশার বানী শুনিয়ে গেলো। সঙ্গে আমার হৃদয়ে বিজয়ের মাসে সে বাড়িয়ে গেলো নতুন করে জীবন চলার আত্নবিশ্বাস। সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

বিজয়ের মাসে আমি জয়ের বাণী শুনি

আপডেট টাইম : ০২:৩০:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃযেখানে দেখিবে যা পড়িয়া দেখিবে তা, শিখিলেও শিখিতে পারও নতুন কিছু। একটু কবিতার মত ছন্দ করে লিখলাম কথাগুলো। তবে প্রকৃত ঘটনা যা আমাকে মুগ্ধ করেছে তার বর্ণনা নীচের অংশটুকু।

মাওয়ায় ফেরিতে মুড়ি বিক্রেতা মজিবর ভাইয়ের সঙ্গে কথোপকথন। মুড়িতে বাড়তি পিঁয়াজ দিতে দিতে বললেন, খান – পিঁয়াজের দাম কইম্যা গেছে- ৮০ টাকা কেজিতে কিনছি। সামনের সাপ্তায় ৫০ এ নামব। পদ্মা ব্রীজ হয়ে গেলে ফেরি থাকবে না- কি করবেন? আত্মবিশ্বাস নিয়ে হেসে বললেন – অনেক কাজ পারি- মাটি কাটা, রিক্সা চালানো ইত্যাদি। ২৫ বছর আগে শিবচরে পদ্মায় বাড়ি চইল্যা গেছে। বাইচ্যা আছি, কাজ কইরা খাই- দেড় বছর পরের চিন্তা তখন করমু। দোয়া কইরেন।

চমৎকার কথাগুলো লিখেছে আমার এক ঢাকা রেসিডেন্সসিয়াল মডেল কলেজের বন্ধু, ব্যাংক এক্সিকিউটিভ – আহমেদ শাহিন। পদ্মা নদীর মাওয়ার ফেরিতে মুড়ি খাওয়া, সঙ্গে টেলিফোন ক্যামেরায় তোলা একটি ছবি এবং কিছু কথা। শাহিনের ওপরের কথাগুলো পড়তেই মনে ধরলো, এতো শুধু কিছু কথা নয়, এর মধ্যে রয়েছে একজন আত্নবিশ্বাসী মেহেনতি মানুষের হৃদয়ের কিছু বানী। মুজিবর ভাই শুধু আশার বানী দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি। সে তার কর্মের নিশ্চয়তার উপর তার মতামত ব্যক্ত করেছে। – ‘২৫ বছর আগে শিবচরে পদ্মায় বাড়ি চইল্যা গেছে । বাইচ্যা আছি, কাজ কইরা খাই- দেড় বছর পরের চিন্তা তখন করমু।’ ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের দিন, বন্ধুর ফেসবুকের স্ট্যাটাসে মজিবর ভাইয়ের কথাগুলো হৃদয়ে বেশ লেগেছে। অন্যের কথা নয় এবার আমি আমার নিজের কথা বলি।

হাজারও সুযোগ সুবিধা রয়েছে জীবনে, বসবাস সুইডেনে, হঠাৎ যদি চাকরী না থাকে বা অসুস্থ হই কোন সমস্যা নেই। সব কিছুর সুন্দর একটি ব্যবস্থা রয়েছে সত্বেও সারাক্ষণ চিন্তিত থাকি কি হবে, কি করতে হবে, কি না করতে হবে ইত্যাদি। সুইডেনে যেমন ইন্সুরেন্স রয়েছে বাড়ি, গাড়ি, অবসর সময়, জার্নী, চিকিৎসা, কর্ম বলতে গেলে পুরো জীবনের সব কিছুর ওপরে। তার পরও চিন্তিত এক ঘন্টা পরে কি হবে, আগামীকাল কি হবে ইত্যাদি।

অথচ মজিবর ভাই কি সুন্দর এবং সহজ করে বলে দিল তার জীবনের পরবর্তি সময়গুলো কিভাবে সে পার করবে। তার আত্মবিশ্বাস আমাকে মুগ্ধ করেছে যা বন্ধু শাহিনের স্ট্যাটাসে ফুলের মত ফুটে উঠেছে। মজিবর ভাই বহু কর্মে পারদর্শী। যেমন বলেছে ‘অনেক কাজ পারি- মাটি কাটা, রিক্সা চালানো ইত্যাদি।’

এই যে পারা নানা ধরনের কাজ করতে, এটাই তার জীবনের আত্নবিশ্বাস। বর্তমানে নতুন প্রজন্ম হতাশ তাদের ভবিষ্যত নিয়ে। বাংলাদেশের চলমান রাজনীতিতে হতাশা, প্রশিক্ষণে হতাশা, পরিবারে হতাশা, বলতে গেলে সারাদেশ হতাশায় হাবুডুবু খাচ্ছে। ঠিক তেমন একটি সময় মজিবর ভাই তার আশার বানী শুনিয়ে গেলো। সঙ্গে আমার হৃদয়ে বিজয়ের মাসে সে বাড়িয়ে গেলো নতুন করে জীবন চলার আত্নবিশ্বাস। সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।