হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর পাসপোর্ট র্যাং কিংয়ের প্রথম দুটি স্থানে রয়েছে এশিয়ার তিন দেশ। যৌথভাবে এক নম্বরে আছে জাপান ও সিঙ্গাপুর। এ দুটি দেশের নাগরিকরা ১৯০টি করে দেশে ভিসামুক্ত কিংবা ভিসা-অন-অ্যারাইভাল সুবিধা পেয়ে থাকেন। হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্সে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ভ্রমণে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্ট কোন কোন দেশের, সেই তালিকা তুলে ধরা হয় এতে।
পৃথিবীর ১৯৯টি পাসপোর্ট ও ২২৭টি ভ্রমণ গন্তব্য নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইএটিএ) বিশেষ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্স। বিশ্বের বৃহৎ ও সবচেয়ে সঠিক ডাটাবেজ থাকে আইএটিএ’র কাছে।
দেশের বাইরে ভ্রমণে পাসপোর্ট সবচেয়ে জরুরি। তবে সব পাসপোর্টে সমান সুবিধা মেলে না। আগে থেকে ভিসা না নিয়ে কয়টি দেশ ভ্রমণের সুবিধা রয়েছে সেই অনুযায়ী পাসপোর্টের ক্ষমতা মাপা হয়। এর সূত্র ধরে পাসপোর্ট ইনডেক্স ধারণার আবিষ্কারক লন্ডনে অবস্থিত বৈশ্বিক নাগরিকত্ব ও আবাসনের পরামর্শক সংস্থা হেনলি অ্যান্ড পার্টনারসের চেয়ারম্যান ড. ক্রিশ্চিয়ান এইচ. কায়েলিন।
সবচেয়ে ভ্রমণবান্ধব পাসপোর্টের তালিকায় দুই নম্বরে আছে দক্ষিণ কোরিয়া। অবশ্য ফিনল্যান্ড ও জার্মানির সঙ্গে জায়গাটি ভাগ করতে হয়েছে এশিয়ার এই দেশকে। বিশ্বের ১৮৮টি দেশে যেতে আগে থেকে ভিসা নিতে হয় না এই তিন রাষ্ট্রের নাগরিকদের।
পাকিস্তানের ভিসা নীতি পরিবর্তনের সুবাদে র্যাং কিংয়ে দুই নম্বর জায়গাটি পেলো ফিনল্যান্ড। পাকিস্তান এখন ফিনল্যান্ড, জাপান, স্পেন, মাল্টা, সুইজারল্যান্ড ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অর্ধশত দেশকে ইটিএ (ইলেক্ট্রনিক ট্রাভেল অথোরিটি) সুবিধা দিচ্ছে। তবে তাদের তালিকায় নেই যুক্তরাষ্ট্র কিংবা যুক্তরাজ্য। ২০১৪ সালে হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্সের শীর্ষে ছিল এ দুটি দেশ।
কিন্তু এ বছর আমেরিকা ও ব্রিটেন পেয়েছে ষষ্ঠ স্থান। এ দুটি দেশের সঙ্গে একই নম্বরে আছে বেলজিয়াম, কানাডা, গ্রিস, আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ড। এসব দেশের পাসপোর্টধারীদের ১৮৪টি দেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে আগে থেকে ভিসার ঝামেলা পোহাতে হয় না।
হেনলি ইনডেক্সে তিন নম্বর জায়গাটি দখল করেছে ইউরোপের তিন দেশ ডেনমার্ক, ইতালি ও লাক্সেমবার্গ। ভিসামুক্ত ও ভিসা-অন-অ্যারাইভাল মিলিয়ে ১৮৭টি দেশে যেতে পারে এই তিন দেশের পাসপোর্টধারীরা।
ইউরোপের অন্য তিন দেশ ফ্রান্স, স্পেন ও সুইডেনের নাগরিকদের ১৮৬টি দেশের দূতাবাস থেকে ভিসা নিতে হয় না। তাই এগুলো আছে চার নম্বরে। পাঁচ নম্বরে যৌথভাবে আছে ইউরোপের তিন দেশ অস্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ডস ও পর্তুগাল। সাত থেকে দশ নম্বরে রয়েছে যথাক্রমে মাল্টা ও চেক রিপাবলিক (১৮৩ দেশ), নিউজিল্যান্ড (১৮২ দেশ), অস্ট্রেলিয়া, লিথুয়ানিয়া ও স্লোভাকিয়া (১৮১ দেশ), হাঙ্গেরি, আইসল্যান্ড, লাটভিয়া, স্লোভেনিয়া (১৮০ দেশ)।
সংযুক্ত আরব আমিরাত পাঁচ ধাপ এগিয়ে স্থান করে নিয়েছে ১৫ নম্বরে। দক্ষিণ আফ্রিকাসহ আফ্রিকা মহাদেশের বেশ কয়েকটি দেশে ভিসামুক্ত কিংবা ভিসা-অন-অ্যারাইভাল সুবিধা পেতে শুরু করেছেন আমিরাতিরা। সব মিলিয়ে ১৭২টি দেশ এগুলো দিচ্ছে তাদের।
র্যাংকিংয়ে তলানিতে যথারীতি আছে আফগানিস্তান (১০৭)। বিশ্বের সবচেয়ে দুর্বল পাসপোর্ট এই দেশের নাগরিকদের। তারা মাত্র ২৫ দেশে ভিসামুক্ত ও ভিসা-অন-অ্যারাইভাল সুবিধা পান।
বিশ্বের কয়েকটি রাষ্ট্রের নাগরিকরা ৪০টিরও কম দেশে ভিসামুক্ত কিংবা ভিসা-অন-অ্যারাইভাল সুবিধা পান। এ তালিকায় শীর্ষ পাঁচে আফগানিস্তানের পরে আছে যথাক্রমে ইরাক, সিরিয়া, সোমালিয়া-পাকিস্তান ও ইয়েমেন।
বাংলাদেশের পাসপোর্টধারীরা বিশ্বের ২০টি দেশে ভিসামুক্ত ভ্রমণ ও ২০টি দেশে ভিসা-অন-অ্যারাইভাল কিংবা ইটিএ সুবিধা পান। হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্সে লাল-সবুজ পতাকার অবস্থান এখন ৯৯ নম্বরে।
২০১৯ সালের শীর্ষ ১০ শক্তিশালী পাসপোর্ট
১. জাপান, সিঙ্গাপুর (১৯০ দেশ)
২. ফিনল্যান্ড, জার্মানি, দক্ষিণ কোরিয়া (১৮৮ দেশ)
৩. ডেনমার্ক, ইতালি, লাক্সেমবার্গ (১৮৭ দেশ)
৪. ফ্রান্স, স্পেন, সুইডেন (১৮৬ দেশ)
৫. অস্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ডস, পর্তুগাল (১৮৫ দেশ)
৬. বেলজিয়াম, কানাডা, গ্রিস, আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সুইজারল্যান্ড (১৮৪ দেশ)
৭. মাল্টা, চেক রিপাবলিক (১৮৩ দেশ)
৮. নিউজিল্যান্ড (১৮২ দেশ)
৯. অস্ট্রেলিয়া, লিথুয়ানিয়া, স্লোভাকিয়া (১৮১ দেশ)
১০. হাঙ্গেরি, আইসল্যান্ড, লাটভিয়া, স্লোভেনিয়া (১৮০ দেশ)
২০১৯ সালের দুর্বল ১০ পাসপোর্ট
১০০. লেবানন, উত্তর কোরিয়া (৩৯ দেশ)
১০১. নেপাল (৩৮ দেশ)
১০২. লিবিয়া, ফিলিস্তিন, সুদান (৩৭ দেশ)
১০৩. ইয়েমেন (৩৩ দেশ)
১০৪. সোমালিয়া, পাকিস্তান (৩১ দেশ)
১০৫. সিরিয়া (২৯ দেশ)
১০৬. ইরাক (২৭ দেশ)
১০৭. আফগানিস্তান (২৫ দেশ)