হাওর বার্তা ডেস্কঃ মারা গেছেন কথাসাহিত্যিক রিজিয়া রহমান। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না লিল্লাহি রাজিউন। আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
লেখিকার ছেলে আবদুর রহমান তপু সাংবাদিককে খবরটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দীর্ঘ দিন ধরে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন রিজিয়া রহমান। সর্বশেষ রক্তে সেপটেসিনিয়া জটিলতা ধরা পড়ে।
আরও জানান, উত্তরা পাঁচ সেক্টর মসজিদে শুক্রবার আসর নামাজের পর রিজিয়া রহমানের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এর পর মিরপুরে সমাহিত হবেন।
এই লেখিকা ১৯৩৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর ভারতের কলকাতার ভবানীপুরে এক সংস্কৃতিমনা পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ছয় দশক ধরে বাংলা গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, রম্যরচনা ও শিশুসাহিত্যে অবদান রাখেন তিনি।
উপন্যাসে অবদানের জন্য ১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন রিজিয়া রহমান। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার চলতি বছর তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে।
রিজিয়া রহমান ইডেন মহিলা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৬৫ সালে এই কলেজ থেকেই স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
সাহিত্য পত্রিকা ‘ত্রিভুজ’-এর সম্পাদক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন রিজিয়া রহমান। জাতীয় জাদুঘরের পরিচালনা বোর্ডের ট্রাস্টি ও জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের কার্য পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তিন বছর বাংলা একাডেমির কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যও ছিলেন।
রিজিয়া রহমানের গল্পগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে অগ্নিস্বাক্ষরা, নির্বাচিত গল্প, চার দশকের গল্প ও দূরে কোথাও। উল্লেখযোগ্য উপন্যাস-ঘর ভাঙা ঘর, উত্তর পুরুষ, বং থেকে বাংলা, অরণ্যের কাছে, অলিখিত উপাখ্যান, শিলায় শিলায় আগুন, একাল চিরকাল, সবুজ পাহাড়, একটি ফুলের জন্য, বাঘবন্দী, আবে-রওয়াঁ ও উৎসে ফেরা।
বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও একুশে পদক ছাড়াও অসংখ্য স্বীকৃতি আছে রিজিয়া রহমানের ঝুলিতে। এর মধ্যে আছে যশোর সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার, হুমায়ুন কাদির স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার, আসফ-উদ-দৌলা রেজা স্মৃতি পুরস্কার, বাংলাদেশ লেখক সংঘ সাহিত্য পুরস্কার, কমর মুশতারি সাহিত্য পদক, অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার ও নাসিরউদ্দীন স্বর্ণপদক।