ঢাকা ০৫:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্বের দ্বিতীয় উঁচু মিনারের মসজিদ গোপালপুরে: পর্যটন সম্ভাবনায় নতুন দ্বার

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:২২:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ অগাস্ট ২০১৯
  • ২৭৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ টাঙ্গাইলের গোপালপুরে নির্মিত হচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় উঁচু মিনারের ২০১ গম্বুজবিশিষ্ট নয়নাভিরাম মসজিদ। মিনারের উচ্চতা ৪৫১ ফুট যা ৫৭ তলা ভবনের সমান। এটি নির্মিত হচ্ছে টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার ঝাওয়াইল ইউনিয়নের দক্ষিণ পাথালিয়া গ্রামে ঝিনাই নদীর তীরে। জানা যায়, বর্তমানে সবচেয়ে উঁচু মিনার রয়েছে ভারতের দিল্লিতে অবস্থিত কতুব মিনার। যার উচ্চতা ২৪০ ফুট। সুলতান মুহাম্মদ ঘুরীর সেনাপতি কতুব উদ্দিন আইবেক ১১৯২ সালে চৌহান রাজা পৃথিরাজকে তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধে, বিজয় স্মরণীয় করে রাখতে এ মিনার তৈরি করেছিলেন। এটি তাজমহলের চেয়েও বেশি পর্যটক পরিদর্শন করেন।

আর বিশ্বের সর্বোচ্চ মিনারটি মরক্কোর কাসাব্লাংকায় দ্বিতীয় হাসান মসজিদে অবস্থিত। এর উচ্চতা ৬৮৯ ফুট যা ৬০ তলা ভবনের সমান। বাংলাদেশসহ বিশ্বের মসজিদের ইতিহাসে জায়গা করে নিতে যাচ্ছে নির্মাণাধীন এ ২০১ গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটি।

এখানে দেশি-বিদেশি পর্যটক, ওলি-আউলিয়া ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আগমন ঘটবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। মসজিদ নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ স্ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের ভাই মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক মো. হুমায়ুন কবির জানান, প্রায় ১৫ বিঘা জমির ওপর এ মসজিদ কমপ্লেক্সে থাকবে অত্যাধুনিক সব সুবিধা।

পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হওয়ার পরও মসজিদটিতে সহস্রাধিক ফ্যান লাগানো হবে। মসজিদের ছাদের মাঝখানে রয়েছে ৮১ ফুট উচ্চতার একটি বড় গম্বুজ, এর চারদিকে রয়েছে ১৭ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট ২০০টি গম্বুজ। মূল মসজিদের চার কোণে থাকছে ১০১ ফুট উচ্চতার চারটি মিনার। পাশাপাশি থাকবে ৮১ ফুট উচ্চতার আরও চারটি মিনার। ১৪৪ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪৪ ফুট প্রস্থের দ্বিতল মসজিদটিতে নামাজ আদায় করতে পারবেন একসঙ্গে প্রায় ১৫ হাজার মুসল্লি।
দেয়ালের টাইলসে অঙ্কিত থাকবে ৩০ পারা পবিত্র কোরআন শরীফ। যে কেউ বসে বা দাঁড়িয়ে দেয়ালের কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করতে পারবেন। আর মসজিদের প্রধান দরজা তৈরিতে ব্যবহার করা হবে ৫০ মণ পিতল। আজান প্রচারের জন্য দক্ষিণ পাশে নির্মাণ করা হবে উঁচু মিনার। উচ্চতার হিসেবে মিনারটি হবে ৫৭ তলা ভবনের সমান অর্থাৎ ৪৫১ ফুট। মিহরাবের দুই পাশে লাশ রাখার জন্য হিমাগার তৈরি করা হবে। নির্মাণাধীন অবস্থাতেই এ ২০১ গম্বুজ মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় শুরু হয়েছে।

মসজিদের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে নির্মাণ করা হচ্ছে পৃথক দুটি পাঁচতলা ভবন। সেখানে থাকবে দুস্থ নারীদের জন্য বিনামূল্যের হাসপাতাল, এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, দুস্থ মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা।

উত্তর পাশের ভবনটি দেশি-বিদেশি অতিথিদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থার জন্য। পাশেই নির্মাণ করা হবে দূর-দূরান্ত থেকে আগত মুসল্লিদের জন্য ডাক বাংলো ও বিনামূল্যে খাবার বিতরণের ব্যবস্থা। চারপাশে থাকবে দেশি-বিদেশি ফুলের বাগান। পশ্চিম পাশে ঝিনাই নদীর তীর থেকে মসজিদ পর্যন্ত সিঁড়ি থাকবে। পারাপারের সুবিধার্থে নদীতে নির্মাণ করা হবে সেতু।

হুমায়ুন কবির আরও জানান, টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা সদর থেকে সাত কিলোমিটার পশ্চিমে ঝিনাই নদীর তীরে অবস্থিত সুদৃশ্য এ মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে ২০১৩ সালের ১৩ জানুয়ারি।

মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন কল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের মা রিজিয়া খাতুন। এ বছরের শেষের দিকে এর নির্মাণ কাজ শেষ হবে এবং পবিত্র কাবা শরীফের ইমামের ইমামতির মাধ্যমে মসজিদের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার পরিকল্পনা রয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

বিশ্বের দ্বিতীয় উঁচু মিনারের মসজিদ গোপালপুরে: পর্যটন সম্ভাবনায় নতুন দ্বার

আপডেট টাইম : ০৮:২২:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ অগাস্ট ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ টাঙ্গাইলের গোপালপুরে নির্মিত হচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় উঁচু মিনারের ২০১ গম্বুজবিশিষ্ট নয়নাভিরাম মসজিদ। মিনারের উচ্চতা ৪৫১ ফুট যা ৫৭ তলা ভবনের সমান। এটি নির্মিত হচ্ছে টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার ঝাওয়াইল ইউনিয়নের দক্ষিণ পাথালিয়া গ্রামে ঝিনাই নদীর তীরে। জানা যায়, বর্তমানে সবচেয়ে উঁচু মিনার রয়েছে ভারতের দিল্লিতে অবস্থিত কতুব মিনার। যার উচ্চতা ২৪০ ফুট। সুলতান মুহাম্মদ ঘুরীর সেনাপতি কতুব উদ্দিন আইবেক ১১৯২ সালে চৌহান রাজা পৃথিরাজকে তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধে, বিজয় স্মরণীয় করে রাখতে এ মিনার তৈরি করেছিলেন। এটি তাজমহলের চেয়েও বেশি পর্যটক পরিদর্শন করেন।

আর বিশ্বের সর্বোচ্চ মিনারটি মরক্কোর কাসাব্লাংকায় দ্বিতীয় হাসান মসজিদে অবস্থিত। এর উচ্চতা ৬৮৯ ফুট যা ৬০ তলা ভবনের সমান। বাংলাদেশসহ বিশ্বের মসজিদের ইতিহাসে জায়গা করে নিতে যাচ্ছে নির্মাণাধীন এ ২০১ গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটি।

এখানে দেশি-বিদেশি পর্যটক, ওলি-আউলিয়া ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আগমন ঘটবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। মসজিদ নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ স্ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের ভাই মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক মো. হুমায়ুন কবির জানান, প্রায় ১৫ বিঘা জমির ওপর এ মসজিদ কমপ্লেক্সে থাকবে অত্যাধুনিক সব সুবিধা।

পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হওয়ার পরও মসজিদটিতে সহস্রাধিক ফ্যান লাগানো হবে। মসজিদের ছাদের মাঝখানে রয়েছে ৮১ ফুট উচ্চতার একটি বড় গম্বুজ, এর চারদিকে রয়েছে ১৭ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট ২০০টি গম্বুজ। মূল মসজিদের চার কোণে থাকছে ১০১ ফুট উচ্চতার চারটি মিনার। পাশাপাশি থাকবে ৮১ ফুট উচ্চতার আরও চারটি মিনার। ১৪৪ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪৪ ফুট প্রস্থের দ্বিতল মসজিদটিতে নামাজ আদায় করতে পারবেন একসঙ্গে প্রায় ১৫ হাজার মুসল্লি।
দেয়ালের টাইলসে অঙ্কিত থাকবে ৩০ পারা পবিত্র কোরআন শরীফ। যে কেউ বসে বা দাঁড়িয়ে দেয়ালের কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করতে পারবেন। আর মসজিদের প্রধান দরজা তৈরিতে ব্যবহার করা হবে ৫০ মণ পিতল। আজান প্রচারের জন্য দক্ষিণ পাশে নির্মাণ করা হবে উঁচু মিনার। উচ্চতার হিসেবে মিনারটি হবে ৫৭ তলা ভবনের সমান অর্থাৎ ৪৫১ ফুট। মিহরাবের দুই পাশে লাশ রাখার জন্য হিমাগার তৈরি করা হবে। নির্মাণাধীন অবস্থাতেই এ ২০১ গম্বুজ মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় শুরু হয়েছে।

মসজিদের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে নির্মাণ করা হচ্ছে পৃথক দুটি পাঁচতলা ভবন। সেখানে থাকবে দুস্থ নারীদের জন্য বিনামূল্যের হাসপাতাল, এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, দুস্থ মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা।

উত্তর পাশের ভবনটি দেশি-বিদেশি অতিথিদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থার জন্য। পাশেই নির্মাণ করা হবে দূর-দূরান্ত থেকে আগত মুসল্লিদের জন্য ডাক বাংলো ও বিনামূল্যে খাবার বিতরণের ব্যবস্থা। চারপাশে থাকবে দেশি-বিদেশি ফুলের বাগান। পশ্চিম পাশে ঝিনাই নদীর তীর থেকে মসজিদ পর্যন্ত সিঁড়ি থাকবে। পারাপারের সুবিধার্থে নদীতে নির্মাণ করা হবে সেতু।

হুমায়ুন কবির আরও জানান, টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা সদর থেকে সাত কিলোমিটার পশ্চিমে ঝিনাই নদীর তীরে অবস্থিত সুদৃশ্য এ মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে ২০১৩ সালের ১৩ জানুয়ারি।

মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন কল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের মা রিজিয়া খাতুন। এ বছরের শেষের দিকে এর নির্মাণ কাজ শেষ হবে এবং পবিত্র কাবা শরীফের ইমামের ইমামতির মাধ্যমে মসজিদের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার পরিকল্পনা রয়েছে।