হাওর বার্তা ডেস্কঃ মিল্ক ভিটাসহ দেশীয়ভাবে উৎপাদিত কোনো ব্র্যান্ডের পাস্তুরিত দুধে স্বাস্থ্যঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) পুষ্টি বিভাগ। বুধবার সচিবালয়ে দুধ নিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক, সালফা ড্রাগ ও ভারী ধাতুর উপস্থিতি বিশ্লেষণ ফলাফল প্রকাশ করে এ কথা জানায় সরকারি এই সংস্থাটি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশে দুধ নিয়ে বিতর্কের পর ১৬টি নমুনা ভারতে পাঠানো হয়। সেখানকার গবেষণায় ক্ষতিকর মাত্রায় কোনো ধাতব পদার্থের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আ ব ম ফারুকের গবেষণায় দুধে অ্যান্টিবায়েটিক পাওয়া নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যে এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হলো। পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য পুষ্টি ইনস্টিটিউটের আরেকটি গবেষণায় দাবি করা হয়, দুধে সিসার মতো ভারী ধাতু আছে। এই ঘটনায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নিরাপদ খাদ্য আদালতে মামলাও হয়েছে বেশ কয়েকটি কোম্পানির বিরুদ্ধে।
বিষয়টি উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। চলতি সপ্তাহে হাইকোর্ট থেকে পাস্তুরিত দুধ উৎপাদনের ওপর নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া হয়। পরে সেই আদেশ স্থগিত করে আপিল বিভাগ।
দুধে অ্যান্টিবায়োটিক এবং সিসা কিন্তু অভিনব কোনো বিষয় নেই। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এমনকি ভারতে আলাদা মানদণ্ড আছে। এতে দেখা যায় আটটি অ্যান্টিবায়েটিক এবং নির্ধারিত মাত্রার মধ্যে সিসা থাকে দুধে। তবে বাংলাদেশ কতটা পরিমাণে থাকলে সেই দুধকে নিরাপদ বলা যাবে, সে বিষয়ে কিছু বলা নেই।
দুধ নিয়ে এত আলোচনার পর বাজারে এরই মধ্যে তরল দুধের চাহিদা কমে গেছে। বেড়েছে গুঁড়া দুধের চাহিদা। আর কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা করে দামও বেড়ে গেছে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের পুষ্টি বিভাগের পরিচালক মনিরুল ইসলাম বুধবার তাদের গবেষণা ফলাফল উপস্থাপন করেন। তিনি জানান, দেশীয়ভাবে উৎপাদিত তরল দুধ নিয়ে বিতর্ক ওঠার পর তাদের পক্ষ থেকে দুধে অ্যান্টিবায়োটিক, সালফা ড্রাগ ও ভারী ধাতুর উপস্থিতি বিশ্লেষণ করার জন্য ১৬টি নমুনা ভারতের চেন্নাইয়ে পাঠানো হয়।
সেখানে পরীক্ষায় পরীক্ষায় দুধে কোনো প্রকার ক্ষতিকর মাত্রায় ভারী ধাতু ও সালফা ড্রাগ পাওয়া যায়নি। দেশে উৎপাদিত দুধে কোনো প্রকার স্বাস্থ্য ঝুঁকি নেই। এ নিয়ে উদ্বেগ বা কোনো উৎকণ্ঠা নেই।
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।