হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ছাড়া আর কেউ ভিআইপি নয়, বাকিরা সবাই রাষ্ট্রের চাকর বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি এক নম্বর ফেরিঘাটে যুগ্ম সচিবের অপেক্ষায় প্রায় তিন ঘণ্টা ফেরি না ছাড়ায় স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে করা রিটের শুনানিকালে বুধবার আদালত এ মন্তব্য করেন।
বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে রিটের শুনানি হয়। শুনানি শেষে তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনায় অতিরিক্ত সচিবের নিচে নন, এমন পদমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। জনপ্রশাসন সচিবের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী জহির উদ্দিন লিমন।
উল্লেখ্য, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হওয়ার পর নড়াইল কালিয়া পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র তিতাস ঘোষকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা থেকে নেয়া হচ্ছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তাকে বহন করা অ্যাম্বুলেন্সের গতি রোধ করে তিন ঘণ্টা আটকে রাখে শিমুলিয়া ঘাটের ফেরি কর্তৃপক্ষ। কারণ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আবদুস সবুর মন্ডল ঢাকায় ফিরবেন। তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর সচিব আসার পর ছাড়া হয় ফেরি। ততক্ষণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয় তিতাসের।
নিহত তিতাসের স্বজনরা বলেন, দেরি হলে ছেলেটি মারা যেতে পারে, এই আশঙ্কার কথা বারবার বলেছিলেন তারা। কিন্তু তাদের কথায় কেউ কর্ণপাত করেনি। তিতাসকে বহনকারী অ্যাম্বুল্যান্স ছাড়তে ভেজা চোখে অনেক কাকুতি মিনতি করেছেন। পায়ে পড়েছেন! তবুও মন গলেনি ঘাটের দায়িত্বরতদের। তারা যুগ্ম সচিব আব্দুস সবুর মণ্ডলের গাড়ির অপেক্ষায় ছিলেন।
তার জন্য প্রায় তিন ঘণ্টা ফেরি থামিয়ে রাখেন। এমন কি প্রতিকার মেলেনি জরুরি নম্বর ৯৯৯-এ কল করেও। স্থানীয় পুলিশ, সেনাবাহিনীর লোকজন, পুলিশ আইজিপিকে বলেও কোনো সাড়া মেলেনি। তাছাড়া পুলিশের মাধ্যমে সেই ভিআইপিকে অবস্থার কথা জানায় তিতাসের স্বজনরা। কিন্তু তিনি কোন ভ্রুক্ষেপই করেন নি।
অবশেষে তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর ফেরিতে ওঠে অ্যাম্বুলেন্সটি। কিন্তু এর মধ্যে মস্তিষ্কে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে অ্যাম্বুলেন্সেই মারা যায় তিতাস। এ ঘটনা তদন্তে সোমবার (২৯ জুলাই) তিনটি কমিটি গঠন করা হয়।