হাওর বার্তা ডেস্কঃ একটি সেতুর দাবি এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের। আর এ সেতুটি হলেই যাতায়াতের দুঃখ ঘুছাবে দশ গ্রামের প্রায় দশ হাজার মানুষের। ফটিকছড়ি উপজেলার অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র নারায়নহাট বাজার। ওই বাজারের নিকট পূর্ব-পশ্চিমে প্রবাহিত হালদা নদী।
এ নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণ-গণমানুষের দাবি স্বাধীনতার পর হতে। কিন্তু এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। অথচ যোগাযোগ ব্যবস্থার দিক থেকে সেতুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি স্থায়ী সেতুর অভাবে এলাকার হাজার হাজার মানুষকে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এখানে নদীর উত্তর পাড় ঘেষে নারায়নহাট বাজার, নারায়নহাট হাইস্কুল, নারায়নহাট কলেজ, নারায়নহাট ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, ব্যাংক সহ নানা গুরুত্ব পূর্ণ প্রতিষ্ঠান অবস্থিত।
অপর পাড়ে নারায়নহাট ফরেস্ট রেঞ্জ অফিস, নারায়নহাট ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা, হযরত শাহ সুন্দরের মাজার সহ নানা জনগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে। তাছাড়া, দক্ষিন পাড়ে হাঁপানিয়া, সুন্দরপুর এলাকার হাজার হাজার মানুষের নিয়মিত যাতায়াত নারায়নহাট বাজারে।
এছাড়া স্কুল কলেজ, মাদ্রাসায়সহ প্রতিদিন হাজারো শিক্ষার্থী নিয়মিত এ নদী পার হয়ে যাতায়াত করতে হয়। অপরদিকে, ফরেস্ট অফিসের লোকজন কোন চোরাই কাঠের গাড়ি আটক করলে ব্রিজের অভাবে সেটি তাদের হেফাজতে নিয়ে যেতে পারেন না। ফলে রাতের আধাঁরে আটককৃত সেই কাঠ পুনরায় চোরের দল নিয়ে যেতে অসুবিধা হয় না।
এ প্রসঙ্গে নারায়নহাট জমিদার পাড়া এলাকার বাসিন্দা রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, দু‘পারের মানুষের নিয়মিত যাতায়তের কথা বিবেচনা করে জমিদার পাড়ার কৃতি সন্তান এড. শাহজাহান চৌধুরী, শিল্পপতি নাছির উদ্দিন চৌধুরী, নারায়নহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো.হারুন সহ এলাকার লোকজন, হাঁপানিয়া, সুন্দরপুর এবং নারায়নহাট বাজারের কিছু ব্যবসায়ী মিলে বহু আগে থেকেই একটি সেতু বাস্তবায়ন কমিটি করে চাঁদা তুলে এবং ফরেস্টের লোকজনের সহায়তায় সেখানে অস্থায়ীভাবে লোহার পাইপের খুটি দিয়ে সাঁকো তৈরি করে।
কিন্তু গত বন্যায় হালদার পানিতে সাঁকোটি ভেসে যায়। বেশ কিছুদিন ভোগান্তির পর ওই কমিটি সম্প্রতি আবার কাঠের সাঁকোটি তৈরি করে। কিন্তু এটি দিয়ে কোনরকমে পারাপার হতে হচ্ছে। তাই জরুরীভিত্তিতে এখানে একটি সেতু নির্মাণ প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে ফটিকছড়ির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সায়েদুল আরেফীন বলেন, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য এবং সাধারন মানুষের ভোগান্তি দুর করতে নারায়নহাটে হালদা নদীর উপর একটি স্থায়ী সেতু নির্মানে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এল.জি.ই.ডি সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থ বছরে দেশের বিভিন্ন জেলায় স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে ২’শ ১৭টি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এরমধ্যে, ফটিকছড়িতে ৩টি সেতু রয়েছে।
তম্মধ্যে, নাজিরহাট বাজার সংলগ্ন ১টি, রোসাংগিরী শীলের হাটে ১টি এবং উত্তর ফটিকছড়ির নারায়নহাট বাজার সংলগ্ন ১টি সেতু রয়েছে। সেতুগুলি নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে মাঠপর্যায়ে জরিপ চালাচ্ছে সরকার।