হাওর বার্তা ডেস্কঃ ‘বাঁশবাগানে মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ঐ, নদীর ওপর ব্রিজ আছে রাস্তা গেল কই’? এভাবেই ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলের বাসিন্দা এনায়েত হোসাইন। শুধু তিনিই নন, তার মতো আরও অনেকেই ওই পোস্টে মন্তব্য করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন সেতুটি পুনর্নির্মাণের জন্য। উজান থেকে নেমে আসা পানি ও অতিবৃষ্টিতে পানি বেড়ে যাওয়ায় কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর, হোসেনপুর, নিকলী ও অষ্টগ্রাম উপজেলায় সংযোগসড়ক না থাকায় পাঁচটি সেতু চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে আছে।
জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে নিকলী উপজেলার কামারপাড়া ও দক্ষিণপাড়া গ্রামের মধ্যবর্তী খালের ওপর সেতুটি নির্মাণের জন্য ২৮ লাখ ৬৭ হাজার ১৬৫ টাকা বরাদ্দ দেয়। সেতু নির্মাণের কাজ পায় গাজীপুরের শ্রীপুরের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স বাচ্চু এন্টারপ্রাইজ। ২০১৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৫ সালের এপ্রিলে তা শেষ হয়। এই সেতুর দৈর্ঘ্য ৪০ ফুট ও প্রস্থ ১৪ ফুট।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল শাখার সাথে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আঁতাত করে সংযোগসড়ক তৈরি না করেই বিল উত্তোলন করে নিয়ে যায়।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিকলী উপজেলার কামারপাড়া ও দক্ষিণপাড়া গ্রামের মধ্যবর্তী খালের ওপর নির্মিত সেতুর দুই পাশে বালু ফেলে সংযোগসড়ক তৈরি করে। নির্মাণের পরপরই বর্ষার পানিতে বালু ভেসে গিয়ে সেতুটি চলাচলে কাজে আসছে না। সেতুর দুই পাশে মাটি নেই। নিচে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
সেতুটির দুই পাশে ৪৫ ফুট করে মাটি ভরাট করে রাস্তা করে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তা করেনি। তারপরও তারা ফাইনাল বিল নিয়ে গেছে।
স্থানীয়রা আরও জানায়, সেতুর নিচ দিয়ে যাতায়াতে অনেক সময় গর্তে পড়ে যেতে হয়। যে সেতুর ওপর ওঠার রাস্তাই নেই-তা তৈরি করে লাভ কী। সেতু হওয়ার আগেই ভালো ছিল।
স্থানীয়রা জানায়, কুলিয়ারচর উপজেলার দক্ষিণ লক্ষীপুর ভাটিপাড়ায় ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর রাস্তাবিহীন অপরিকল্পিত সেতুটি তিন বছর ধরে অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুটি নির্মাণ করে সংযোগসড়ক তৈরি না করায় স্থানীয় জনগণকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানায়, হোসেনপুর উপজেলার ঝিনারী ইউনিয়নের নামা ঝিনারী গ্রামের মধ্যে বগামারা বিলের শাখা খালের উপর একটি সেতু ১৯৯৭ সালে তৈরি করা হয়। পরে কয়েকবার বরাদ্দ হয়েছে সেতুটি সংস্কারের জন্য। কিন্ত এসব বরাদ্দ উঠিয়ে নিয়ে গেছে অসাধুরা।
অষ্টগ্রাম উপজেলার কাস্তল ইউনিয়নের ছবুরের খালের উপর নির্মাণ করা হয় একটি বৃহৎ সেতু। নির্মাণের পরপরই সেতুর দুই পাশের মাটি সরে গেছে। ফলে এই সেতু দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল করছে মানুষ।