হাওর বার্তা ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া সাহা নামের এক বাংলাদেশি নারী সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে যে তথ্য দিয়েছেন তা মিথ্যা। প্রিয়া সাহার ওই বক্তব্য আমি সঠিক মনে করি না। শুক্রবার (১৯ জুলাই) রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত মিলার এ কথা বলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার।
মিলার বলেন, আমি বাংলাদেশের আটটি বিভাগেই ঘুরেছি। মসজিদ, মন্দির ও চার্চে গিয়ে ইমাম পুরোহিতদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমার কাছে মনে হয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায় একে অপরকে শ্রদ্ধা করে। প্রিয়া সাহার ওই বক্তব্য সঠিক মনে করি না। বরং ধর্মীয় সম্প্রীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি উল্লেখযোগ্য নাম।
প্রসঙ্গত, বুধবার ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার বিভিন্ন দেশের ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেখানে ১৬টি দেশের ২৭ প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। তখন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহাও মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান।
ওই সাক্ষাৎকালে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বলা প্রিয়া সাহার বক্তব্য ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। এ ঘটনা নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
ওই ভিডিওতে শোনা যায়, প্রিয়া সাহা মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বলছেন-‘আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান গুম (ডিসঅ্যাপিয়ার) হয়েছে। দয়া করে আমাদের লোকজনকে সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশে থাকতে চাই।’
এরপর তিনি বলেন, ‘এখন সেখানে ১ কোটি ৮০ লাখ সংখ্যালঘু রয়েছে। আমরা আমাদের বাড়িঘর খুইয়েছি। তারা আমাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে, আমাদের ভূমি দখল করে নিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো বিচার পাইনি।’
ভিডিওতে দেখা যায়, একটা পর্যায়ে ট্রাম্প নিজেই সহানুভূতিশীল হয়ে ওই নারীর সঙ্গে হাত মেলান। ‘কারা এমন নিপীড়ন চালাচ্ছে?’ ট্রাম্পের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রিয়া সাহা বলেন, ‘দেশটির মুসলিম মৌলবাদীরা এসব করছে। তারা সবসময় রাজনৈতিক আশ্রয় পাচ্ছে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বলা প্রিয়া সাহার ওই বক্তব্য নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, প্রিয়া সাহার দেয়া সমস্ত বক্তব্য মিথ্যা ও বানোয়াট। বিষয়টি অসাম্প্রদায়িকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত উপস্থাপনকারী বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ করেছে বলে মত দিয়েছেন অনেকেই। বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতির বহু উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে।
’৭১-এর চেতনায় গঠিত যে দেশে সব ধর্মের নাগরিক সমান অধিকারে সহাবস্থান করে বিশ্বে অসাম্প্রদায়িকতার মডেল হিসেবে পরিণত হয়েছে সেই দেশ নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে প্রিয়া সাহার এমন বক্তব্য কখনই মেনে নেয়ার মতো নয় বলেও অভিমত দিচ্ছেন সচেতনরা।