হাওর বার্তা ডেস্কঃ যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায় এবার আখের ফলন ভালো হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় খেত থেকে আগাম আখ কেটে বাজারে বিক্রি করছেন চাষিরা। এমনকি দামও ভালো। এতে খুশি আখচাষিরা।
অনুকূল আবহাওয়া এবং রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় আখের ফলন ভালো হয়েছে বলে আখচাষি ও কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় গত বছরের চেয়ে এবার আখের চাষ বেশি হয়েছে। গত বছর উপজেলায় আখের চাষ হয়েছিল ৮০ হেক্টর জমিতে। এবার চাষ হয়েছে ১১০ হেক্টর জমিতে।
অর্থাৎ গত বছরের চেয়ে এবার ৩০ হেক্টর বেশি জমিতে আখের চাষ হয়েছে। উপজেলার সব জমিতে এবার গেন্ডারি জাতের আখ চাষ হয়েছে। এবার আবহাওয়া অনুকূল থাকায় আখখেতে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম ছিল। এ ছাড়া এবার চাষিদের ভালো জাতের আখ চাষের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা ভালো জাত নির্বাচন করেছেন। এ কারণে উপজেলায় এবার আখের ফলন খুব ভালো হয়েছে।
উপজেলার দোহাকুলা ইউনিয়নের শুকদেবনগর, ছাইবাড়িয়া, নওয়াপাড়া, খলশী, বহরামপুর ও ইন্দ্রা গ্রামে বেশি আখ চাষ হয়েছে। এ ছাড়া জামদিয়া ইউনিয়নের দাঁতপুর ও করিমপুর; দরাজহাট ইউনিয়নের দরাজহাট, হাবুল্যা, মহিরন ও লক্ষ্মীপুর এবং নারিকেলবাড়িয়া ও রায়পুর ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় আখ চাষ হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, খেত থেকে আখ কাটা, পরিষ্কার করা এবং বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। এ সময় কয়েকজন চাষি বলেন, গত বছর আখের দাম ভালো ছিল। এ জন্য তাঁরা এবার বেশি পরিমাণ জমিতে আখের চাষ করেছেন। এবার মৌসুমজুড়ে আবহাওয়া ভালো ছিল। রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণও কম ছিল। এ জন্য এবার আখের খুব ভালো ফলন হয়েছে।
দোহাকুলা গ্রামের আখচাষি তরিকুল ইসলাম এবার ২৬ শতক জমিতে আখ চাষ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আখের চারা ক্রয় থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। খেত থেকে আখ কেটে বিক্রি শুরু করেছি। দাম ভালো পাচ্ছি। আশা করছি, এবার ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার আখ বিক্রি করতে পারব।’
বাঘারপাড়া গ্রামের কৃষক ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘এবার প্রথম আমি ১২ শতক জমিতে আখের চাষ করেছি। এতে আমার ৩০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। ফলন খুব ভালো হয়েছে। আমি এখনো আখ কাটা শুরু করিনি। এবার আখের দাম ভালো। খেত থেকে প্রতিটি আখ ২৫ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আশা করছি, ৭০ হাজার টাকার আখ বিক্রি করতে পারব।’
শুকদেবনগর গ্রামের আখচাষি ওসমান গনি বলেন, এ বছর আখের ফলন বেশ ভালো হয়েছে। দামও ভালো। এবার ভালো লাভ হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল আলম সাংবাদিককে বলেন, ‘গত বছর আখের ফলন ভালো হয়েছিল। দামও ভালো ছিল। এ জন্য এবার কৃষক বেশি পরিমাণ জমিতে আখের চাষ করেছেন। এবার মৌসুমজুড়ে অনুকূল আবহাওয়া ছিল। রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে চাষিদের পরামর্শ দিয়েছি। ফলনও ভালো হয়েছে, চাষিরা এবার দামও ভালো পাচ্ছেন।’