ঢাকা ০৫:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রংপুরে বন্যায় প্রায় ৩ কোটি টাকার মাছ ক্ষতিগ্রস্ত

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:১৩:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই ২০১৯
  • ২৫৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর অতি বৃষ্টির কারণে চলমান বন্যায় এখন পর্যন্ত রংপুর জেলায় কয়েকশ মৎস্য চাষী ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন। ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ টাকা। জেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৩ উপজেলায় ছোট-বড় মিলে মাছ এবং পোনা উৎপাদনকারী ৫৮২টি পুকুর ভেসে গেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ টাকা বলে জেলা মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে।

জেলার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন গংগাচড়া উপজেলার মৎস্য চাষীরা। উপজেলার মোহনা গ্রামের মৎস্য চাষী সামিউল ইসলাম জানান, ৫০ শতকের পুকুরের মাছ রোববার রাতে ভেসে গেছে। ভেসে যাওয়া মাছের মধ্যে পাবদা, রুই, কাতলা ও গুলসা জাতীয় মাছ এবং পোনা। এখন সাড়ে ৩ একর পুুকুরে পানি প্রবেশ করা শুরু করেছে। তাই মাছ যাতে ভেসে যেতে না পারে এজন্য পুকুরের চারিদিকে নেট দিয়ে ঘিরে দিয়েছেন।

তিনি জানান, পানি বৃদ্ধি পেলে ১৫ লাখ টাকার ক্ষতির সম্মুখিন হতে পারেন। তিনি অভিযোগ করেন, ২ বছর আগে একবার ক্ষতিগ্রস্ত হলেও মৎস্য অফিস থেকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ লিখে নিয়ে গেলেও কোনরকম সহযোগিতা পাননি। এর পরেই ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলা হচ্ছে কাউনিয়া।

ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষিরা জানান, পুকুরের চারিদিকে নেট এবং বাঁশের বানা দিয়েও মাছ রক্ষা করতে পারেননি। পানির তোড়ে পুকুরের চাষকৃত মাছ ভেসে গেছে। গংগাচড়া উপজেলায় বন্যায় ভেসে যাওয়া পুকুরের সংখ্যা হচ্ছে ৪৯৫টি। ভেসে যাওয়া মাছের পরিমাণ হচ্ছে ৭৫ দশমিক ৮০ মেট্রিক টন। যার আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ৩৬ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। ভেসে গেছে ৪ লাখেরও বেশি পোনা। অবকাঠামেরা ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২০ লাখ ৫৫ হাজার টাকার। কাউনিয়া উপজেলায় বন্যায় ভেসে যাওয়া পুকুরের সংখ্যা হচ্ছে ৫০টি। ভেসে যাওয়া মাছের পরিমাণ হচ্ছে ৪ দশমিক ২৭ মেট্রিক টন। যার আনুমানিক মূল্য ৭ লাখ ১৫ হাজার টাকা। অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার টাকার।

পীরগাছা উপজেলায় বন্যায় ভেসে যাওয়া পুকুরের সংখ্যা হচ্ছে ৩৭টি। ভেসে যাওয়া মাছের পরিমাণ হচ্ছে ৬ দশমিক ৬৬ মেট্রিক টন। যার আনুমানিক মূল্য ৭ লাখ ৬২ হাজার টাকা। অবকাঠামেরা ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৩১ হাজার টাকা।

জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কাজী আতিয়াহ্ তাইয়েবী জানান, চলমান বন্যায় রোববার পর্যন্ত জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষিদের তালিকা করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ঝুঁকিতে থাকা মৎস্য চাষিদের চাষকৃত মাছ যাতে ভেসে যেতে না পারে এজন্য পুকুরের চারিদিকে জাল দিয়ে ঘিরে দেয়ার জন্য মৎস্য বিভাগ থেকে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বরুন চন্দ্র বিশ্বাস জানান, বন্যায় ভেসে যাওয়া মোট পুকুরের সংখ্যা হচ্ছে ৫৮২টি। ভেসে যাওয়া মাছের আনুমানিক পরিমাণ হচ্ছে ৮৭ দশমিক ৬৯ মেট্রিক টন। যার আনুমানিক মূল্য হচ্ছে প্রায় ২ কোটি ৮৫ লাখ ১০ হাজার টাকা। ২৩ লাখ ১১ হাজার টাকার সমপরিমাণ অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে। সর্বমিলে ৩ কোটিরও বেশি টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

রংপুরে বন্যায় প্রায় ৩ কোটি টাকার মাছ ক্ষতিগ্রস্ত

আপডেট টাইম : ০৫:১৩:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর অতি বৃষ্টির কারণে চলমান বন্যায় এখন পর্যন্ত রংপুর জেলায় কয়েকশ মৎস্য চাষী ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন। ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ টাকা। জেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৩ উপজেলায় ছোট-বড় মিলে মাছ এবং পোনা উৎপাদনকারী ৫৮২টি পুকুর ভেসে গেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ টাকা বলে জেলা মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে।

জেলার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন গংগাচড়া উপজেলার মৎস্য চাষীরা। উপজেলার মোহনা গ্রামের মৎস্য চাষী সামিউল ইসলাম জানান, ৫০ শতকের পুকুরের মাছ রোববার রাতে ভেসে গেছে। ভেসে যাওয়া মাছের মধ্যে পাবদা, রুই, কাতলা ও গুলসা জাতীয় মাছ এবং পোনা। এখন সাড়ে ৩ একর পুুকুরে পানি প্রবেশ করা শুরু করেছে। তাই মাছ যাতে ভেসে যেতে না পারে এজন্য পুকুরের চারিদিকে নেট দিয়ে ঘিরে দিয়েছেন।

তিনি জানান, পানি বৃদ্ধি পেলে ১৫ লাখ টাকার ক্ষতির সম্মুখিন হতে পারেন। তিনি অভিযোগ করেন, ২ বছর আগে একবার ক্ষতিগ্রস্ত হলেও মৎস্য অফিস থেকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ লিখে নিয়ে গেলেও কোনরকম সহযোগিতা পাননি। এর পরেই ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলা হচ্ছে কাউনিয়া।

ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষিরা জানান, পুকুরের চারিদিকে নেট এবং বাঁশের বানা দিয়েও মাছ রক্ষা করতে পারেননি। পানির তোড়ে পুকুরের চাষকৃত মাছ ভেসে গেছে। গংগাচড়া উপজেলায় বন্যায় ভেসে যাওয়া পুকুরের সংখ্যা হচ্ছে ৪৯৫টি। ভেসে যাওয়া মাছের পরিমাণ হচ্ছে ৭৫ দশমিক ৮০ মেট্রিক টন। যার আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ৩৬ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। ভেসে গেছে ৪ লাখেরও বেশি পোনা। অবকাঠামেরা ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২০ লাখ ৫৫ হাজার টাকার। কাউনিয়া উপজেলায় বন্যায় ভেসে যাওয়া পুকুরের সংখ্যা হচ্ছে ৫০টি। ভেসে যাওয়া মাছের পরিমাণ হচ্ছে ৪ দশমিক ২৭ মেট্রিক টন। যার আনুমানিক মূল্য ৭ লাখ ১৫ হাজার টাকা। অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার টাকার।

পীরগাছা উপজেলায় বন্যায় ভেসে যাওয়া পুকুরের সংখ্যা হচ্ছে ৩৭টি। ভেসে যাওয়া মাছের পরিমাণ হচ্ছে ৬ দশমিক ৬৬ মেট্রিক টন। যার আনুমানিক মূল্য ৭ লাখ ৬২ হাজার টাকা। অবকাঠামেরা ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৩১ হাজার টাকা।

জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কাজী আতিয়াহ্ তাইয়েবী জানান, চলমান বন্যায় রোববার পর্যন্ত জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষিদের তালিকা করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ঝুঁকিতে থাকা মৎস্য চাষিদের চাষকৃত মাছ যাতে ভেসে যেতে না পারে এজন্য পুকুরের চারিদিকে জাল দিয়ে ঘিরে দেয়ার জন্য মৎস্য বিভাগ থেকে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বরুন চন্দ্র বিশ্বাস জানান, বন্যায় ভেসে যাওয়া মোট পুকুরের সংখ্যা হচ্ছে ৫৮২টি। ভেসে যাওয়া মাছের আনুমানিক পরিমাণ হচ্ছে ৮৭ দশমিক ৬৯ মেট্রিক টন। যার আনুমানিক মূল্য হচ্ছে প্রায় ২ কোটি ৮৫ লাখ ১০ হাজার টাকা। ২৩ লাখ ১১ হাজার টাকার সমপরিমাণ অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে। সর্বমিলে ৩ কোটিরও বেশি টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।