হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিদেশে যাওয়ার আগেই কর্মীদের বীমা করতে হবে। বীমার মেয়াদ থাকবে দুই বছর। তবে তা নবায়ন করতে পারবেন প্রবাসী কর্মীরা। বিদেশে মৃত্যু বা শারীরিক অক্ষমতা দেখা দিলে ক্ষতিগ্রস্তরা এই বীমার আওতায় দুই লাখ টাকা পাবেন। বীমা প্রিমিয়াম হবে ৯৯০ টাকা।
এর মধ্যে ৫০০ টাকা দেবে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড। বিদেশগামী কর্মীকে দিতে হবে ৪৯০ টাকা। বিদেশেই দুই বছর মেয়াদি এ বীমার মেয়াদ নবায়ন করা যাবে। আগামী ৩১ জুলাই থেকে বীমা সুবিধা চালু করবে সাধারণ বীমা করপোরেশন। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ থেকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০ বছরে দেশ থেকে ৬০ লাখ ৭৩ হাজার ৯৬৯ জন কর্মী বৈধভাবে বিদেশে গেছেন। আর ২০১৮ সালে বৈধভাবে বিভিন্ন দেশে যান ৭ লাখ ৩৪ হাজার ১৮১ জন কর্মী। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলে এসব কর্মীর সবাই ক্রমান্বয়ে বীমা সুবিধার আওতায় আসবেন।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় যেভাবে পরিকল্পনা করেছে তাতে বলা হয়েছে, ১৮ থেকে ৫৮ বছর বয়সী যেকোনো কর্মীকে বিদেশে যাওয়ার আগেই বীমা করতে হবে। বিদেশে মৃত্যু বা শারীরিক অক্ষমতা দেখা দিলে ক্ষতিগ্রস্তরা বীমা সুবিধার আওতায় ২ লাখ টাকা বীমা দাবি পাবেন।
এক্ষেত্রে বীমা প্রিমিয়াম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৯০ টাকা, যার ৫০০ টাকা কর্মীদের পক্ষে পরিশোধ করবে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড। আর প্রিমিয়ামের বাকি ৪৯০ টাকা দিতে হবে বিদেশগামী কর্মীদের।
বীমার মেয়াদ দুই বছর, তবে এ বীমা নবায়নের সুযোগ রয়েছে প্রবাসী কর্মীদের। বাধ্যতামূলকভাবে দুই বছর মেয়াদি এ বীমা সুবিধার বাইরে বিদেশে যেতে আগ্রহী কর্মীদের জন্য পাঁচ লাখ টাকার আরেকটি বীমা সুবিধার সুযোগ দিচ্ছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
দুই বছর মেয়াদি এ বীমা করলে প্রবাসে যাওয়ার পর কেউ মারা গেলে বা শারীরিক অক্ষমতা দেখা দিলে তিনি পাঁচ লাখ টাকা পাবেন। এক্ষেত্রে প্রিমিয়াম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৪৭৫ টাকা, যার ৫০০ টাকা ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ তহবিল থেকে পরিশোধ করা হবে। বাকি ১ হাজার ৯৭৫ টাকা বিদেশগামী কর্মীদের পরিশোধ করতে হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রবাসে কর্মরত বাংলাদেশী কর্মীদের জন্য কোনো বীমা বাধ্যতামূলক করা হয়নি। তবে বিদেশে অবস্থান করা প্রবাসী কর্মীদের মধ্যে যারা নতুন করে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের নির্ধারিত চাঁদা দিয়ে সদস্যপদ গ্রহণ করবেন, তাদের জন্য দুই বছর মেয়াদি ২ লাখ টাকার বীমা বাধ্যতামূলকভাবে বিবেচিত হবে।
এক্ষেত্রে অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার সঙ্গে ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বীমা পরিকল্পের প্রিমিয়াম, বীমার অংক ও প্রাপ্য সুবিধাদি নির্ধারণ করা হয়েছে, যাতে কর্মীর ওপর আর্থিক চাপ না পড়ে। কর্মীর অংশীদারিত্বও নিশ্চিত করা হয়েছে, যাতে বীমার প্রতি তার অধিকার ও দায়িত্ববোধ সৃষ্টি হয়।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বিভিন্ন দেশে প্রায় এক কোটি প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মী রয়েছেন। তাদের জন্য এত দিন বীমা বাধ্যতামূলক করা হয়নি। তবে বিদেশে অবস্থান করা প্রবাসী কর্মীদের মধ্যে যারা ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের নির্ধারিত চাঁদা দিয়ে সদস্যপদ গ্রহণ করবেন, তাদের জন্য দুই বছর মেয়াদি দুই লাখ টাকার বীমা বাধ্যতামূলক হবে।