ঢাকা ১১:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লুট বিপুল পরিমাণ কয়লা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৪৮:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ মার্চ ২০২০
  • ২২৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে বড় ধরনের লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে বলে বিভিন্ন পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও খনিসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সামান্য কয়লা নষ্ট হয়েছে এবং সেটি হয়েছে সিস্টেম লসের কারণে। কিন্তু ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের এক তদন্তে দেখা গেছে, সাড়ে পাঁচ লাখ টন কয়লা চুরি তথা লুটপাট হয়েছে এবং এর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের প্রায় ৭০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এর বাইরে খনির কাজ পাওয়া চীনা ঠিকাদারের কাছ থেকে কয়লা কেনার কথা ছিল ৫ দশমিক ১ শতাংশ পানিসহ; কিন্তু সেখানে কয়লা নেয়া হয়েছে ১০ দশমিক ৫ শতাংশ পানিসহ, যা চুক্তির দ্বিগুণেরও বেশি। এতে করে কয়লা কেনার ক্ষেত্রেও রাষ্ট্রকে অনেক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। আমরা মনে করি, নানাভাবে রাষ্ট্রকে ক্ষতির মুখে ফেলা বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার বিকল্প নেই।

সরকারের দায়িত্বশীলদের উচিত ক্যাবের তদন্ত প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির উদ্যোগ নেয়া। অন্যথায় প্রাকৃতিক সম্পদের অনিয়ম কমিয়ে আনা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। এটি নিশ্চিত করার জন্য দুদকের অভিযোগপত্রে বড়পুকুরিয়া কোল ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) সাত এমডিসহ ২৩ জনের অতিরিক্ত হিসেবে বিসিএমসিএলের শেয়ারহোল্ডার, পেট্রোবাংলা ও জ্বালানি বিভাগের কর্মকর্তাদেরও এ মামলায় অভিযুক্ত করা দরকার। ক্যাবের তদন্ত প্রতিবেদনেও বিষয়টি উঠে এসেছে।

যদিও মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন, তারপরও ন্যায়বিচারের স্বার্থে সরকার চাইলে পুনঃতদন্তের আবেদন আদালতে জানাতে পারে। আমরা আশা করব, দেশের প্রথম কয়লা খনিতে অনিয়মকারী ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার মধ্য দিয়ে ভবিষ্যতে প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় ও হেফাজতে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

সরকারি ক্রয় ও যে কোনো প্রকল্পে অনিয়ম-দুর্নীতি আমাদের অগ্রগতিকে চেপে ধরে রাখছে। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কেলেঙ্কারির ক্ষেত্রে অন্যান্য দুর্নীতির পাশাপাশি সরকারি ক্রয়ে অনিয়মেরও ঘটনা ঘটেছে। নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে পেট্রোবাংলা ও জ্বালানি বিভাগের দায়িত্ব ছিল অধীনস্থ বিসিএমসিএলের অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া; কিন্তু সেটা তারা না করে অপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ের নজির তৈরি করেছে।

এ অবস্থায় তাদের পক্ষ থেকে জনগণের হয়ে যে কাজটি ক্যাব করে দিয়েছে, তাকে আমলে নিয়ে অগ্রসর হওয়া দরকার। অন্যথায় সরকারি সম্পদ অপচয় করার ক্ষেত্রে অনিয়মকারী-দুর্নীতিবাজরা নিরুৎসাহিত হবে না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

লুট বিপুল পরিমাণ কয়লা

আপডেট টাইম : ১২:৪৮:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ মার্চ ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে বড় ধরনের লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে বলে বিভিন্ন পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও খনিসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সামান্য কয়লা নষ্ট হয়েছে এবং সেটি হয়েছে সিস্টেম লসের কারণে। কিন্তু ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের এক তদন্তে দেখা গেছে, সাড়ে পাঁচ লাখ টন কয়লা চুরি তথা লুটপাট হয়েছে এবং এর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের প্রায় ৭০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এর বাইরে খনির কাজ পাওয়া চীনা ঠিকাদারের কাছ থেকে কয়লা কেনার কথা ছিল ৫ দশমিক ১ শতাংশ পানিসহ; কিন্তু সেখানে কয়লা নেয়া হয়েছে ১০ দশমিক ৫ শতাংশ পানিসহ, যা চুক্তির দ্বিগুণেরও বেশি। এতে করে কয়লা কেনার ক্ষেত্রেও রাষ্ট্রকে অনেক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। আমরা মনে করি, নানাভাবে রাষ্ট্রকে ক্ষতির মুখে ফেলা বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার বিকল্প নেই।

সরকারের দায়িত্বশীলদের উচিত ক্যাবের তদন্ত প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির উদ্যোগ নেয়া। অন্যথায় প্রাকৃতিক সম্পদের অনিয়ম কমিয়ে আনা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। এটি নিশ্চিত করার জন্য দুদকের অভিযোগপত্রে বড়পুকুরিয়া কোল ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) সাত এমডিসহ ২৩ জনের অতিরিক্ত হিসেবে বিসিএমসিএলের শেয়ারহোল্ডার, পেট্রোবাংলা ও জ্বালানি বিভাগের কর্মকর্তাদেরও এ মামলায় অভিযুক্ত করা দরকার। ক্যাবের তদন্ত প্রতিবেদনেও বিষয়টি উঠে এসেছে।

যদিও মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন, তারপরও ন্যায়বিচারের স্বার্থে সরকার চাইলে পুনঃতদন্তের আবেদন আদালতে জানাতে পারে। আমরা আশা করব, দেশের প্রথম কয়লা খনিতে অনিয়মকারী ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার মধ্য দিয়ে ভবিষ্যতে প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় ও হেফাজতে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

সরকারি ক্রয় ও যে কোনো প্রকল্পে অনিয়ম-দুর্নীতি আমাদের অগ্রগতিকে চেপে ধরে রাখছে। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কেলেঙ্কারির ক্ষেত্রে অন্যান্য দুর্নীতির পাশাপাশি সরকারি ক্রয়ে অনিয়মেরও ঘটনা ঘটেছে। নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে পেট্রোবাংলা ও জ্বালানি বিভাগের দায়িত্ব ছিল অধীনস্থ বিসিএমসিএলের অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া; কিন্তু সেটা তারা না করে অপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ের নজির তৈরি করেছে।

এ অবস্থায় তাদের পক্ষ থেকে জনগণের হয়ে যে কাজটি ক্যাব করে দিয়েছে, তাকে আমলে নিয়ে অগ্রসর হওয়া দরকার। অন্যথায় সরকারি সম্পদ অপচয় করার ক্ষেত্রে অনিয়মকারী-দুর্নীতিবাজরা নিরুৎসাহিত হবে না।