ঢাকা ১১:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সামনে বর্ষাকাল দিন সে জন্য নিকলীতে নৌকা তৈরির ধুম পড়েছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৫২:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ মে ২০১৮
  • ৪২৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সামনে বর্ষাকাল সে জন্য কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলাতে ডিঙি নৌকা তৈরি ও বেচাকেনার ধুম পড়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রায় দুই হাজার লোক বর্ষার শুরু আগে থেকেই নৌকা তৈরি কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সারা বছর অন্য কাজে ব্যস্ত থাকলেও বর্ষা আসার আগেই তারা ডিঙ্গি নৌকা তৈরি ও বিক্রি করে। বর্ষার ছয় মাস ডিঙি নৌকা বিক্রির আয়ে চলে তাঁদের সংসার।

সরেজমিনে নিকলী সদর, দামপাড়া, সিংপুর এলাকায় লোকজনকে নৌকা তৈরির কাজ করতে দেখা যায়। কেউ করাত দিয়ে কাঠ কাটায় ব্যস্ত কেউ হাতুড়ি দিয়ে নৌকায় লোহার পেরেক লাগাতে ব্যস্ত কাউকে আবার তৈরি নৌকা বেচাকেনায় ব্যস্ত।

নৌকা তৈরির কাজে কয়েকজন মেস্তরী বলেন, নিকলীর উপজেলার ডিঙি নৌকার সুনাম বহু কাল আগে থেকেই। সে জন্য নেত্রকোনার কেন্দুয়া ,মোহনগঞ্জ, মদন, তাড়াইলসহ বিভিন্ উপজেলা থেকে লোকজন এস ডিঙি নৌকা কিনে নিয়ে যান। তাঁরা বলেন, শাম্বলকাঠ, আমকাঠ, রঙিকাঠ ও কড়ই কাঠ দিয়ে এসব নৌকা তৈরি করা যায়। কাঠ ভেদাভেদে এর দাম পড়ে পাঁচ হাজার থেকে দশ হাজার টাকা। শাম্বলকাঠের তৈরি নৌকা বেশি বিক্রি হয়। এসব নৌকা বর্ষার সময় জেলেরা হাওরে মাছ ধরার কাজে ব্যবহার করে।

নৌকা তৈরির কাজে ব্যস্ত সুনিল সুত্রধর (৫২) বলেন, তিনি ছোটবেলায় ২৫ টাকা রোজে নৌকা বানানোর কাজ শুরু করেছিলেন। এখন তিনি নিজেই বিভিন্ন জায়গা থেকে গাছ কিনে তা থেকে কাঠ বের করে নৌকা বানিয়ে বিক্রি করেন। এই আয় দিয়েই বছরের ছয় মাস তাঁর দশ সদস্যের পরিবারের খরচ চলে। বাকি সময় তিনি অন্যের ঘর তৈরিতে মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করেন।

সিংপুর এলাকার খুরশিদ মিয়া (৬০) বলেন, তিনি অন্যের দোকানে নৌকা তৈরির মিস্তরী হিসেবে কাজ করেন। বৈশাখ মাস থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ততিনি এ কাজ করেন। প্রতিটি ডিঙি নৌকা তৈরির মজুরি হিসেবে তাঁকে ৭০০ টাকা করে দেওয়া হয়। গড়ে প্রতিদিন তিনি একটি নৌকা বানাতে পারেন। ডিঙি নৌকার ব্যবসায়ী সুনীল চন্দ্র সূত্রধর বলেন, সাধারণত বছরের ছয় মাস নৌকা বেচাকেনা হলেও জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসে বিক্রির ধুম পড়ে যায়। কিন্তু এ বছর আগাম পানি চলে আসায় বৈশাখ মাসের শুরুতেই ডিঙি নৌকা বিক্রি হচ্ছে। তবে এখন গাছ ও লোহার দাম বাড়ায় এবং পরিবহন খরচ শেষে আগের মতো লাভ থাকে না।

উপজেলার বাটিবরাটিয়া এলাকার জেলে আঃ রহিম মিয়া সিংপুর থেকে ডিঙি নৌকা কিনতে আসেন। তিনি বলেন, নিকলী উপজেলার সিংপুর এলাকার তৈরি নৌকার গুণগত মান ভালো। তাই এখানে তিনি নৌকা কিনতে এসেছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

সামনে বর্ষাকাল দিন সে জন্য নিকলীতে নৌকা তৈরির ধুম পড়েছে

আপডেট টাইম : ০৪:৫২:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ মে ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সামনে বর্ষাকাল সে জন্য কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলাতে ডিঙি নৌকা তৈরি ও বেচাকেনার ধুম পড়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রায় দুই হাজার লোক বর্ষার শুরু আগে থেকেই নৌকা তৈরি কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সারা বছর অন্য কাজে ব্যস্ত থাকলেও বর্ষা আসার আগেই তারা ডিঙ্গি নৌকা তৈরি ও বিক্রি করে। বর্ষার ছয় মাস ডিঙি নৌকা বিক্রির আয়ে চলে তাঁদের সংসার।

সরেজমিনে নিকলী সদর, দামপাড়া, সিংপুর এলাকায় লোকজনকে নৌকা তৈরির কাজ করতে দেখা যায়। কেউ করাত দিয়ে কাঠ কাটায় ব্যস্ত কেউ হাতুড়ি দিয়ে নৌকায় লোহার পেরেক লাগাতে ব্যস্ত কাউকে আবার তৈরি নৌকা বেচাকেনায় ব্যস্ত।

নৌকা তৈরির কাজে কয়েকজন মেস্তরী বলেন, নিকলীর উপজেলার ডিঙি নৌকার সুনাম বহু কাল আগে থেকেই। সে জন্য নেত্রকোনার কেন্দুয়া ,মোহনগঞ্জ, মদন, তাড়াইলসহ বিভিন্ উপজেলা থেকে লোকজন এস ডিঙি নৌকা কিনে নিয়ে যান। তাঁরা বলেন, শাম্বলকাঠ, আমকাঠ, রঙিকাঠ ও কড়ই কাঠ দিয়ে এসব নৌকা তৈরি করা যায়। কাঠ ভেদাভেদে এর দাম পড়ে পাঁচ হাজার থেকে দশ হাজার টাকা। শাম্বলকাঠের তৈরি নৌকা বেশি বিক্রি হয়। এসব নৌকা বর্ষার সময় জেলেরা হাওরে মাছ ধরার কাজে ব্যবহার করে।

নৌকা তৈরির কাজে ব্যস্ত সুনিল সুত্রধর (৫২) বলেন, তিনি ছোটবেলায় ২৫ টাকা রোজে নৌকা বানানোর কাজ শুরু করেছিলেন। এখন তিনি নিজেই বিভিন্ন জায়গা থেকে গাছ কিনে তা থেকে কাঠ বের করে নৌকা বানিয়ে বিক্রি করেন। এই আয় দিয়েই বছরের ছয় মাস তাঁর দশ সদস্যের পরিবারের খরচ চলে। বাকি সময় তিনি অন্যের ঘর তৈরিতে মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করেন।

সিংপুর এলাকার খুরশিদ মিয়া (৬০) বলেন, তিনি অন্যের দোকানে নৌকা তৈরির মিস্তরী হিসেবে কাজ করেন। বৈশাখ মাস থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ততিনি এ কাজ করেন। প্রতিটি ডিঙি নৌকা তৈরির মজুরি হিসেবে তাঁকে ৭০০ টাকা করে দেওয়া হয়। গড়ে প্রতিদিন তিনি একটি নৌকা বানাতে পারেন। ডিঙি নৌকার ব্যবসায়ী সুনীল চন্দ্র সূত্রধর বলেন, সাধারণত বছরের ছয় মাস নৌকা বেচাকেনা হলেও জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসে বিক্রির ধুম পড়ে যায়। কিন্তু এ বছর আগাম পানি চলে আসায় বৈশাখ মাসের শুরুতেই ডিঙি নৌকা বিক্রি হচ্ছে। তবে এখন গাছ ও লোহার দাম বাড়ায় এবং পরিবহন খরচ শেষে আগের মতো লাভ থাকে না।

উপজেলার বাটিবরাটিয়া এলাকার জেলে আঃ রহিম মিয়া সিংপুর থেকে ডিঙি নৌকা কিনতে আসেন। তিনি বলেন, নিকলী উপজেলার সিংপুর এলাকার তৈরি নৌকার গুণগত মান ভালো। তাই এখানে তিনি নৌকা কিনতে এসেছেন।